০৯:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বৃষ্টির প্রভাবে সবজির দাম লাগামছাড়া

◉ সবজির দামই বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা

নতুন অর্থবছরের শুরু দিনে সুখবর নেই ক্রেতাদের জন্য। টানা বৃষ্টির প্রভাবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। বৃষ্টির কারণে ঢাকার বাইরে থেকে পর্যাপ্ত সরবরাহের ঘাটতির ফলে বাজারে হঠাৎ করে দাম বেড়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এই দাম বৃদ্ধির প্রভাব সরাসরি পড়েছে সাধারণ মানুষের ওপর। বাড়তি দামে সবজি কিনতে অনেকেই হিমশিম খাচ্ছেন। ভোক্তাদের দাবি যে কোনো ইস্যুকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীর বাজার কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের বাজার তদারিকর বৃদ্ধির প্রতি জোর দিতে হবে। বিক্রেতারা জানান, বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাট খারাপ থাকায় ও পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় সবজি বাজারে আসতে সময় লাগছে। পাশাপাশি আগের তুলনায় পরিবহন ব্যয়ও বেড়েছে। ফলে বাজারগুলোতে সবজির দাম বেড়ে গেছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর কাওরান বাজার , খিলগাঁও রেলগেট কাঁচাবাজার, মালিবাগ বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রায় সব ধরনের সবজির দামই ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কমেছে কয়েকটি সবজির দাম।

বাজারে লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে, যেখানে ঈদের আগে বিক্রি হতো ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। কালো গোল বেগুন ৯০ টাকা। পটোল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ৭০ টাকা। ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। উচ্ছে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ৪০-৫০ টাকা। কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ৮০ টাকা। কচুরমুখী ৯০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে প্রতিটি লাউ ৭০-৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৬০ টাকা, ফুলকপি ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি শসা ১২০-১৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২৪০ টাকা, ধনেপাতা ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লেবু প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা করে। প্রতি কেজি টমেটো ২২০-২৪০ টাকা, দেশি গাজর ৮০ টাকা, চায়না গাজর ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে কম দামে বিক্রি হওয়া সবজিগুলোর মধ্যে প্রতি কেজি ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে, ধুন্দল ৫০ টাকায়, চিচিঙ্গা ৫০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকায়। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আজিম উল্লাহ্ বলেন, আগের থেকে কেনা কমিয়ে দিয়েছি। আগে এক ডজন ডিম কিনতাম, আর এখন কিনি এক হালি করে। সবজি কিনতাম কেজি হিসেবে, এখন কিনি আড়াইশো গ্রাম করে। দ্রব্যমূল্যের যে পরিমাণ দাম বেড়েছে, তাতে হিসাব করে কেনা বাদে উপায় নেই। কম খরচ করার চেষ্টা করছি। মনে করেছিলাম বাসার জন্য কেজি খানেক সবজি কিনে নিয়ে যাব। যেই দাম বেড়েছে তাতে শুধু ১০ টাকার ধনে পাতা ও ২০ টাকার কাঁচামরিচ কিনেছি।

খিলগাঁও রেলগেটের সবজি বিক্রেতা ফজলে রাব্বি বলেন, বাজারে এখন সবজির দাম অনেক চড়া। কয়েকদিন টানা বৃষ্টির কারণে সবজির গাড়ি কম আসছে পাইকারি বাজারগুলোতে। যে কারণে পাইকারি বাজারের দাম বেড়ে জাওয়ায় এর প্রভাব খুচরা বাজারে পড়েছে। সবজির দাম অনেক বাড়ার কারণে বাজারে কাস্টমার আগের তুলনায় অনেক কমে গিয়েছে। পাশাপাশি কেনার পরিমাণও কমিয়েছে ক্রেতারা। কোনো ক্রেতা আগে এক-দুই কেজি সবজি কিনলে এখন কেনে আধা কেজি বা আড়াইশ গ্রাম করে।

জনপ্রিয় সংবাদ

স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

বৃষ্টির প্রভাবে সবজির দাম লাগামছাড়া

আপডেট সময় : ০৯:০৬:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ জুলাই ২০২৪

