০৬:৩৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অনিশ্চয়তায় বাইডেনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ

◉ বাইডেন পারকিনসনসের চিকিৎসা নিচ্ছেন না : হোয়াইট হাউস
◉ ইগোর কারণে বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না : ট্রাম্প
◉ বাইডেনকে সরানোর পথ খুঁজছেন ডেমোক্র্যাট ডোনাররা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে টেলিভিশন বিতর্ক এর আগে কখনও এত বড় ভূমিকায় আসেনি। এক বিতর্কে পাল্টে গেছে নির্বাচনের যাবতীয় চিত্র। বিতর্কে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকেই ঝুঁকিতে ফেলেছে। দলের অভ্যন্তরে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়াতে বাইডেনকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। অর্থদাতা অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
তবে গত সোমবার ডেমোক্র্যাট এমপিদের কাছে বাইডেন এক চিঠিতে প্রার্থিতা থেকে সরে যাওয়ার আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছাকে দ্বিগুণ করেছি। আমি এই নির্বাচনেও ট্রাম্পকে পরাজিত করার ক্ষেত্রে দলের একজন সেরা প্রার্থী। ভোটাররা আমার ওপর যে আস্থা রেখেছেন, তার প্রতিদান আমি এই নির্বাচনেও দিতে চাই। এর আগে তিনি বলেছিলেন, তিনি প্রার্থিতা থেকে সরবেন না; শুধু ঈশ্বরই তাকে সরাতে পারবেন। গত রোববার বাইডেনের সরে দাঁড়ানোর দাবি তোলেন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের বেশ কয়েকজন ডেমোক্র্যাট নেতা।
গত ২৭ জুন সিএনএনের আয়োজনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প নানা ইস্যুতে মিথ্যাচার করলেও বাইডেন যথাযথ জবাব দিতে পারেননি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে অন্যতম তিক্ত ওই বিতর্কের পর বাইডেনের বয়স নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি নবীন কাউকে প্রার্থী কারার দাবিকে জোরালো করেছে। বিতর্কে হার বাইডেনের জনপ্রিয়তায় কতটা প্রভাব ফেলেছে, তা দ্য নিউইয়র্ক টাইমস ও সিয়েনা কলেজের এক জরিপে উঠে এসেছে। সেখানে বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৩ থেকে ৪৯ শতাংশ ভোটার এখন ট্রাম্পের দল রিপাবলিকানদের সমর্থন করছে, যা বিতর্কের আগের চেয়ে ৩ শতাংশ বেশি। অথচ এই ট্রাম্পকেই ২০২০ সালে দুটি নির্বাচনী বিতর্কে হারান বাইডেন। এ অনিশ্চয়তার আগুনে ঘি ঢালছে অর্থদাতাদের অনীহা। ২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেনের সঙ্গে থেকে কাজ করেছেন হোয়াইট হাউসের এমন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, অর্থদাতারা চান না প্রেসিডেন্ট আবার নির্বাচনে অংশ নিন।
ডেমোক্র্যাটদের উদ্বেগের একটি বড় কারণ হচ্ছে, ট্রাম্প এগিয়ে থাকলে সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার পাশাপাশি প্রেসিডেন্সি ও প্রতিনিধি পরিষদের আসন হারানোর আশঙ্কা আছে। বাইডেনের বয়স ৮১, ট্রাম্পের ৭৮। উভয় প্রার্থীর বয়স অনেক বেশি হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

 

বাইডেন পারকিনসনসের চিকিৎসা নিচ্ছেন না :

