শাহ আলম জাহাঙ্গীর,মুরাদনগর প্রতিনিধি
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে মাছ ধরার আনতা-চাঁই বিক্রি কম থাকায় বিক্রেতারা হতাশ। কথিত কারেন্ট জাল বা ম্যাজিক চায়না জাল বাজার সয়লাব। এ ব্যাপারে সরকারি কোনো অভিযান নেই বলে বিক্রেতাদের অভিযোগ।
গ্রামাঞ্চলে আনতা-চাঁই-এর মাধ্যমে দেশীয় ছোটো মাছ শিকার করা যায়। এটা বহুল পরিচিত প্রাচীন পদ্ধতি। বর্তমানে তা বিলুপ্তির পথে। মুরাদনগরের রামচন্দ্রপুর বাজারে বসে আনতা চাঁই -এর হাট। বর্ষাকালে পাশ্ববর্তী হোমনা, বাঞ্ছারামপুর, নবীনগরের নিম্নভূমির জলাশয়ে, খালে, বিলে কিংবা জমির ধারে এগুলো পাতা হয়। নির্দিষ্ট সময়ের পর এগুলোতে মাছ আটকা পড়ে। গ্রামের আনতা-চাঁই-এর ব্যবহার প্রাচীন কাল থেকে। আনতা-চাঁই-এ ছোট জাতের পুঁটি,টেংরা, শিং, মাগুর, বাইন, ফলি, খলিশা,বইচা, চিংড়ি, বজুরি, চান্দা,গুতুম, বাইলা, ভেটকি সহ নানা প্রকার ছোটো মাছ ধরা যায়। উপজেলার রামচন্দ্রপুর বাজারে সরেজমিনে গেলে দেখা যায় ক্রেতাসংখ্যা নগন্য।হাতে গণা কয়েকজন। পাইকারদের উপস্থিতি নেই বললে চলে। বাজারে আনতা-চাঁই বেচাকেনাও কম।তাছাড়া আানতা-চাঁই তৈরি করতে কারিগরও মিলছে না। আগে নারীপুরুষ মিলে আনতা-চাঁই তৈরি করতো। উপজেলার রামচন্দ্রপুরেরর বাখরাবাদ, মুকলিশপুর গ্রামে আনতা-চাঁই তৈরি হয়।এখন আর আগের মত চাহিদা নাই।ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হচ্ছে এই কুটির শিল্পটি। বাখরাবাদ গ্রামের আনতা- চাঁই কারিগর খোকন মিয়া বলেন, এখন পরতা হয় না। আনতা-চাঁই তৈরির উপকরণ বাঁশ বেতের দাম বেশি। আগে পরিবারের সবাই মিলে রাতদিন আনতা-চাঁই তৈরি করতাম। এখন বর্ষাকালে পানি না হওয়াতে চাহিদা কমে গেছে। বাখরাবাদ ও মুকলিশপুর গ্রামের আনতা-চাঁই বিক্রেতা বিমল চন্দ্র সরকার ও আবুল কাশেম বলেন, আনতাচাঁই বিক্রি এখন মন্দা।বেচাকেনা একেবারে নাই বললেই চলে।আনতা-চাঁইয়ের ক্রেতাও কমে গেছে।একজোড়া আনত-চাঁই ৭/৮ শ টাকায় বিক্রি করি। লাভ একেবারেই নেই।একদিকে বর্ষাকালে পানি নাই আবার অপরদিক কারেন্ট ম্যাজিক জাল,রিং জাল আর চায়না জালে বাজার সয়লাব। ম্যাজিক জালে ছোট বড় সব মাছ ধরা পড়ে। সেজন্য ক্রেতারা আর আনতা-চাঁই ্কেনে না।এ ব্যাপারে সরকারের লোকজন ম্যাজিক জাল বিক্রি বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলে বিক্রেতাদের অভিমত। বাজারে ম্যাজিক জাল বিক্রি বন্ধ হলে আনতা-চাঁই বিক্রি বাড়বে বলে তাদের ধারণা। কারেন্ট জাল বা ম্যাজিক জাল বিক্রি বন্ধে উপজেলা মৎস্য অফিসার নাজমা আক্তার বলেন,জনবলের অভাবে অভিযান
পরিচালনা করা যাচ্ছে না। তবে ২/১ দিনের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের পরামর্শে অভিযানে নামবো।বর্তমানে এইচএসসি পরীক্ষায় ব্যস্ত থাকায় সম্ভব হচ্ছে না।