◉ সবজির দামই বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা

নতুন অর্থবছরের শুরু দিনে সুখবর নেই ক্রেতাদের জন্য। টানা বৃষ্টির প্রভাবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার বাজারে সবজির দাম বেড়েছে। বৃষ্টির কারণে ঢাকার বাইরে থেকে পর্যাপ্ত সরবরাহের ঘাটতির ফলে বাজারে হঠাৎ করে দাম বেড়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। এই দাম বৃদ্ধির প্রভাব সরাসরি পড়েছে সাধারণ মানুষের ওপর। বাড়তি দামে সবজি কিনতে অনেকেই হিমশিম খাচ্ছেন। ভোক্তাদের দাবি যে কোনো ইস্যুকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীর বাজার কৃত্রিম সংকট তৈরি করে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের বাজার তদারিকর বৃদ্ধির প্রতি জোর দিতে হবে। বিক্রেতারা জানান, বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। বৃষ্টির কারণে রাস্তাঘাট খারাপ থাকায় ও পরিবহন ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় সবজি বাজারে আসতে সময় লাগছে। পাশাপাশি আগের তুলনায় পরিবহন ব্যয়ও বেড়েছে। ফলে বাজারগুলোতে সবজির দাম বেড়ে গেছে। গতকাল সোমবার রাজধানীর কাওরান বাজার , খিলগাঁও রেলগেট কাঁচাবাজার, মালিবাগ বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রায় সব ধরনের সবজির দামই ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কমেছে কয়েকটি সবজির দাম।

বাজারে লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে, যেখানে ঈদের আগে বিক্রি হতো ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। কালো গোল বেগুন ৯০ টাকা। পটোল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ৭০ টাকা। ঝিঙা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। উচ্ছে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা। পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ৪০-৫০ টাকা। কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে, যা আগে ছিল ৮০ টাকা। কচুরমুখী ৯০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে প্রতিটি লাউ ৭০-৮০ টাকা, চাল কুমড়া ৬০ টাকা, ফুলকপি ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি শসা ১২০-১৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২৪০ টাকা, ধনেপাতা ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। লেবু প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা করে। প্রতি কেজি টমেটো ২২০-২৪০ টাকা, দেশি গাজর ৮০ টাকা, চায়না গাজর ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে কম দামে বিক্রি হওয়া সবজিগুলোর মধ্যে প্রতি কেজি ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে, ধুন্দল ৫০ টাকায়, চিচিঙ্গা ৫০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকায়। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী আজিম উল্লাহ্ বলেন, আগের থেকে কেনা কমিয়ে দিয়েছি। আগে এক ডজন ডিম কিনতাম, আর এখন কিনি এক হালি করে। সবজি কিনতাম কেজি হিসেবে, এখন কিনি আড়াইশো গ্রাম করে। দ্রব্যমূল্যের যে পরিমাণ দাম বেড়েছে, তাতে হিসাব করে কেনা বাদে উপায় নেই। কম খরচ করার চেষ্টা করছি। মনে করেছিলাম বাসার জন্য কেজি খানেক সবজি কিনে নিয়ে যাব। যেই দাম বেড়েছে তাতে শুধু ১০ টাকার ধনে পাতা ও ২০ টাকার কাঁচামরিচ কিনেছি।

খিলগাঁও রেলগেটের সবজি বিক্রেতা ফজলে রাব্বি বলেন, বাজারে এখন সবজির দাম অনেক চড়া। কয়েকদিন টানা বৃষ্টির কারণে সবজির গাড়ি কম আসছে পাইকারি বাজারগুলোতে। যে কারণে পাইকারি বাজারের দাম বেড়ে জাওয়ায় এর প্রভাব খুচরা বাজারে পড়েছে। সবজির দাম অনেক বাড়ার কারণে বাজারে কাস্টমার আগের তুলনায় অনেক কমে গিয়েছে। পাশাপাশি কেনার পরিমাণও কমিয়েছে ক্রেতারা। কোনো ক্রেতা আগে এক-দুই কেজি সবজি কিনলে এখন কেনে আধা কেজি বা আড়াইশ গ্রাম করে।