০৮:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শ্রমিক অসন্তোষের জেরে ২০ শতাংশ অর্ডার বাতিল

 

◉ ২১৯ গার্মেন্টস বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ
◉ উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে
◉ শ্রম সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে ১৬৩৫৭ নম্বরে কল দেওয়ার আহ্বান

╰┈➤শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে যেমন ষড়যন্ত্র আছে তেমনই তাদের কিছু ন্যায্য দাবিও আছেÑ আসিফ মাহমুদ, উপদেষ্টা, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়
╰┈➤বন্ধ কারখানার সংখ্যা বেড়ে অন্তত আট গুণে এসেছেÑ খায়রুল মামুন মিন্ট, আইনবিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন

দেশের রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় সেক্টর পেশাক শিল্প কারখান। ছাত্র জনতার বিক্ষোভের পর স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বিভিন্ন সুবিধাভোগী মহল বর্তমান সরকারের পথচলাকে বাঁধাগ্রস্ত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। অর্ন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে টানা দুই সপ্তাহের অধিক সময় গার্মেন্টসশিল্প শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি তুলে আন্দোলন করছেন। আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষের কারণে পোশাকশিল্পে বেশ অস্থিরতা দেখা দেয়। এমন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিল্প উদ্যোক্তারা কারখানা বন্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বন্ধ কারখানার সংখ্য এসে দাঁড়ায় ২১৯টিতে। হঠাৎ করে সৃষ্ট এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। ইতিমধ্যে শ্রমিকদের দাবিগুলো যাতে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করতে পারেন, সে লক্ষ্যে শ্রমসংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন। পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন অভিযোগ যাতে সরাসরি মন্ত্রণালয়ে জানাতে পারে সেই জন্য হটলাইন সেবা চালু। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন এই পরিস্থিতি চলমান থাকলে দেশের অর্থনীতির বড় ক্ষতির সম্মুখীন হবে। ইতিমধ্যে সৃষ্ট এই পরিস্থিতির কারণে প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কৃর্তপক্ষ।

জানা গেছে, শ্রমিকদের বেতন, হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল বৃদ্ধি, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধসহ, বেশ কয়েকটি দাবিতে দুই সপ্তাহের অধিক সময় ধরে তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করে আন্দোলন শুরু করেন। তাদের আন্দোলনের মুখে আশুলিয়ার জামগড়া, নরসিংহপুরসহ আশপাশের অন্তত ২১৯টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ১৩৩টি কারখানা সাধারণ ছুটি ও ৮৬টি কারখানা শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারা মোতাবেক বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে আজ কোথাও সড়ক অবরোধ বা বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়নি। শিল্পাঞ্চলের অন্যান্য কারখানাসহ ঢাকা ইপিজেডের কারখানাগুলো চালু রয়েছে। যেসব কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে: ভার্চুয়াল বটয়ম, মণ্ডল নিটওয়্যারস লিমিটেড, সিগমা ফ্যাশনস লিমিটেড, হা-মীম গ্রুপ, ক্রশওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, জিন্স প্রোডিউসার লিমিটেড, অরুণিমা গ্রুপের অরুণিমা স্পোর্টসওয়্যার লিমিটেড এবং ডিএমসি অ্যাপারেলস লিমিটেড, এস এম নিটওয়্যারস লিমিটেড, আগামী অ্যাপারেলস লিমিটেড, মানতা অ্যাপারেলস লিমিটেডসহ অন্তত ৮৬টি পোশাক কারখানা।

শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, ‘যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য আমরা মালিক পক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছি। তারা এই বিষয়গুলো কর্ণপাত না করে দীর্ঘদিন ধরে কালক্ষেপণ করে আসছিল। শ্রমিকরা প্রতিকার না পেয়ে কর্মবিরতি পালন করে আন্দোলনে অংশ নেন। আন্দোলনের সপ্তাহখানেক পর কিছু কারখানার মালিক শ্রমিকদের দাবি মেনে নেন। অন্যান্য কারখানার মালিক দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করছেন না। এতে শ্রমিকরা আরো ক্ষুব্ধ হন। যার ফলে ওই কারখানার শ্রমিকরা কর্মস্থলে পৌছে কর্মবিরতি পালন করেন। বাধ্য হয়ে এসব কারখানা ছুটি ঘোষণা করে।’
এ বিষয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। এরই জেরে প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে। এই শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে যেমন ষড়যন্ত্র আছে তেমনই তাদের কিছু ন্যায্য দাবিও আছে। তবে যারা উসকানি দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শ্রম আইন নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। তাদের মাধ্যমে শ্রমিকদের অভিযোগ শুনে শ্রম অসন্তোষ নিরসন করা হবে। শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এদিকে শ্রম সংক্রান্ত সব ধরনের অভিযোগ জানাতে ১৬৩৫৭ নম্বরে কল দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। টোল ফ্রি এ নম্বরে কল করে শ্রমিকরা অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন।

