০৩:০২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজারে চলছে পাহাড় কাটার মহা উৎসব বর্ষায় বাড়ছে ঝুঁকি

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, সংলগ্ন কয়েকটি এলাকায় পাহাড় নিধন নিষিদ্ধ। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞাও আছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কলাতলী, আদর্শগ্রাম, সৈকতপাড়া, লাইটহাউস পাহাড়, রাডারস্টেশন পাহাড়, টিঅ্যান্ডটি পাহাড়, চন্দ্রিমা পাহাড় নিধন করে ঘরবাড়ি তৈরির হিড়িক পড়েছে।
সম্প্রতি ঝড়-বৃষ্টি শুরু হওয়ায় পাহাড়নিধন তৎপরতা অনেক বেড়েছে। অনেকে আবার রাতের আঁধারে পাহাড়ি এলাকা সমান করে প্লট বানিয়ে বিক্রি করছেন। কিন্তু পাহাড়নিধন বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তেমন কোনো তৎপরতা দৃশ্যমান নয়।
গত ‘এক মাসের মধ্যে’ শহরের চন্দ্রিমা এলাকায় একটি পাহাড় কেটে প্রায় এক একর জায়গা সমভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। অথচ এই পাহাড়ের আধা কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর জেলা প্রশাসন ও কউকের কার্যালয়। সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন কলাতলী চন্দ্রিমা এলাকায় ঝিলংজা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড জলুঘোনা এলাকার, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন,প্রায় ১ মাস ধরে পাহাড় কাটা চলছে। ঘরবাড়ি তৈরি হচ্ছে সমানে। বৃষ্টি শুরু হলে পাহাড় কাটতে সুবিধা। কারণ, বৃষ্টির পানিতে পাহাড়ের মাটি সহজে নিচে নেমে পড়ে। এতে পাহাড়কাটায় শ্রমিক–খরচ বাঁচে। প্রশাসনের নজর এড়াতে অনেকেই রাতের বেলায় পাহাড় কাটছেন বলে জানান কয়েক জন শ্রমিক।
পরিবেশবাদী সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন( বাপা) কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম বলেন, শহরের ১০-১২টি এলাকায় পাহাড়নিধন চলছে। ভয়ানক অবস্থায় শহরের চন্দ্রিমা এলাকায় সেখানে রাতে দিনে পাহাড় কাটা হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। তিনি আরো বলেন ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে পাহাড়নিধন কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এতে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের পাশাপাশি পাহাড়ধসের ঝুঁকিও বাড়ছে।
স্থানীয়রা বলেন, দীর্ঘ ১ মাস ধরে দিনে রাতে চলছে পাহাড়টাকা ও পাহাড় দখল এসব পাহাড় কাটা বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন বরাবরে অভিযোগ করা হলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় পাহাড়খেকোরা আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

প্রাপ্ত তথ্য মতে জানা গেছে, মৌজা-ঝিলংজা, উপজেলা ও জেলা-কক্সবাজার। আর.এস ১৯৯৬ নং খতিয়ানের আর.এস ৯০১ / ৮৯৫৯ দাগের ১.৬০ একর। এম.আর.আর ২০৭৩ নং খতিয়ানের এম.আর.আর ৯০১ দাগের তুলনামুলক বি.এস ১৫৯১ নং খতিয়ানের বি.এস ২২৫৫৩, ২২৫৫৪, ২২৫৫৬ দাগাদির সম্পূর্ণ ১.১২০০ একর এবং বি.এস ২২৬০৫ দাগের আন্দর ০.৪৮০০ একর সহ সর্বমোট ১.৬০০০ একর নাল ও ছনখোলা নিয়ে সৃষ্ট বিশাল পাহাড় এখন খন্ড খন্ড করে দখল করে নিয়েছে কলাতলী হাসান আলী ফকিরের পুত্র মিঠুর নেতৃত্বে একটা বিশাল সিন্ডিকেট উক্ত পাহাড় দখল পরবর্তী প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এখন চলছে দিনে রাতে পাহাড় কাটা ও মাটি বিক্রি।
উক্ত পাহাড় কাটা ও দখল বন্ধ রাখতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) বরাবরে এমআর মামলা করে ১৪৪ ধারার আবেদন করেন কক্সবাজার পৌরসভা এসএম পাড়ার মৃত্যু মোস্তাফিজুর রহমানের পুত্র রেজাউল করিম বাবুল নামের এক ব্যক্তি তিনি বলেন, পাহাড়টি তাদের মালিকানাধীন হলেও দীর্ঘদিন ধরে অক্ষত রেখে  ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
কিন্তু বিগত ১ মাস ধরে মিঠু সিন্ডিকেট বেআইনিভাবে পাহাড় দখল ও  মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করছে। এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে তাদের মালিকানাধীন জায়গাসহ ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া যেভাবে পাহাড়টি কাটা হয়েছে, বর্ষাকালে এটি ধসে পড়ে আশেপাশে বসবাসকারী বাসিন্দাদের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে বলে তিনি জানান।
বার্ষা মৌসুমের শুরুতে এসব পাহাড় কাটা বন্ধ করতে না পারলে একদিকে যেমন পাহাড় ধসের আশংকা রয়েছে তেমনি পাহাড় দখল ও মাটি বিক্রি নিয়ে যেকোন সময় আইনশৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে সামান্তা শারমিনের নতুন বার্তা

