০২:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ছুটির দিনে ঘুরে আসুন...

কক্সবাজার শহরের ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ মন্দির 

কক্সবাজার শহরে অবস্থিত ঐতিহাসিক রাখাইন বৌদ্ধ মন্দির। বৌদ্ধ ধর্মালম্বি রাখাইন সম্প্রদায়ের ইতিহাস ঐতিহ্য এক অনন্য রূপ। আড়াই হাজার বছরে পুরাতন এই ধর্মের ইতিহাস ও ঐতিহাসিক নিদর্শন। সংরক্ষিত আছে অগ্গমেধা (ক্যাং) বৌদ্ধ মন্দিরে তালপাতার উপর হাতের লেখা আড়াই হাজার বছরের পুরাতন ত্রিপিটক ও বৌদ্ধ মূর্তি। মাহাসিংদোগি বিহারে রয়েছে মিষ্টার হিরাম কক্সের বৌদ্ধ মূর্তি।
১৭৬৮ সালের দিকে মিয়ানমার (বার্মা) থেকে আগত বৌদ্ধ ভিক্ষু অগ্গামেজুই বৌদ্ধ ধর্মদেশনা দিতে একটি মন্দির প্রতিষ্টা করেন। তার নাম অনুসারে অগ্গমেধা বৌদ্ধ মন্দির। বিশাল বিশাল বার্মা থেকে আনা গাছের বাহারি রূপে নির্মান করা এই মন্দির এখনো কালে সাক্ষী হয়ে আছে।
১৭৯৯ সালের দিকে ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স, কক্সবাজার শহর গড়ে তুলতে গিয়ে সুবিশাল একটি কাঁঠাল গাছের গুঁড়ি দিয়ে নিজ খরচে বৌদ্ধ মূতি বানিয়ে দান করেন । অগ্গমেধা বৌদ্ধ মন্দিরের পেছনে আরো একটি মন্দির স্থাপন করেন চিংঘর ( সিমা বিহার)  যেখানে আরো আধুনিক স্থাপত্যে পর্যাপ্ত বৌদ্ধ মূর্তি আসনে রাখেন। এখনো সেই হারাম কক্সের মূর্তি নামে পরিচিত। দিন দিন বৌদ্ধ ধর্মের পরিধি বিস্তার করে কক্সবাজারে। পাহাড় সমতল মিলে প্রায় দশ একর জায়গার উপর গড়ে উঠে একের পর এক বৌদ্ধ মন্দির। কক্সবাজার শহরে রাখাইনরাই গড়ে তুলে ১০ টি বৌদ্ধ মন্দির।
অগ্গমেধা বৌদ্ধ মন্দির মূল মন্দিরে পেছনের অংশে গড়ে উঠা চিংঘর ( সিমাবিহার) মাহাসিংদোগ্রী ১৯৭৫ সালে প্রথম সংস্কার ও আধুনিক স্থাপত্যে নির্মিত হয়। তার পাশে একই মাঠে রয়েছে জয়সুখা ক্যাং, উমাছালা বৌদ্ধ বিহার, রাখাইন নারী ব্যবসায়ীরা প্রতিষ্টা করেন নবগ্রহ মন্দির। পশ্চিমে রয়েছে ১৮০৩ সালে প্রতিষ্টিত চেন্দামেজু বৌদ্ধ মন্দির। গোলদিঘির পূর্ব দক্ষিণে এস এ ক্যাং উত্তরে জাদিরাং পাহাড় ক্যাং। এর পশ্চিমে রয়েছে আইভিপি মাঠ হয়ে পিটিকেট বৌদ্ধ মন্দির। মোহাজের পাড়ায় রয়েছে মেনাজুং ক্যাং বাহার ছড়া বৌদ্ধ মন্দির নামে পরিচিত। তাছাড়াও কক্সবাজারে বড়ুয়া বৌদ্ধের রয়েছে আরো ৬টি বৌদ্ধ মন্দির।
পর্যটকদের মূল আর্ষন কক্সবাজার কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ মন্দির নামে পরিচিত অগ্গমেধা বৌদ্ধ মন্দির ও মাহাসিংদোগ্রী মন্দির এখানে শহরে যে কোন জায়গা থেকে, রিকশা, টমটম সিএনজি অটো নিয়ে আসা যায়। পাশে বার্মিজ মার্কেট হওয়ায় দর্শনার্থী পর্যটকদের জন্য এক সঙ্গে দুটোই পরিদর্শন ও কেনা কাটার সুযোগ থাকে।
এক সময় প্রচুর দেশি বিদেশি পর্যটকের সমাগম থাকতো চোখে পড়ার মতো৷ সারাদিন দর্শনার্থীদের জন্য উম্মুক্ত ছিলো।
মাহাসিংদোগ্রী মন্দির পরিচালনা কমিটি সাধারণ সম্পাদক ডা: মায়েনু বলেন, এখন নিরাপত্তা ও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের খাবার টাইম মেইনটেইন করতে গিয়ে দর্শনার্থীদের জন্য পরিদর্শনের সময় নির্ধারন করা হয়েছে। সকাল ৬ টা থেকে সকাল ১১ টা এবং বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পযন্ত।
অগ্গমেধা বৌদ্ধ মন্দিরের অর্থ সম্পাদক মংহ্লামে রাখাইন বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য আমরা সদায় সজাগ থাকি। আমরাও চাই আগের মতো পর্যটক সমাগম হোক। ইদানীং রামুতে নতুন করে বৌদ্ধ মন্দির নির্মান ও পর্যটক আর্ষন করে এমন স্থাপনা তৈরি করতে সরকার সহায়তা করায় দৃষ্টি নন্দন মন্দির দেখতে চলে যায়। আমরাও আশা করছি সরকার আমাদে মন্দির উন্নয়নে এগিয়ে আসুক। দর্শনার্থীরা অল্প সময়ে রাখাইন জাতী গোষ্ঠীর ইতিহাস ঐতিহ্য জানার দেখার সুযোগ হবে।
জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে সামান্তা শারমিনের নতুন বার্তা

ছুটির দিনে ঘুরে আসুন...

কক্সবাজার শহরের ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ মন্দির 

আপডেট সময় : ০৫:০২:১৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪
কক্সবাজার শহরে অবস্থিত ঐতিহাসিক রাখাইন বৌদ্ধ মন্দির। বৌদ্ধ ধর্মালম্বি রাখাইন সম্প্রদায়ের ইতিহাস ঐতিহ্য এক অনন্য রূপ। আড়াই হাজার বছরে পুরাতন এই ধর্মের ইতিহাস ও ঐতিহাসিক নিদর্শন। সংরক্ষিত আছে অগ্গমেধা (ক্যাং) বৌদ্ধ মন্দিরে তালপাতার উপর হাতের লেখা আড়াই হাজার বছরের পুরাতন ত্রিপিটক ও বৌদ্ধ মূর্তি। মাহাসিংদোগি বিহারে রয়েছে মিষ্টার হিরাম কক্সের বৌদ্ধ মূর্তি।
১৭৬৮ সালের দিকে মিয়ানমার (বার্মা) থেকে আগত বৌদ্ধ ভিক্ষু অগ্গামেজুই বৌদ্ধ ধর্মদেশনা দিতে একটি মন্দির প্রতিষ্টা করেন। তার নাম অনুসারে অগ্গমেধা বৌদ্ধ মন্দির। বিশাল বিশাল বার্মা থেকে আনা গাছের বাহারি রূপে নির্মান করা এই মন্দির এখনো কালে সাক্ষী হয়ে আছে।
১৭৯৯ সালের দিকে ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স, কক্সবাজার শহর গড়ে তুলতে গিয়ে সুবিশাল একটি কাঁঠাল গাছের গুঁড়ি দিয়ে নিজ খরচে বৌদ্ধ মূতি বানিয়ে দান করেন । অগ্গমেধা বৌদ্ধ মন্দিরের পেছনে আরো একটি মন্দির স্থাপন করেন চিংঘর ( সিমা বিহার)  যেখানে আরো আধুনিক স্থাপত্যে পর্যাপ্ত বৌদ্ধ মূর্তি আসনে রাখেন। এখনো সেই হারাম কক্সের মূর্তি নামে পরিচিত। দিন দিন বৌদ্ধ ধর্মের পরিধি বিস্তার করে কক্সবাজারে। পাহাড় সমতল মিলে প্রায় দশ একর জায়গার উপর গড়ে উঠে একের পর এক বৌদ্ধ মন্দির। কক্সবাজার শহরে রাখাইনরাই গড়ে তুলে ১০ টি বৌদ্ধ মন্দির।
অগ্গমেধা বৌদ্ধ মন্দির মূল মন্দিরে পেছনের অংশে গড়ে উঠা চিংঘর ( সিমাবিহার) মাহাসিংদোগ্রী ১৯৭৫ সালে প্রথম সংস্কার ও আধুনিক স্থাপত্যে নির্মিত হয়। তার পাশে একই মাঠে রয়েছে জয়সুখা ক্যাং, উমাছালা বৌদ্ধ বিহার, রাখাইন নারী ব্যবসায়ীরা প্রতিষ্টা করেন নবগ্রহ মন্দির। পশ্চিমে রয়েছে ১৮০৩ সালে প্রতিষ্টিত চেন্দামেজু বৌদ্ধ মন্দির। গোলদিঘির পূর্ব দক্ষিণে এস এ ক্যাং উত্তরে জাদিরাং পাহাড় ক্যাং। এর পশ্চিমে রয়েছে আইভিপি মাঠ হয়ে পিটিকেট বৌদ্ধ মন্দির। মোহাজের পাড়ায় রয়েছে মেনাজুং ক্যাং বাহার ছড়া বৌদ্ধ মন্দির নামে পরিচিত। তাছাড়াও কক্সবাজারে বড়ুয়া বৌদ্ধের রয়েছে আরো ৬টি বৌদ্ধ মন্দির।
পর্যটকদের মূল আর্ষন কক্সবাজার কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ মন্দির নামে পরিচিত অগ্গমেধা বৌদ্ধ মন্দির ও মাহাসিংদোগ্রী মন্দির এখানে শহরে যে কোন জায়গা থেকে, রিকশা, টমটম সিএনজি অটো নিয়ে আসা যায়। পাশে বার্মিজ মার্কেট হওয়ায় দর্শনার্থী পর্যটকদের জন্য এক সঙ্গে দুটোই পরিদর্শন ও কেনা কাটার সুযোগ থাকে।
এক সময় প্রচুর দেশি বিদেশি পর্যটকের সমাগম থাকতো চোখে পড়ার মতো৷ সারাদিন দর্শনার্থীদের জন্য উম্মুক্ত ছিলো।
মাহাসিংদোগ্রী মন্দির পরিচালনা কমিটি সাধারণ সম্পাদক ডা: মায়েনু বলেন, এখন নিরাপত্তা ও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের খাবার টাইম মেইনটেইন করতে গিয়ে দর্শনার্থীদের জন্য পরিদর্শনের সময় নির্ধারন করা হয়েছে। সকাল ৬ টা থেকে সকাল ১১ টা এবং বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পযন্ত।
অগ্গমেধা বৌদ্ধ মন্দিরের অর্থ সম্পাদক মংহ্লামে রাখাইন বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য আমরা সদায় সজাগ থাকি। আমরাও চাই আগের মতো পর্যটক সমাগম হোক। ইদানীং রামুতে নতুন করে বৌদ্ধ মন্দির নির্মান ও পর্যটক আর্ষন করে এমন স্থাপনা তৈরি করতে সরকার সহায়তা করায় দৃষ্টি নন্দন মন্দির দেখতে চলে যায়। আমরাও আশা করছি সরকার আমাদে মন্দির উন্নয়নে এগিয়ে আসুক। দর্শনার্থীরা অল্প সময়ে রাখাইন জাতী গোষ্ঠীর ইতিহাস ঐতিহ্য জানার দেখার সুযোগ হবে।