০১:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পেনশন স্কিম নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ৩ দফা কর্মসূচি 

সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনকে ‘বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।

স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রবর্তনের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম এবং মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করার মাধ্যমে তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন।

গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষকরা। তাদের তিন দফা দাবি হলো- সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য সুপার গ্রেড কার্যকর ও স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন করা।

এ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, অন্যান্য প্রতিনিধিবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাতহুদা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ এখানে উপস্থিত ছিলেন।

কর্মসূচিতে বলা হয়েছে আগামী ২৫শে মে ২০২৪ তারিখের মধ্যে এ বিষয়ে কোনো ধরনের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে রোববার (২৬ মে) সকাল ১১:৩০টা থেকে সারাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষকরা একযোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন।

এরপর আগামী মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২ ঘন্টার কর্মবিরতি পালন করবেন। এ সময়ের মধ্যে দাবি না মানা হলে আগামী মঙ্গলবার (৪ঠা জুন) সারাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালসমূহের শিক্ষকরা একযোগে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন।

তবে পরীক্ষাসমূহ এ কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে বলে জানান তারা। তারপরও দাবি না মানা হলে ওই দিনই আন্দোলনের বৃহত্তম কর্মসূচি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান তারা।

লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে তারা বলেন প্রত্যয় স্কিমের সাথে বর্তমান পেনশন ব্যবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষাব্যবস্থায় চরম বৈষম্যে সৃষ্টি করবে। বিদ্যমান ব্যবস্থায় পেনশনাররা যে সকল সুবিধাদি প্রাপ্য হন, তা বিভিন্ন সময়ে সরকারি চাকরিজীবীদের জীবনমানের উন্নয়ন এবং প্রণোদনার অংশ হিসেবে প্রবর্তন করা হয়েছিল এবং  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও এ সকল সুবিধা ভোগ করে আসছেন।

১লা জুলাই ২০২৪ তারিখের পূর্বে নিযুক্ত শিক্ষকরা প্রত্যয় স্কিমের আওতায় যাবেন না বলে আমরা স্বার্থপরতার পরিচয় দিতে পারি না। শিক্ষকরা জাতির বিবেক এই আপ্ত বাক্যটি মেনে বিবেকের কাছে দায়বদ্ধতা থেকেই আজ বিষয়টি সরকারের সুবিবেচনার জন্য উপস্থাপন করছি। শিক্ষকদের সাথে কোনো ধরনের আলোচনা না করে এ ধরনের পদক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া স্বায়ত্তশাসনের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনের শামিল বলে মনে করেন।

আমরা যতটুকু জানি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের বিদ্যমান সুবিধার অবনমন হয় এ ধরনের কোনো পদক্ষেপের পক্ষপাতী নন। ২০১৫ সালে বেতন স্কেলে শিক্ষকদের অবনমন করা হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় নির্দেশনায় সেটির সমাধান তারই উজ্জ্বল সাক্ষ্য বহন করে।

আধুনিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে তিনি শিক্ষার উন্নয়ন ও প্রসারে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেদিন সর্বজনীন পেনশন স্কিমের উদ্বোধন করেন সেদিন এই ‘প্রত্যয়’ স্কিমটি ছিল না। হঠাৎ করেই একটি মহল নিজেদের সুযোগ সুবিধা অক্ষুণ্ণ রেখে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের উপর এ ধরনের একটি বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা চাপিয়ে দিয়েছেন।

আমরা আশা করব, অনতিবিলম্বে এই প্রজ্ঞাপনটি প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান সেশনজটমুক্ত শিক্ষার পরিবেশ অব্যাহত রাখতে সহায়তা করবেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

পেনশন স্কিম নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের ৩ দফা কর্মসূচি 

আপডেট সময় : ১১:৫০:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪

সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনকে ‘বৈষম্যমূলক’ আখ্যা দিয়ে তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন।

স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো প্রবর্তনের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম এবং মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করার মাধ্যমে তিন দফা কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন।

গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন শিক্ষকরা। তাদের তিন দফা দাবি হলো- সর্বজনীন পেনশন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য সুপার গ্রেড কার্যকর ও স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন করা।

এ সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, অন্যান্য প্রতিনিধিবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাতহুদা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ এখানে উপস্থিত ছিলেন।

কর্মসূচিতে বলা হয়েছে আগামী ২৫শে মে ২০২৪ তারিখের মধ্যে এ বিষয়ে কোনো ধরনের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে রোববার (২৬ মে) সকাল ১১:৩০টা থেকে সারাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষকরা একযোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন।

এরপর আগামী মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ২ ঘন্টার কর্মবিরতি পালন করবেন। এ সময়ের মধ্যে দাবি না মানা হলে আগামী মঙ্গলবার (৪ঠা জুন) সারাদেশে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালসমূহের শিক্ষকরা একযোগে অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন।

তবে পরীক্ষাসমূহ এ কর্মবিরতির আওতামুক্ত থাকবে বলে জানান তারা। তারপরও দাবি না মানা হলে ওই দিনই আন্দোলনের বৃহত্তম কর্মসূচি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান তারা।

লিখিত বক্তব্যের মাধ্যমে তারা বলেন প্রত্যয় স্কিমের সাথে বর্তমান পেনশন ব্যবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষাব্যবস্থায় চরম বৈষম্যে সৃষ্টি করবে। বিদ্যমান ব্যবস্থায় পেনশনাররা যে সকল সুবিধাদি প্রাপ্য হন, তা বিভিন্ন সময়ে সরকারি চাকরিজীবীদের জীবনমানের উন্নয়ন এবং প্রণোদনার অংশ হিসেবে প্রবর্তন করা হয়েছিল এবং  বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও এ সকল সুবিধা ভোগ করে আসছেন।

১লা জুলাই ২০২৪ তারিখের পূর্বে নিযুক্ত শিক্ষকরা প্রত্যয় স্কিমের আওতায় যাবেন না বলে আমরা স্বার্থপরতার পরিচয় দিতে পারি না। শিক্ষকরা জাতির বিবেক এই আপ্ত বাক্যটি মেনে বিবেকের কাছে দায়বদ্ধতা থেকেই আজ বিষয়টি সরকারের সুবিবেচনার জন্য উপস্থাপন করছি। শিক্ষকদের সাথে কোনো ধরনের আলোচনা না করে এ ধরনের পদক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া স্বায়ত্তশাসনের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনের শামিল বলে মনে করেন।

আমরা যতটুকু জানি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের বিদ্যমান সুবিধার অবনমন হয় এ ধরনের কোনো পদক্ষেপের পক্ষপাতী নন। ২০১৫ সালে বেতন স্কেলে শিক্ষকদের অবনমন করা হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সদয় নির্দেশনায় সেটির সমাধান তারই উজ্জ্বল সাক্ষ্য বহন করে।

আধুনিক রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে তিনি শিক্ষার উন্নয়ন ও প্রসারে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেদিন সর্বজনীন পেনশন স্কিমের উদ্বোধন করেন সেদিন এই ‘প্রত্যয়’ স্কিমটি ছিল না। হঠাৎ করেই একটি মহল নিজেদের সুযোগ সুবিধা অক্ষুণ্ণ রেখে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের উপর এ ধরনের একটি বৈষম্যমূলক ব্যবস্থা চাপিয়ে দিয়েছেন।

আমরা আশা করব, অনতিবিলম্বে এই প্রজ্ঞাপনটি প্রত্যাহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান সেশনজটমুক্ত শিক্ষার পরিবেশ অব্যাহত রাখতে সহায়তা করবেন।