গাইবান্ধা জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের সম্মিলিত প্রতিরোধের মুখে ব্যর্থ হয়েছে গাইবান্ধা প্রেসক্লাব দখলের প্রচেষ্টা।
বুধবার(৫ জুন) সকালে জেলার কর্মরত সর্বস্তরের সাংবাদিকরা শহরের কাচারি বাজারস্থ গাইবান্ধা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে এসে এক আলোচনা সভায় মিলিত হন। আলোচনা সভার শুরুতেই সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সাবু ও উপদেষ্টা অধ্যক্ষ মোখলেছুর রহমানসহ প্রয়াত সাংবাদিকদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এছাড়াও সাংবাদিকরা জেলার প্রবীণ সাংবাদিক গোবিন্দলাল দাস, মশিয়ার রহমান খান, এসকে মজিদ মুকুল, কেএম রেজাউল হক, মফিজুল হক তারা, সৈয়দ নুরুল আলম জাহাঙ্গীরসহ সিনিয়র সাংবাদিকদের অবদানের কথা তুলে ধরে শ্রদ্ধা জানান।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সহ-সভাপতি অমিতাভ দাশ হিমুন। এর আগে পূর্বের কমিটি বিলুপ্ত করে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সরদার মো. শাহীদ হাসান লোটন (সম্পাদক চলমান জবাব) সভাপতি ও ইদ্রিসউজ্জামান মোনা (এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজ) কে সাধারণ সম্পাদক করে ২০২৪-২০২৫ সালের কার্যনির্বাহী কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কমিটির অন্যান্যরা হলেন- সহ-সভাপতি দীপক কুমার পাল, সহ-সভাপতি অমিতাভ দাশ হিমুন, সহ-সভাপতি মো. খালেদ হোসেন, সহ-সভাপতি অধ্যাপক শফিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিসউজ্জামান মনা, যুগ্ম সম্পাদক কুদ্দুস আলম, যুগ্ম সম্পাদক জাভেদ হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মিলন খন্দকার, কোষাধ্যক্ষ আব্দুল মান্নান চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক উজ্জল চক্রবর্ত্তী, সাহিত্য সম্পাদক উত্তম সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক রজতকান্তি বর্মন, প্রচার সম্পাদক আবু কায়সার শিপলু, ক্রীড়া সম্পাদক শামসুজ্জোহা, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক রবীন সেন, পাঠাগার সম্পাদক রিপন আকন্দ, কার্যনির্বাহী সদস্য আব্দুস সামাদ সরকার বাবু, আরিফুল ইসলাম বাবু, আফতাব হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, খায়রুল ইসলাম, রেজাউন্নবী রাজু, গোলাম রব্বানী মুসা, মাসুদার রহমান মুকুল, ফিরোজ কবীর মিলন, মাসুম বিল্লাহ, রিয়ন ইসলাম রকি, লালচান বিশ্বাস সুমন, জোবায়দুর রহমান জুয়েল।
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন সাংবাদিক দীপক কুমার পাল, রেজাউন্নবী রাজু, মো. খালেদ হোসেন, জাভেদ হোসেন, কেএম নিয়ামুল ইসলাম পামেল, অধ্যাপক শফিউল ইসলাম, মিলন খন্দকার, গোলাম রব্বানী মুসা, জাহাঙ্গীর আলম, খায়রুল ইসলাম, উত্তম সরকার, আবু কায়সার শিপলু প্রমুখ।
সভায় জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের আবেদনের ভিত্তিতে গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে অন্তভুর্ক্ত করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কে এম রেজাউল হক জানান, গত ২৫ মে শনিবার সংগঠনের নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। সে সময় একদল বহিরাগত অনুপ্রবেশকারী কতিপয় সদস্যের প্ররোচনায় প্রেসক্লাবের হলরুমে ঢুকে পড়ে। এ সময় তারা আমাকে সহ উপস্থিত সদস্যদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারপিটে উদ্যত হয়। পরে আমি সভা মুলতবি ঘোষণা করে সকল সদস্যদের নিয়ে প্রেসক্লাব থেকে বেরিয়ে যাই।
সেদিন রাতেই জানতে পারি অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে প্রেসক্লাবের কতিপয় সদস্য একটি অবৈধ কমিটি ঘোষণা করেছে। আমরা এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন মহলে লিখিত অভিযোগ দেই।
গাইবান্ধা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি রেজাউন নবী রাজু বলেন, প্রেসক্লাব দখলের খবর ছড়িয়ে পড়লে সাংবাদিক সমাজ সহ বিভিন্ন মহলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। জেলার অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনের সদস্যরা সম্মিলিতভাবে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানান এমনকি গতকাল মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় রংপুর বিভাগীয় কমিশনারের কাছে এ বিষয়টি তুলে ধরেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল প্রেসক্লাবের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের সাথে যোগ দিয়ে জেলার অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনের সদস্যরা গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে ঐক্য প্রক্রিয়ার দাবি তোলেন।
গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিসউজ্জামান মনা বলেন, বুধবার সকালে গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে অনিয়মের প্রতিবাদস্বরূপ একটি সভা আহবান করা হয়েছিল। সেখানে বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা যোগ দেয়ার পর জেলার সকল সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠনের প্রয়োজন দেখা দেয়। পরে সবার সম্মতিক্রমে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন করা হয়।
উল্লেখ্য: গাইবান্ধা প্রেসক্লাব গাইবান্ধার একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। এটি ১৯৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

