হোয়াইট হাউস
গত বছর আগস্ট থেকে এ বছর মার্চ পর্যন্ত পারকিনসনসের চিকিৎসা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ একজন চিকিৎসক অন্তত আটবার হোয়াইট হাউসে এসেছেন। হোয়াইট হাউসের দর্শনার্থী বইয়ে থাকা তথ্যের ভিত্তিতে নিউইয়র্ক টাইমস এ খবর প্রকাশ করছে। গত শনিবার নিউইয়র্ক পোস্টে প্রথম এ খবর প্রকাশ পায়। তারপর থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পারকিনসনসে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এ নিয়ে গত সোমবার হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব কারিন জ্যঁ-পিয়েরে বলেন, প্রেসিডেন্টের কি পারকিনসনসের চিকিৎসা হয়েছে? না। প্রেসিডেন্ট কি পারকিনসনসের চিকিৎসা নিচ্ছেন? না, তিনি নিচ্ছেন না। তিনি কি পারকিনসনসের জন্য কোনো ওষুধ খাচ্ছেন? না।
নিউইয়র্ক পোস্টে খবর প্রকাশের পর রয়টার্স থেকে হোয়াইট হাউসের দর্শনার্থী বই পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিক্যাল সেন্টারের স্নায়ুরোগবিশেষজ্ঞ এবং চলাফেরায় অসুবিধার কারণে শারীরিক সমস্যার চিকিৎসক ডা. কেভিন ক্যানার্ড গত আগস্ট থেকে এ বছর মার্চ পর্যন্ত আটবার হোয়াইট হাউসে গেছেন। দর্শনার্থী বই অনুযায়ী, ক্যানার্ড হোয়াইট হাউসের চিকিৎসক ডা. কেভিন ও’কনরের সঙ্গে গত জানুয়ারির মাঝামাঝি দেখা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা বারবার জ্যঁ-পিয়েরেকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেছেন। জবাবে তিনি নিরাপত্তার খাতিরে সবার গোপনীয়তার প্রতি সম্মান জানাতে বলেছেন। জ্যঁ-পিয়েরে বলেছেন, প্রতিবছর বাইডেনের যে শারীরিক পরীক্ষা হয়, তার অংশ হিসেবে একজন স্নায়ুরোগবিশেষজ্ঞ তিনবার বাইডেনকে পরীক্ষা করেছেন। ডা. ক্যানার্ডের হোয়াইট হাউসে যাওয়া নিয়ে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে, হাজারো সেনা কর্মকর্তা হোয়াইট হাউসে আসেন। তাদের মেডিক্যাল ইউনিটের তত্ত্বাবধানে থাকতে হয়।

 

ইগোর কারণে বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না, ভবিষ্যৎবাণী ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন না, এমনটাই মনে করছেন তার পূর্বসূরী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, বাইডেনের শক্তিশালী অবস্থান এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থন তার প্রার্থিতা চালিয়ে যেতে যথেষ্ট। বাইডেন প্রেসিডেন্ট এবং দলের জ্যেষ্ঠ নেতা হিসেবে ডেমোক্রেটিক পার্টিতে বেশ শক্তিশালী। তার ভক্ত-অনুসারী এবং প্রতিনিধিদেরও অভাব নেই। তাই তাকে সরানো অসম্ভব। এমনকি সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারাও কোনো কাজে আসবে না। বাইডেনের ইগো সমস্যা রয়েছে এবং তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্যই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারা অনুসারে, প্রেসিডেন্ট যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণে অক্ষম হয়ে পড়েন, তবে ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রিসভার সদস্যরা প্রেসিডেন্টকে পদ থেকে অব্যাহতি দিতে পারেন। তবে ট্রাম্পের মতে, এই ধারা প্রয়োগ করে বাইডেনকে সরানো সম্ভব হবে না।

 

বাইডেনকে সরানোর পথ খুঁজছেন ডেমোক্র্যাট ডোনাররা
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির মূল অর্থদাতা তথা ডোনারদের অনেকেই তাকে আসন্ন নির্বাচনী প্রতিযোগিতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পথ খুঁজছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের ডিলবুক নিউজলেটারে বলা হয়েছে, কিছু ডোনার বাইডেনকে তার খ্যাতি রক্ষা করার জন্য সরে যাওয়ার জন্য মার্জিত উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে অনেকে বিশ্বাস করেন, (বাইডেনের) তাড়াতাড়ি বাদ পড়া আরও ভালো।’
মার্কিন শেয়ারবাজারের অন্যতম কেন্দ্র ওয়ালস্ট্রিটভুক্ত বেশ কয়েকটি কোম্পানির নির্বাহী যারা বাইডেন তথা ডেমোক্রেটিক পার্টিকে তহবিল জোগান দেন- ডিলবুক নিউজলেটারকে বলেছেন, চূড়ান্তভাবে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী মনোনীত হওয়ার আগে বাইডেনকে বাদ দেওয়াটা ভুল হবে। এমনটা করা হলে তিনি তার উত্তরসূরি মনোনীত করার ক্ষমতা হারাবেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে ডেমোক্র্যাটরা আগস্টের শেষ দিকে শিকাগোতে সম্মেলন করবেন। ডিলবুক জানিয়েছে, ব্ল্যাকরকের নির্বাহী ল্যারি ফিঙ্ক, ব্ল্যাকস্টোনের জন গ্রে এবং ল্যাজার্ডের পিটার ওরসজ্যাগ এবং বারাক ওবামার ঘনিষ্ঠ সাবেক মার্কিন নির্বাহী রবার্ট উলফসহ বিশিষ্ট ডোনাররা বাইডেনের সঙ্গে থাকবেন কি না, তা নিয়ে কথা বলছেন নিজেদের মধ্যে।

জনপ্রিয় সংবাদ

অনিশ্চয়তায় বাইডেনের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ

আপডেট সময় : ০৯:১১:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ জুলাই ২০২৪

