❖ লেনদেন কমেছে ৬৫ শতাংশের বেশি
❖ দৈনিক লেনদেন ৬৪৭ থেকে নেমেছে ১১২ কোটি
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ধস নেমেছে ডিজিটাল লেনদেনে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে লেনদেন কমেছে ৬৫ শতাংশের বেশি। পাঁচ দিন ইন্টারনেটসেবা বন্ধ থাকায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে। দৈনিক লেনদেন ৬৪৭ থেকে নেমেছে ১১২ কোটি টাকায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। ফোরজি ইন্টারনেট চালু ও করোনা মহামারির পর দেশে ক্যাশলেস লেনদেন বেড়েছে কয়েক গুণ।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, আগের সপ্তাহের তিন দিনে বা ১১ থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের পরিমাণ ছিল এক হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ এই সময় দিনে গড় লেনদেন ছিল ৬৪৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
সেখানে পরের সপ্তাহে বা ১৮ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত দেশে ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে মোট এক লাখ চার হাজার ২২৬ বার ট্রানজেকশন করেছে গ্রাহকরা। এসব ট্রানজেকশনে লেনদেন হয়েছে মাত্র ৬৭৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ দৈনিক গড় লেনদেন নেমেছে ১১২ কোটি টাকায়।
তথ্য বলছে, কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হলে গত ১৬ জুলাই মোবাইল ইন্টারনেট এবং ১৮ জুলাই ঢাকায় ডাটা সেন্টারে দুর্বৃত্তরা আগুন দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এদিন রাত ৮টার দিকে সব ধরনের ইন্টারনেটসেবা বন্ধ হয়ে যায়। এতে দেশের ইন্টারনেট ব্যাংকিং বিশেষত এটিএম, পিওএস, কিউআর কোড লেনদেন আশঙ্কাজনকহারে কমে যায়। পাশাপাশি ই-কমার্স লেনদেনসহ সব ধরনের সেবাপ্রাপ্তি শূন্যের কোঠায় নেমে আসে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, সাধারণত অফিস খোলার দিন ইন্টারনেট ব্যাংকিংয়ে লেনদেন বেশি হয়। গত ১৮ জুলাই রাতে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই মাধ্যমে লেনদেন সম্ভব হয়নি। ১৮ থেকে ২৩ জুলাই যেই লেনদেন দেখা যাচ্ছে, তা ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার আগের লেনদেন। দেশের সংকটময় পরিস্থিতির কারণে সব মাধ্যমেই লেনদেন কমেছে। কিন্তু এটিএম ও পিওএসের লেনদেন স্বাভাবিক ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের এনপিএসবি ও বিইএফটিএন পরিষেবা চালু ছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ১১ থেকে ১৩ জুলাই সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ১৩ হাজার ৪২৮টি এটিএমে মোট ছয় লাখ ১৩ হাজার ৪৫৮টি লেনদেন হয়েছিল। এতে সব মিলিয়ে ৫০৬ কোটি টাকা লেনদেন হয়। অর্থাৎ দৈনিক লেনদেন ছিল ১৬৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। অথচ কমপ্লিট শাটডাউন ও কারফিউ চলাকালীন ১৮ থেকে ২৩ জুলাই মোট লেনদেন হয়েছে ৩৬১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এই পাঁচ দিনে গড় লেনদেন ৬০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ গড় লেনদেন কমেছে ৬৪.২৮ শতাংশ।
তথ্য আরো বলছে, ১৮ থেকে ২৩ জুলাই এক লাখ ১৬ হাজার ২৩২টি পিওএসের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ২৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। গড় লেনদেন দাঁড়ায় চার কোটি ৭১ লাখ টাকা। আর ১১ থেকে ১৩ জুলাই এসব পিওএসএ লেনদেন হয়েছে ৪২ কোটি ২৭ লাখ টাকা। এই তিন দিনে গড় লেনদেন ছিল ১৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ সংকটকালীন গড় লেনদেন কমেছে ৬৬.৩৫ শতাংশ। আর ১১ থেকে ১৩ জুলাই কিউআর কোডের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। আর সংকটকালীন ১৮ থেকে ২৩ জুলাই লেনদেন হয়েছে এক কোটি ৪০ লাখ টাকা। অর্থাৎ গড় লেনদেন কমেছে ৯১ শতাংশ।


























