জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রদল একটি বৃহৎ ছাত্র সংগঠন। এখানে নেতৃত্বে আসতে ত্যাগ ও শ্রমের মূল্যায়ন করা হয়। নবগঠিত কমিটি ঘোষণার ৩৪ দিন পর ক্যাম্পাসে প্রবেশের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে। এসময় এক মতবিনিময় সভায় নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, কমিটি ঘোষণার পর থেকেই কর্মসূচি ও সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার প্রস্তুতি নেওয়া হলেও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কারণে তাদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে বিলম্বিত হয়।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) নবগঠিত কমিটির নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে সমবেত হন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঁঠালতলায় মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন। এসময় শাখা ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল ও সদস্য সচিব সামসুল আরেফিনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সদ্য সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা।
মতবিনিময় সভায় তারা ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ছাত্রদলের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।
এর আগে, গত ২৪ ডিসেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। নবগঠিত কমিটির ক্যাম্পাসে এতদিন প্রবেশ করতে বিলম্বের অন্যতম বড় কারণ ছিল পদবঞ্চিতদের একাংশের প্রতিবাদ। কমিটি ঘোষণার পর পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের একটি অংশ এই কমিটির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং বিভিন্ন সময় আন্দোলন করে। তারা কমিটিতে নিজেদের যথাযথ মূল্যায়ন না পাওয়ার অভিযোগ তোলেন।
তবে নবগঠিত কমিটির নেতারা জানান, তারা ইতোমধ্যে পদবঞ্চিতদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন এবং তাদের অভিমান নিরসনের জন্য কাজ করছেন। অচিরেই সংগঠনের ঐক্য আরও দৃঢ় হবে বলে তারা আশাবাদী।
এসময় সদ্য সাবেক কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, ছাত্রদল একটি সুশৃঙ্খল ছাত্রসংগঠন। ছাত্রদল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ঐতিহ্য ও আদর্শে বিশ্বাসী। আমি বিশ্বাস করি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নব গঠিত আহ্বায়ক কমিটি একটি মেধা, মননশীল, শিক্ষার্থী বান্ধব, সুশৃংখল ও হেলমেটমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে সক্ষম হবে। আমরা জবি উপাচার্য বরাবর যে ২১ দফা দিয়েছি সেটা বাস্তবায়নে তারা বিচক্ষণতার সাথে কাজ করবে। আমি প্রত্যাশা করছি, দীর্ঘদিন যারা আমাদের সাথে বিভিন্ন আন্দোলনে আমাদের সাথে যুক্ত ছিল, যারা আমাদের পরীক্ষিত সহযোদ্ধা তাদের বর্ধিত কমিটিতে যুক্ত করবেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনের আঁতুড়ঘর।
সদ্য সাবেক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির ক্যাম্পাসে আগমনে সংগ্রামী সহযোদ্ধা সবাইকে জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময়ই দেশের ক্রান্তিকালে জনগণের পাশে থেকেছে। আমি নবগঠিত কমিটির উদ্দেশ্যে বলতে চাই, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল যেন সবসময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকে এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আদর্শ সমুন্নত রাখে।
নবগঠিত কমিটির আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, নেতৃত্বে প্রতিযোগিতা থাকবে, এটি স্বাভাবিক। কেন্দ্রীয় ছাত্রদল গত কমিটির দুইশো ছিয়াশি জনের মধ্যে সাতাশ জনের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে। এখানে যারা বাদ পড়েছেন, তাদের অভিমান স্বাভাবিক। আমি তাদের এই অভিমানকে স্বাগত জানাই।
তিনি আরও বলেন, আমরা ইতোমধ্যে সিনিয়রদের সঙ্গে একাধিকবার বসেছি। যারা বাদ পড়েছেন, তাদের ক্ষোভ নিরসনে কাজ করছি। ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করাই আমাদের অঙ্গীকার।
নবগঠিত কমিটির সদস্য সচিব সামসুল আরেফিন বলেন, ছাত্রদল সুদৃঢ়ভাবে ৩১ দফার আলোকে নতুন বাংলাদেশ গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে৷ দেশ ও ইতিহাসের দায়কে মাথায় নিয়ে সামনে এগিয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।
মতবিনিময় সভায় আরও ছিলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ সভাপতি কাজি জিয়া উদ্দিন বাসেত, শাখা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি ইব্রাহিম কবির মিঠু। এছাড়া আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক জাফর আহমেদ, মোঃ শাহরিয়ার হোসেন, মোঃ মাহমুদুল হাসান খান মাহমুদ, কাজী রফিকুল ইসলাম, নাহিয়ান বিন অনিক, জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, মেহেদি হাসান রুদ্র, মো মোজাম্মেল মামুন ডেনি, হাসিবুল ইসলাম হাসিব এবং কমিটির সদস্য রিয়াসাল রাকিব, মুবাইদুর রহমান, এম তানভির রহমান, মাহিদ খান, ইমরান হাসান ইমনসহ শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।


























