▶ এবার কমলা হ্যারিসকে ‘ইহুদি বিদ্বেষী’ বললেন ট্রাম্প
▶ মার্কিন নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দিলেন কমলা হ্যারিস
মার্কিন কংগ্রেসে নেতানিয়াহুর দেওয়া বক্তব্য এড়িয়ে যাওয়ায় কমলা হ্যারিসকে ইহুদি বিদ্বেষী বলেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, তিনি ইহুদিদের পছন্দ করেন না, তিনি ইসরায়েলকেও পছন্দ করেন না। তিনি এটি সব সময়ই করে থাকেন, তার মধ্যে কোনো পরিবর্তন নেই। গত শুক্রবার দক্ষিণ ফ্লোরিডায় আয়োজিত ধর্মীয় এক বৈঠকে গাজার মানবিক দুর্দশা নিয়ে কমলার বক্তব্যের পর ট্রাম্প বেশ চটেছেন। ইহুদি ইস্যু সামনে এনে তিনি ভোটারদের খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন। এরই অংশ হিসেবে বক্তব্যে সরাসরি কমলাকে আক্রমণ করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, কমলা হ্যারিস মার্কিন কংগ্রেসের অধিবেশনে দেওয়া ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ভাষণ এড়িয়ে গেছেন। কারণ তিনি ইহুদি ধর্মের মানুষদের পছন্দ করেন না। তিনি ইসরায়েলও পছন্দ করেন না। এটি এমনই এবং সর্বদা এমনই হতে চলেছে। কমলা কিছুই পরিবর্তন করতে যাচ্ছেন না। জানা গেছে, কমলার স্বামীও একজন ইহুদি। তার বিরুদ্ধে ইহুদি বিদ্বেষ বা নেতানিয়াহুর বিরোধিতার প্রমাণ পাওয়া যায় না। ওই ভাষণ অনুষ্ঠানে যোগ না দেওয়ার সঙ্গে গাজা ইস্যুরও কোনো সম্পর্ক নেই। বরং মিলওয়াকিতে পূর্ব নির্ধারিত প্রচার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেখানে যাওয়ায় কংগ্রেসে উপস্থিত থাকতে পারেননি কমলা হ্যারিস।
এর আগে, গত শুক্রবার ফ্লোরিডায় অবস্থিত নিজ বাসভবন মার-এ-লাগোতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি না জিতলে মধ্যপ্রাচ্যে আরও একটি বড় ধরনের যুদ্ধ লেগে যাবে। এমনকি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধও শুরু হতে পারে। যদি আমরা (রিপাবলিকান পার্টি ও ট্রাম্প) জিতি, তাহলে বিষয়টি হবে খুবই সহজ। কিন্তু আমরা যদি না জিতি, তাহলে আপনারা মধ্যপ্রাচ্যে একটি বড় ধরনের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বেন, এমনকি সেটা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধও হতে পারে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, আপনারা সবাই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছেন। কারণ, একদল অযোগ্য লোক আমাদের দেশ পরিচালনা করছে।
বৈঠকের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, আমি ইসরায়েলের প্রতি সব সময়ই ইতিবাচক ছিলাম যেকোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের চেয়ে। আমি অনেকগুলো কাজ করেছি; গোলান মালভূমি (ইসরায়েলি বলে স্বীকৃতি দিয়েছি), জেরুসালেমকে রাজধানী করেছি—প্রকৃতপক্ষে আমরা সেখানে আমাদের দূতাবাস স্থাপন করেছি…এবং ইরানের পারমাণবিক চুক্তিও করেছিলাম। দুঃখজনক হলেও সত্য, বাইডেন প্রশাসন ইরান ইস্যুতে কোনো কিছুই করেনি। আমরা ইরানের পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরও হয়ে এসেছিলাম, যা এক কথায় অসাধারণ একটি বিষয় ছিল। হয়তো ইসরায়েলের জন্য আমি যা করেছি তার মধ্যে সবচেয়ে সেরা কাজ ছিল এটি। কিন্তু বাইডেন প্রশাসন এই ইস্যুতে কোনো কিছুই করেনি। আমরা ইরানের সঙ্গে একটি চুক্তি করতে পারতাম এবং এটি হলে তা সবার জন্যই ভালো হতো। এমনকি ইরানের জন্যও…হয়তো এটিই মধ্যপ্রাচ্যকে রক্ষা করত। কিন্তু তিনি (কমলা হ্যারিস) এখন (বাইডেনের) জায়গা নিয়েছেন এবং তিনি তার চেয়েও খারাপ।
মার্কিন নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দিলেন কমলা হ্যারিস
মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাচনী লড়াই থেকে জো বাইডেন সরে দাঁড়িয়েছেন আগেই। এর পরই ডেমোক্র্যাটদের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিসের নাম ঘোষণা করেছিলেন প্রাক্তন মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি। অবশেষে নিজের মনোনয়ন জমা দিলেন ভারতীয় কমলা হ্যারিস। এক্স হ্যান্ডলে বিষয়টি জানিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘আজ, আমি আনুষ্ঠানিকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির পদপ্রার্থী হিসেবে ফর্মগুলোতে স্বাক্ষর করেছি। আমি প্রতিটি ভোট অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করব। আর নভেম্বরে আমাদের জনগণের শক্তিতে বলীয়ান প্রচারই জয়ী হবে।’
এদিকে, বাইডেন সরে দাঁড়ানোর পর ট্রাম্পের উপরে যে চাপ বাড়ছে সেদিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে সাম্প্রতিক পোল। সম্প্রতি দেখা গেছে, এক পোলে ট্রাম্পকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন কমলা। ইপসসের নয়া ওই পোলে দেখা গেছে, যেখানে ট্রাম্প পেয়েছেন ৪২ শতাংশ ভোট, সেখানে কমলার ঝুলিতে ভোট ৪৪ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহের পোলেও অবশ্য ট্রাম্পকে টক্কর দিয়েছিলেন কমলা। সেবার স্কোর ‘টাই’ হয়। দু’জনেই পেয়েছিলেন ৪৪ শতাংশ ভোট। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি খেলা ঘুরছে আমেরিকায়? এই পরিস্থিতিতেই এবার মনোনয়ন জমা দিলেম কমলা হ্যারিস।


