◉ বাইডেন পারকিনসনসের চিকিৎসা নিচ্ছেন না : হোয়াইট হাউস
◉ ইগোর কারণে বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না : ট্রাম্প
◉ বাইডেনকে সরানোর পথ খুঁজছেন ডেমোক্র্যাট ডোনাররা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে টেলিভিশন বিতর্ক এর আগে কখনও এত বড় ভূমিকায় আসেনি। এক বিতর্কে পাল্টে গেছে নির্বাচনের যাবতীয় চিত্র। বিতর্কে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকেই ঝুঁকিতে ফেলেছে। দলের অভ্যন্তরে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়াতে বাইডেনকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। অর্থদাতা অনেকেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন।
তবে গত সোমবার ডেমোক্র্যাট এমপিদের কাছে বাইডেন এক চিঠিতে প্রার্থিতা থেকে সরে যাওয়ার আহ্বানকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছাকে দ্বিগুণ করেছি। আমি এই নির্বাচনেও ট্রাম্পকে পরাজিত করার ক্ষেত্রে দলের একজন সেরা প্রার্থী। ভোটাররা আমার ওপর যে আস্থা রেখেছেন, তার প্রতিদান আমি এই নির্বাচনেও দিতে চাই। এর আগে তিনি বলেছিলেন, তিনি প্রার্থিতা থেকে সরবেন না; শুধু ঈশ্বরই তাকে সরাতে পারবেন। গত রোববার বাইডেনের সরে দাঁড়ানোর দাবি তোলেন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের বেশ কয়েকজন ডেমোক্র্যাট নেতা।
গত ২৭ জুন সিএনএনের আয়োজনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প নানা ইস্যুতে মিথ্যাচার করলেও বাইডেন যথাযথ জবাব দিতে পারেননি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ইতিহাসে অন্যতম তিক্ত ওই বিতর্কের পর বাইডেনের বয়স নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি নবীন কাউকে প্রার্থী কারার দাবিকে জোরালো করেছে। বিতর্কে হার বাইডেনের জনপ্রিয়তায় কতটা প্রভাব ফেলেছে, তা দ্য নিউইয়র্ক টাইমস ও সিয়েনা কলেজের এক জরিপে উঠে এসেছে। সেখানে বলা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৩ থেকে ৪৯ শতাংশ ভোটার এখন ট্রাম্পের দল রিপাবলিকানদের সমর্থন করছে, যা বিতর্কের আগের চেয়ে ৩ শতাংশ বেশি। অথচ এই ট্রাম্পকেই ২০২০ সালে দুটি নির্বাচনী বিতর্কে হারান বাইডেন। এ অনিশ্চয়তার আগুনে ঘি ঢালছে অর্থদাতাদের অনীহা। ২০২০ সালের নির্বাচনে বাইডেনের সঙ্গে থেকে কাজ করেছেন হোয়াইট হাউসের এমন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, অর্থদাতারা চান না প্রেসিডেন্ট আবার নির্বাচনে অংশ নিন।
ডেমোক্র্যাটদের উদ্বেগের একটি বড় কারণ হচ্ছে, ট্রাম্প এগিয়ে থাকলে সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতার পাশাপাশি প্রেসিডেন্সি ও প্রতিনিধি পরিষদের আসন হারানোর আশঙ্কা আছে। বাইডেনের বয়স ৮১, ট্রাম্পের ৭৮। উভয় প্রার্থীর বয়স অনেক বেশি হওয়ায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

 

বাইডেন পারকিনসনসের চিকিৎসা নিচ্ছেন না :

