১১:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খুরুস্কুলের শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন গ্রেফতার, দুই ডজন মালার আসামির চাঞ্চল্যকর তথ্য 

Oplus_131072

খুরুশকুলের শীর্ষ সন্ত্রাসী ২৬ মামলার আসামী মামুন বাহিনীর প্রধান মামুনুর রশিদ মামুনকে গ্রেফতার করেছে সদর মডেল থানার পুলিশ। রবিবার রাত ৮টার দিকে খুরুশকুলের কাউয়ার পাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করার সত্যতা নিশ্চিত করেন সদর মডেল থানার ওসি ফয়েজুল আজিম।
গ্রেফতার মামুনুর রশিদ মামুন (২৭) খুরুশকুলের কাউয়ার পাড়ার মৃত নুরুল আলম বহদ্দারের পুত্র। সে খুরুস্কুলের শীর্ষ সন্ত্রাসী  এবং মামুন বাহিনীর প্রধান বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
আগেও অস্ত্রসহ র‍্যাবের হাতে ও ডিবির হাতে আটক হয়েছিল মামুন। কিন্তু জামিনে বের হয়ে প্রকাশ্যে নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছিলো।
তার বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরন, পাহাড় কাটা, নারী নির্যাতন, পুলিশ এসল্ট, ছিনতাই, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপরাধে ২৬টি মামলা রয়েছে।
স্থানিয়রা জানান, পাঁচ সন্ত্রাসী ভাই  এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে আসছে। তাদের রয়েছে বিপুল অস্ত্রের ভান্ডার। সন্ত্রাসী চক্রের প্রধান মামুনের রয়েছে কয়েকটি কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারী চক্র। এ চক্রটি খুরুস্কুলের কাউয়ার পাড়া থেকে চৌফলদন্ডী ব্রিজ পর্যন্ত এলাকায় প্রতিদিন ছিনতাই, ডাকাতি করে আসছে। এলাকায় জমি ক্রয়-বিক্রয়, নতুন বাড়িঘর নির্মাণ করলে মামুন বাহিনীকে দিতে হয় মোটা অংকের চাঁদা। অন্যথায় তার নিয়ন্ত্রিত কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারী চক্র দিয়ে নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালানো হয়।
স্থানিয়রা আরও জানান, তারা ৫ সন্ত্রাসী ভাইদের রয়েছে ৬টি অবৈধ ডাম্পার গাড়ি। এসব ডাম্পার গাড়ি দিয়ে তেতৈয়া এলাকার পাহাড় নিধন করে মাটি বিক্রি ও ছরা থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে আসছে বেপরোয়াভাবে। বনবিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তর বহুবার অভিযান চালিয়ে অর্ধ ডজন মামলা দিয়েও তাদের পাহাড় কাটা ও বালি উত্তোলন বন্ধ করতে পারেনি।
স্থানীয়রা জানান, তাদের রয়েছে ২টি ফিশিং ট্রলার। এ ট্রলার দিয়ে সাগরে মাছ ধরার আড়ালে জলদস্যুতা ও ইয়াবা পাচারেও জড়িত এ সন্ত্রাসী বাহিনী। খুরুশকুলের বঙ্গবন্ধু বাজার থেকে রাস্তারপাড়া পর্যন্ত এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছে এ সন্ত্রাসী মামুন বাহিনীর লোকজন। অনেকটা প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী মামুন ও তার বাহিনীর সদস্যরা বেপরোয়াভাবে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালালেও  ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়না। এ বাহিনীর অত্যাচারে অনেকে বিদেশে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে, আবার অনেকে এলাকা ছেড়ে কক্সবাজার শহরে বসবাস করতে বাধ্য হয়েছে।
প্রশাসনের দেয়া তথ্যমতে, ২০২২ সালের ১৭ মে নিজ বাড়ি থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও দা-ছুরাসহ র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়  মামুন। এর পুর্বে ২০২১ সালের ৩১ মে রাতে ডিবি পুলিশের অভিযানে আটক হয়  মামুন ও তার ভাই কায়সার। ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আগ্নেয়াস্ত্রসহ সদর মডেল থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় কায়সার। আরেক ভাই পারভেজ ২০১৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর অস্ত্রসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। মামুনের আরেক ভাই রাশেদ ২০২০ সালে ১০ হাজার ইয়াবা সহ চট্টগ্রামে আটক হয়ে কারাভোগ করে জামিনে বের হয়। একইভাবে বিভিন্ন সময় পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠালে খুরুশকুলের মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে অসে। কিন্তু জামিনে ফিরে এসে এলাকায় আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠে।
সদর মডেল থানার ওসি ফয়েজুল আজিম সন্ত্রাসী মামুনুর রশিদ মামুনকে গ্রেফতার করার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তার বিরুদ্ধে কয়টি মামলা রয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জনপ্রিয় সংবাদ

নায়ক রিয়াজের মৃত্যুসংবাদ ফেসবুকে, যা জানাল পরিবার

খুরুস্কুলের শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন গ্রেফতার, দুই ডজন মালার আসামির চাঞ্চল্যকর তথ্য 