উপদেষ্টা বলেন, আপাতত শ্রমিকরা যে সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হচ্ছেন এবং তাদের দাবিগুলো যাতে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করতে পারেন, সে লক্ষ্যে একটি কমিটি করা হয়েছে। আরএমজি এবং নন-আরএমজি সেক্টরের শ্রম অসন্তোষ ও বিদ্যমান সমস্যা পর্যালোচনা করে সুপারিশ দেওয়ার জন্য শ্রমসংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে শ্রম অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক এবং শ্রম অধিদফতরের ট্রেড ইউনিয়ন ও সালিশির পরিচালককে সদস্য সচিব করে এ কমিটি করা হয়েছে। এতে তিন শ্রমিক নেতা, সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী এবং মালিক পক্ষের দুজন সদস্য আছেন।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক টেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, গতকালের তুলনায় বন্ধ কারখানার সংখ্যা বেড়ে অন্তত আট গুণে এসেছে। যার ফলে শ্রমিক অসন্তোষের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে এটা বলা যায়। শিল্পপাড়ায় স্থিতিশীল পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে দরকার জরুরি মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা। আলোচনার মাধ্যমে এসব সমস্যা দ্রুত সমাধা করা সম্ভব। এ ছাড়া কারখানা বন্ধ ঘোষণা একটি সাময়িক সমাধান। স্থায়ী সমাধানে আলোচনা জরুরি।

শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম জানান, গতকাল সকালে বেশ কিছু কারখানার শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করে কর্মবিরতি পালন করেন। এর ফলে এসব কারখানা কর্তৃপক্ষ বন্ধ ঘোষণা করে। পাশাপাশি শ্রম আইন ১৩ (১) ধারা অনুযায়ী কিছু কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার ২১৯টি কারখানা উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। আর শিল্পাঞ্চলে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারখানাগুলোর সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শিল্পাঞ্চলে যৌথ বাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রমিক অসন্তোষের জেরে ২০ শতাংশ অর্ডার বাতিল

আপডেট সময় : ০৭:৫৯:৩৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

◉ ২১৯ গার্মেন্টস বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ
◉ উসকানিদাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে
◉ শ্রম সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে ১৬৩৫৭ নম্বরে কল দেওয়ার আহ্বান

╰┈➤শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে যেমন ষড়যন্ত্র আছে তেমনই তাদের কিছু ন্যায্য দাবিও আছেÑ আসিফ মাহমুদ, উপদেষ্টা, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়
╰┈➤বন্ধ কারখানার সংখ্যা বেড়ে অন্তত আট গুণে এসেছেÑ খায়রুল মামুন মিন্ট, আইনবিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ও সোয়েটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন

দেশের রপ্তানি আয়ের সবচেয়ে বড় সেক্টর পেশাক শিল্প কারখান। ছাত্র জনতার বিক্ষোভের পর স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বিভিন্ন সুবিধাভোগী মহল বর্তমান সরকারের পথচলাকে বাঁধাগ্রস্ত করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। অর্ন্তবর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে টানা দুই সপ্তাহের অধিক সময় গার্মেন্টসশিল্প শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবি তুলে আন্দোলন করছেন। আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষের কারণে পোশাকশিল্পে বেশ অস্থিরতা দেখা দেয়। এমন উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিল্প উদ্যোক্তারা কারখানা বন্ধ ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বন্ধ কারখানার সংখ্য এসে দাঁড়ায় ২১৯টিতে। হঠাৎ করে সৃষ্ট এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। ইতিমধ্যে শ্রমিকদের দাবিগুলো যাতে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করতে পারেন, সে লক্ষ্যে শ্রমসংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন। পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন অভিযোগ যাতে সরাসরি মন্ত্রণালয়ে জানাতে পারে সেই জন্য হটলাইন সেবা চালু। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন এই পরিস্থিতি চলমান থাকলে দেশের অর্থনীতির বড় ক্ষতির সম্মুখীন হবে। ইতিমধ্যে সৃষ্ট এই পরিস্থিতির কারণে প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কৃর্তপক্ষ।