হোয়াইট হাউস
গত বছর আগস্ট থেকে এ বছর মার্চ পর্যন্ত পারকিনসনসের চিকিৎসা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ একজন চিকিৎসক অন্তত আটবার হোয়াইট হাউসে এসেছেন। হোয়াইট হাউসের দর্শনার্থী বইয়ে থাকা তথ্যের ভিত্তিতে নিউইয়র্ক টাইমস এ খবর প্রকাশ করছে। গত শনিবার নিউইয়র্ক পোস্টে প্রথম এ খবর প্রকাশ পায়। তারপর থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পারকিনসনসে আক্রান্ত হওয়া নিয়ে জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। এ নিয়ে গত সোমবার হোয়াইট হাউসে আয়োজিত এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ সম্মেলনে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব কারিন জ্যঁ-পিয়েরে বলেন, প্রেসিডেন্টের কি পারকিনসনসের চিকিৎসা হয়েছে? না। প্রেসিডেন্ট কি পারকিনসনসের চিকিৎসা নিচ্ছেন? না, তিনি নিচ্ছেন না। তিনি কি পারকিনসনসের জন্য কোনো ওষুধ খাচ্ছেন? না।
নিউইয়র্ক পোস্টে খবর প্রকাশের পর রয়টার্স থেকে হোয়াইট হাউসের দর্শনার্থী বই পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। সেখানে দেখা গেছে, ওয়াল্টার রিড ন্যাশনাল মিলিটারি মেডিক্যাল সেন্টারের স্নায়ুরোগবিশেষজ্ঞ এবং চলাফেরায় অসুবিধার কারণে শারীরিক সমস্যার চিকিৎসক ডা. কেভিন ক্যানার্ড গত আগস্ট থেকে এ বছর মার্চ পর্যন্ত আটবার হোয়াইট হাউসে গেছেন। দর্শনার্থী বই অনুযায়ী, ক্যানার্ড হোয়াইট হাউসের চিকিৎসক ডা. কেভিন ও’কনরের সঙ্গে গত জানুয়ারির মাঝামাঝি দেখা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা বারবার জ্যঁ-পিয়েরেকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করেছেন। জবাবে তিনি নিরাপত্তার খাতিরে সবার গোপনীয়তার প্রতি সম্মান জানাতে বলেছেন। জ্যঁ-পিয়েরে বলেছেন, প্রতিবছর বাইডেনের যে শারীরিক পরীক্ষা হয়, তার অংশ হিসেবে একজন স্নায়ুরোগবিশেষজ্ঞ তিনবার বাইডেনকে পরীক্ষা করেছেন। ডা. ক্যানার্ডের হোয়াইট হাউসে যাওয়া নিয়ে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তবে, হাজারো সেনা কর্মকর্তা হোয়াইট হাউসে আসেন। তাদের মেডিক্যাল ইউনিটের তত্ত্বাবধানে থাকতে হয়।

 

ইগোর কারণে বাইডেন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন না, ভবিষ্যৎবাণী ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন না, এমনটাই মনে করছেন তার পূর্বসূরী ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, বাইডেনের শক্তিশালী অবস্থান এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থন তার প্রার্থিতা চালিয়ে যেতে যথেষ্ট। বাইডেন প্রেসিডেন্ট এবং দলের জ্যেষ্ঠ নেতা হিসেবে ডেমোক্রেটিক পার্টিতে বেশ শক্তিশালী। তার ভক্ত-অনুসারী এবং প্রতিনিধিদেরও অভাব নেই। তাই তাকে সরানো অসম্ভব। এমনকি সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারাও কোনো কাজে আসবে না। বাইডেনের ইগো সমস্যা রয়েছে এবং তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্যই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২৫ নম্বর ধারা অনুসারে, প্রেসিডেন্ট যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণে অক্ষম হয়ে পড়েন, তবে ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং মন্ত্রিসভার সদস্যরা প্রেসিডেন্টকে পদ থেকে অব্যাহতি দিতে পারেন। তবে ট্রাম্পের মতে, এই ধারা প্রয়োগ করে বাইডেনকে সরানো সম্ভব হবে না।

 

বাইডেনকে সরানোর পথ খুঁজছেন ডেমোক্র্যাট ডোনাররা
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির মূল অর্থদাতা তথা ডোনারদের অনেকেই তাকে আসন্ন নির্বাচনী প্রতিযোগিতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পথ খুঁজছেন। নিউইয়র্ক টাইমসের ডিলবুক নিউজলেটারে বলা হয়েছে, কিছু ডোনার বাইডেনকে তার খ্যাতি রক্ষা করার জন্য সরে যাওয়ার জন্য মার্জিত উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে অনেকে বিশ্বাস করেন, (বাইডেনের) তাড়াতাড়ি বাদ পড়া আরও ভালো।’
মার্কিন শেয়ারবাজারের অন্যতম কেন্দ্র ওয়ালস্ট্রিটভুক্ত বেশ কয়েকটি কোম্পানির নির্বাহী যারা বাইডেন তথা ডেমোক্রেটিক পার্টিকে তহবিল জোগান দেন- ডিলবুক নিউজলেটারকে বলেছেন, চূড়ান্তভাবে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী মনোনীত হওয়ার আগে বাইডেনকে বাদ দেওয়াটা ভুল হবে। এমনটা করা হলে তিনি তার উত্তরসূরি মনোনীত করার ক্ষমতা হারাবেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে ডেমোক্র্যাটরা আগস্টের শেষ দিকে শিকাগোতে সম্মেলন করবেন। ডিলবুক জানিয়েছে, ব্ল্যাকরকের নির্বাহী ল্যারি ফিঙ্ক, ব্ল্যাকস্টোনের জন গ্রে এবং ল্যাজার্ডের পিটার ওরসজ্যাগ এবং বারাক ওবামার ঘনিষ্ঠ সাবেক মার্কিন নির্বাহী রবার্ট উলফসহ বিশিষ্ট ডোনাররা বাইডেনের সঙ্গে থাকবেন কি না, তা নিয়ে কথা বলছেন নিজেদের মধ্যে।