আপডেট সময় : ১২:৩৯:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ অক্টোবর ২০২৪
খুরুশকুলের শীর্ষ সন্ত্রাসী ২৬ মামলার আসামী মামুন বাহিনীর প্রধান মামুনুর রশিদ মামুনকে গ্রেফতার করেছে সদর মডেল থানার পুলিশ। রবিবার রাত ৮টার দিকে খুরুশকুলের কাউয়ার পাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করার সত্যতা নিশ্চিত করেন সদর মডেল থানার ওসি ফয়েজুল আজিম।
গ্রেফতার মামুনুর রশিদ মামুন (২৭) খুরুশকুলের কাউয়ার পাড়ার মৃত নুরুল আলম বহদ্দারের পুত্র। সে খুরুস্কুলের শীর্ষ সন্ত্রাসী  এবং মামুন বাহিনীর প্রধান বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
আগেও অস্ত্রসহ র‍্যাবের হাতে ও ডিবির হাতে আটক হয়েছিল মামুন। কিন্তু জামিনে বের হয়ে প্রকাশ্যে নানা অপকর্ম চালিয়ে আসছিলো।
তার বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরন, পাহাড় কাটা, নারী নির্যাতন, পুলিশ এসল্ট, ছিনতাই, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপরাধে ২৬টি মামলা রয়েছে।
স্থানিয়রা জানান, পাঁচ সন্ত্রাসী ভাই  এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব চালিয়ে আসছে। তাদের রয়েছে বিপুল অস্ত্রের ভান্ডার। সন্ত্রাসী চক্রের প্রধান মামুনের রয়েছে কয়েকটি কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারী চক্র। এ চক্রটি খুরুস্কুলের কাউয়ার পাড়া থেকে চৌফলদন্ডী ব্রিজ পর্যন্ত এলাকায় প্রতিদিন ছিনতাই, ডাকাতি করে আসছে। এলাকায় জমি ক্রয়-বিক্রয়, নতুন বাড়িঘর নির্মাণ করলে মামুন বাহিনীকে দিতে হয় মোটা অংকের চাঁদা। অন্যথায় তার নিয়ন্ত্রিত কিশোর গ্যাং ও ছিনতাইকারী চক্র দিয়ে নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন চালানো হয়।
স্থানিয়রা আরও জানান, তারা ৫ সন্ত্রাসী ভাইদের রয়েছে ৬টি অবৈধ ডাম্পার গাড়ি। এসব ডাম্পার গাড়ি দিয়ে তেতৈয়া এলাকার পাহাড় নিধন করে মাটি বিক্রি ও ছরা থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে আসছে বেপরোয়াভাবে। বনবিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তর বহুবার অভিযান চালিয়ে অর্ধ ডজন মামলা দিয়েও তাদের পাহাড় কাটা ও বালি উত্তোলন বন্ধ করতে পারেনি।
স্থানীয়রা জানান, তাদের রয়েছে ২টি ফিশিং ট্রলার। এ ট্রলার দিয়ে সাগরে মাছ ধরার আড়ালে জলদস্যুতা ও ইয়াবা পাচারেও জড়িত এ সন্ত্রাসী বাহিনী। খুরুশকুলের বঙ্গবন্ধু বাজার থেকে রাস্তারপাড়া পর্যন্ত এলাকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছে এ সন্ত্রাসী মামুন বাহিনীর লোকজন। অনেকটা প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী মামুন ও তার বাহিনীর সদস্যরা বেপরোয়াভাবে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালালেও  ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়না। এ বাহিনীর অত্যাচারে অনেকে বিদেশে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে, আবার অনেকে এলাকা ছেড়ে কক্সবাজার শহরে বসবাস করতে বাধ্য হয়েছে।
প্রশাসনের দেয়া তথ্যমতে, ২০২২ সালের ১৭ মে নিজ বাড়ি থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, গুলি ও দা-ছুরাসহ র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হয়  মামুন। এর পুর্বে ২০২১ সালের ৩১ মে রাতে ডিবি পুলিশের অভিযানে আটক হয়  মামুন ও তার ভাই কায়সার। ২০১৯ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আগ্নেয়াস্ত্রসহ সদর মডেল থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় কায়সার। আরেক ভাই পারভেজ ২০১৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর অস্ত্রসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। মামুনের আরেক ভাই রাশেদ ২০২০ সালে ১০ হাজার ইয়াবা সহ চট্টগ্রামে আটক হয়ে কারাভোগ করে জামিনে বের হয়। একইভাবে বিভিন্ন সময় পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠালে খুরুশকুলের মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে অসে। কিন্তু জামিনে ফিরে এসে এলাকায় আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠে।
সদর মডেল থানার ওসি ফয়েজুল আজিম সন্ত্রাসী মামুনুর রশিদ মামুনকে গ্রেফতার করার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তার বিরুদ্ধে কয়টি মামলা রয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।