জানা গেছে, শ্রমিকদের বেতন, হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল বৃদ্ধি, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধসহ, বেশ কয়েকটি দাবিতে দুই সপ্তাহের অধিক সময় ধরে তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করে আন্দোলন শুরু করেন। তাদের আন্দোলনের মুখে আশুলিয়ার জামগড়া, নরসিংহপুরসহ আশপাশের অন্তত ২১৯টি কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ১৩৩টি কারখানা সাধারণ ছুটি ও ৮৬টি কারখানা শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারা মোতাবেক বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে আজ কোথাও সড়ক অবরোধ বা বিক্ষোভের খবর পাওয়া যায়নি। শিল্পাঞ্চলের অন্যান্য কারখানাসহ ঢাকা ইপিজেডের কারখানাগুলো চালু রয়েছে। যেসব কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে: ভার্চুয়াল বটয়ম, মণ্ডল নিটওয়্যারস লিমিটেড, সিগমা ফ্যাশনস লিমিটেড, হা-মীম গ্রুপ, ক্রশওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, জিন্স প্রোডিউসার লিমিটেড, অরুণিমা গ্রুপের অরুণিমা স্পোর্টসওয়্যার লিমিটেড এবং ডিএমসি অ্যাপারেলস লিমিটেড, এস এম নিটওয়্যারস লিমিটেড, আগামী অ্যাপারেলস লিমিটেড, মানতা অ্যাপারেলস লিমিটেডসহ অন্তত ৮৬টি পোশাক কারখানা।

শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, ‘যৌক্তিক দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য আমরা মালিক পক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছি। তারা এই বিষয়গুলো কর্ণপাত না করে দীর্ঘদিন ধরে কালক্ষেপণ করে আসছিল। শ্রমিকরা প্রতিকার না পেয়ে কর্মবিরতি পালন করে আন্দোলনে অংশ নেন। আন্দোলনের সপ্তাহখানেক পর কিছু কারখানার মালিক শ্রমিকদের দাবি মেনে নেন। অন্যান্য কারখানার মালিক দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বাস্তবায়ন করছেন না। এতে শ্রমিকরা আরো ক্ষুব্ধ হন। যার ফলে ওই কারখানার শ্রমিকরা কর্মস্থলে পৌছে কর্মবিরতি পালন করেন। বাধ্য হয়ে এসব কারখানা ছুটি ঘোষণা করে।’
এ বিষয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। এরই জেরে প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ অর্ডার বাতিল হয়ে গেছে। এই শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে যেমন ষড়যন্ত্র আছে তেমনই তাদের কিছু ন্যায্য দাবিও আছে। তবে যারা উসকানি দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শ্রম আইন নিয়ে যারা কাজ করছেন তাদের নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। তাদের মাধ্যমে শ্রমিকদের অভিযোগ শুনে শ্রম অসন্তোষ নিরসন করা হবে। শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে যারা ষড়যন্ত্র করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এদিকে শ্রম সংক্রান্ত সব ধরনের অভিযোগ জানাতে ১৬৩৫৭ নম্বরে কল দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। টোল ফ্রি এ নম্বরে কল করে শ্রমিকরা অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন।

উপদেষ্টা বলেন, আপাতত শ্রমিকরা যে সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হচ্ছেন এবং তাদের দাবিগুলো যাতে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করতে পারেন, সে লক্ষ্যে একটি কমিটি করা হয়েছে। আরএমজি এবং নন-আরএমজি সেক্টরের শ্রম অসন্তোষ ও বিদ্যমান সমস্যা পর্যালোচনা করে সুপারিশ দেওয়ার জন্য শ্রমসংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে শ্রম অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক এবং শ্রম অধিদফতরের ট্রেড ইউনিয়ন ও সালিশির পরিচালককে সদস্য সচিব করে এ কমিটি করা হয়েছে। এতে তিন শ্রমিক নেতা, সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী এবং মালিক পক্ষের দুজন সদস্য আছেন।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক টেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইনবিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, গতকালের তুলনায় বন্ধ কারখানার সংখ্যা বেড়ে অন্তত আট গুণে এসেছে। যার ফলে শ্রমিক অসন্তোষের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে এটা বলা যায়। শিল্পপাড়ায় স্থিতিশীল পরিবেশে ফিরিয়ে আনতে দরকার জরুরি মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা। আলোচনার মাধ্যমে এসব সমস্যা দ্রুত সমাধা করা সম্ভব। এ ছাড়া কারখানা বন্ধ ঘোষণা একটি সাময়িক সমাধান। স্থায়ী সমাধানে আলোচনা জরুরি।

শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম জানান, গতকাল সকালে বেশ কিছু কারখানার শ্রমিকরা কারখানায় প্রবেশ করে কর্মবিরতি পালন করেন। এর ফলে এসব কারখানা কর্তৃপক্ষ বন্ধ ঘোষণা করে। পাশাপাশি শ্রম আইন ১৩ (১) ধারা অনুযায়ী কিছু কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার ২১৯টি কারখানা উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। আর শিল্পাঞ্চলে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারখানাগুলোর সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে শিল্পাঞ্চলে যৌথ বাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে।