জামালপুরে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে নার্স ও আয়াদের হাতে ডেলিভারির সময় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকাল ৪টায় শহরের দয়াময়ী মোড়ের নকিব উদ্দিন হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, সকাল ১১টার দিকে জামালপুর পৌর শহরের তিরুথা এলাকার মারুফ হোসেনের স্ত্রী রূম্পা মনি মিম (২৪) প্রসব বেদনা নিয়ে নকিব উদ্দিন হাসপাতালে ভর্তি হন।
সেখানে কর্তব্যরত নার্সরা জরুরি সেবা দিতে থাকেন। আনুমানিক দুপুর ১২ টায় মীমকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ওই সময় হাসপাতালটিতে কোন চিকিৎসক ছিলো না। তাই হাসপাতালের নার্স ও অদক্ষ আয়ারা ডেলিভারি করান। এ সময় নবজাতককে টেনে-হিঁচড়ে বের করায় তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ স্বজনদের।
নবজাতকের স্বজনরা জানান, হাসপাতলে আনার কিছুক্ষণ পরেই রোগীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে রাখা হয়। আমরা রোগীর বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন রোগী সুস্থ আছে। পরবর্তীতে বিকাল চারটায় একটা কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছে বলে জানানো হয় কিন্তু সেখানে কাউকে যেতে দেওয়া হয় না। কিছুক্ষণ পরে জানানো হয় বাচ্চা মারা গেছে।
নবজাতকের আরেক স্বজন হীরা জানায়,
আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বার বার বলেছি যদি কোন সমস্যা থাকে আপনারা সিজার করান। কোন ডাক্তার না থাকার কারণে তারা সিজার করায়নি, এটাও বলেননি যে রোগীকে আপনারা অন্য কোন হাসপাতালে নিয়ে যান। তারা বলেছেন রোগী সুস্থ আছে বাচ্চা নরমাল ডেলিভারিতে হবে। প্রায় চার ঘন্টা অপারেশন থিয়েটারের ভিতরে আমাদের কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয় নাই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই বাচ্চাটি মারা গেছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
হাসপাতালের পরিচালক ও এনেস্থেসিয়া বিভাগের চিকিৎসক শামসুজ্জামান বলেন, প্রসব ব্যথা নিয়ে হাসপাতলে ভর্তি হয়েছিল। চিকিৎসক হিসেবে আমি উপস্থিত ছিলাম। সিজার করানোর কথা বলা হলে তারা জানায় নরমাল ডেলিভারিতে চেষ্টা করার জন্য। যার কারণে মৃত বাচ্চা প্রসব হয়েছে।
এ ঘটনায় নবজাতকের পিতা মো. মারুফ হোসেন রাত ১১টায় বাদী হয়ে প্রাইভেট হাসপাতালটির মালিক ডা. শামসুজ্জামান সেলিম (৬০) ও নার্স রুকসানা (৩৫) সহ অজ্ঞাত আরো ৩ থেকে ৪ জনের বিরুদ্ধে জামালপুর সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এ বিষয়ে, জামালপুর সদর থানার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, আমরা মৃত নবজাতকের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্ত শেষে রিপোর্ট অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


