কক্সবাজারে চলছে পাহাড় কাটার মহা উৎসব বর্ষায় বাড়ছে ঝুঁকি

আপডেট সময় : ০১:৫৮:৫২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, সংলগ্ন কয়েকটি এলাকায় পাহাড় নিধন নিষিদ্ধ। এ বিষয়ে উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞাও আছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কলাতলী, আদর্শগ্রাম, সৈকতপাড়া, লাইটহাউস পাহাড়, রাডারস্টেশন পাহাড়, টিঅ্যান্ডটি পাহাড়, চন্দ্রিমা পাহাড় নিধন করে ঘরবাড়ি তৈরির হিড়িক পড়েছে।
সম্প্রতি ঝড়-বৃষ্টি শুরু হওয়ায় পাহাড়নিধন তৎপরতা অনেক বেড়েছে। অনেকে আবার রাতের আঁধারে পাহাড়ি এলাকা সমান করে প্লট বানিয়ে বিক্রি করছেন। কিন্তু পাহাড়নিধন বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তেমন কোনো তৎপরতা দৃশ্যমান নয়।
গত ‘এক মাসের মধ্যে’ শহরের চন্দ্রিমা এলাকায় একটি পাহাড় কেটে প্রায় এক একর জায়গা সমভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। অথচ এই পাহাড়ের আধা কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর জেলা প্রশাসন ও কউকের কার্যালয়। সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন কলাতলী চন্দ্রিমা এলাকায় ঝিলংজা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড জলুঘোনা এলাকার, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন,প্রায় ১ মাস ধরে পাহাড় কাটা চলছে। ঘরবাড়ি তৈরি হচ্ছে সমানে। বৃষ্টি শুরু হলে পাহাড় কাটতে সুবিধা। কারণ, বৃষ্টির পানিতে পাহাড়ের মাটি সহজে নিচে নেমে পড়ে। এতে পাহাড়কাটায় শ্রমিক–খরচ বাঁচে। প্রশাসনের নজর এড়াতে অনেকেই রাতের বেলায় পাহাড় কাটছেন বলে জানান কয়েক জন শ্রমিক।
পরিবেশবাদী সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন( বাপা) কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম বলেন, শহরের ১০-১২টি এলাকায় পাহাড়নিধন চলছে। ভয়ানক অবস্থায় শহরের চন্দ্রিমা এলাকায় সেখানে রাতে দিনে পাহাড় কাটা হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। তিনি আরো বলেন ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে পাহাড়নিধন কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এতে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের পাশাপাশি পাহাড়ধসের ঝুঁকিও বাড়ছে।
স্থানীয়রা বলেন, দীর্ঘ ১ মাস ধরে দিনে রাতে চলছে পাহাড়টাকা ও পাহাড় দখল এসব পাহাড় কাটা বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন বরাবরে অভিযোগ করা হলেও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় পাহাড়খেকোরা আরো বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠছে।

প্রাপ্ত তথ্য মতে জানা গেছে, মৌজা-ঝিলংজা, উপজেলা ও জেলা-কক্সবাজার। আর.এস ১৯৯৬ নং খতিয়ানের আর.এস ৯০১ / ৮৯৫৯ দাগের ১.৬০ একর। এম.আর.আর ২০৭৩ নং খতিয়ানের এম.আর.আর ৯০১ দাগের তুলনামুলক বি.এস ১৫৯১ নং খতিয়ানের বি.এস ২২৫৫৩, ২২৫৫৪, ২২৫৫৬ দাগাদির সম্পূর্ণ ১.১২০০ একর এবং বি.এস ২২৬০৫ দাগের আন্দর ০.৪৮০০ একর সহ সর্বমোট ১.৬০০০ একর নাল ও ছনখোলা নিয়ে সৃষ্ট বিশাল পাহাড় এখন খন্ড খন্ড করে দখল করে নিয়েছে কলাতলী হাসান আলী ফকিরের পুত্র মিঠুর নেতৃত্বে একটা বিশাল সিন্ডিকেট উক্ত পাহাড় দখল পরবর্তী প্রশাসনকে ম্যানেজ করে এখন চলছে দিনে রাতে পাহাড় কাটা ও মাটি বিক্রি।
উক্ত পাহাড় কাটা ও দখল বন্ধ রাখতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) বরাবরে এমআর মামলা করে ১৪৪ ধারার আবেদন করেন কক্সবাজার পৌরসভা এসএম পাড়ার মৃত্যু মোস্তাফিজুর রহমানের পুত্র রেজাউল করিম বাবুল নামের এক ব্যক্তি তিনি বলেন, পাহাড়টি তাদের মালিকানাধীন হলেও দীর্ঘদিন ধরে অক্ষত রেখে  ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
কিন্তু বিগত ১ মাস ধরে মিঠু সিন্ডিকেট বেআইনিভাবে পাহাড় দখল ও  মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করছে। এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে তাদের মালিকানাধীন জায়গাসহ ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া যেভাবে পাহাড়টি কাটা হয়েছে, বর্ষাকালে এটি ধসে পড়ে আশেপাশে বসবাসকারী বাসিন্দাদের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে বলে তিনি জানান।
বার্ষা মৌসুমের শুরুতে এসব পাহাড় কাটা বন্ধ করতে না পারলে একদিকে যেমন পাহাড় ধসের আশংকা রয়েছে তেমনি পাহাড় দখল ও মাটি বিক্রি নিয়ে যেকোন সময় আইনশৃঙ্খলা অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।