১০:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
দুদিন পর অ্যাকশনে যাবে প্রশাসন

মেয়র-ডিসির নির্ধারিত দামে সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে না কোথাও

 

 

‘ঘটা’ করে আমদানিকারক, মিলমালিক, পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে চট্টগ্রামে খোলা সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল মঙ্গলবার। খুচরা পর্যায়ে লিটার প্রতি ১৬০ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। বৈঠকের পর থেকেই নির্ধারিত দাম কার্যকর হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু বাজারে এর কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন। এদিকে, খোলা সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরদিনই বাজারে দেখা মিলছে বোতলজাত তেলের।ব্যবসায়ীরা বলছেন, হুট করে দাম কমিয়ে নির্ধারণ করে দিলেই সেই দামে বিক্রি সম্ভব না। এখন যা তেল রয়েছে তা আগের আনা। সেগুলো অনেক বেশি দামে কিনতে হয়েছে। তাই এখন নির্ধারিত দামে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। আগের আনা তেলগুলো শেষ হতে হবে। পাশাপাশি নতুন তেল ডেলিভারির সময় যদি কম দামে পাওয়া যায় তাহলে আমরাও সেভাবে বিক্রি করতে পারবো।বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রামের বৃহত্তর পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ-চাক্তাইসহ নগরের বেশ কয়েক জায়গায় ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা আগের বেশি দামেই খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন। আগের মতো খোলা সয়াবিন তেল খুচরায় ১৯৫ টাকায় (কেজি), আর পাইকারিতে ১৯০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ নতুন নির্ধারিত দামে খুচরায় প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রির কথা ১৬০ টাকায়, যা কেজিতে ১৭৪ থেকে ১৭৫ টাকা। আর পাইকারিতে লিটার প্রতি ১৫৫ টাকায়, যা কেজিতে ১৫৮ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা ছিল।তবে নতুন নির্ধারিত দামে কোনো দোকানেই তেল বিক্রি হচ্ছে না। আবার অনেক ব্যবসায়ী নতুন করে খোলা সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণের বিষয়ে জানেনও না। এর আগে, মঙ্গলবার (৪ মার্চ) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ভোজ্যতেল আমদানিকারক, মিলমালিক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে দাম নির্ধারণ করে দেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এবং জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমদানিকারকেরা ১৫৩ টাকায় প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল সরবরাহ করবেন। আর পাইকারিতে ১৫৫ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৬০ টাকায় বিক্রি কেরতে হবে। খোলা তেলের নির্ধারিত নতুন এ দাম পুরো রমজান মাসসহ আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।গলির কয়েকটি দোকানে নির্ধারিত দামে খোলা সয়াবিন তেল কিনতে না পেরে চাক্তাইয়ে আসেন বাকলিয়া রাজাখালী এলাকার বাসিন্দা শহীদুল আলম। সেখানেও গিয়েও তিনি দেখতে পান আগের বাড়তি দামেই এখনো সয়াবিন তেল বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘গতকাল টিভিতে দেখলাম চট্টগ্রামে খোলা সয়াবিন তেলের দাম কমেছে। একইসঙ্গে দামও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। মনে করেছি গতকাল বিকেলে না পেলেও আজ সকাল থেকে পাব। তবে গলির দোকানের পাশাপাশি চাক্তাইয়ে এসেও কম দামে তেল নিতে পারিনি।’শুধু শহীদুল আলমই নন; তাঁর মতো অনেকেই ১৬০ টাকা দামে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রির খবর শুনে বাজারে গিয়েছেন। তারা কেউই সেই দামে তেল না পাওয়া অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।লুৎফর রহমানে নামে একজন বলেন, ‘দাম নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে প্রভাব নেই। আর এটা আদৌ সম্ভব হবে কিনা জানা নেই। তবে দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পাশাপাশি প্রশাসন থেকে বাজার মনিটরিং করাটা জরুরি। আর সেটা এক বা দু’দিন নয়। টানা অভিযান চালাতে হবে।’খাতুনগঞ্জের মেসার্স মক্কা স্টোরের স্বত্তাধিকারী তৌফিকুল আলম  বলেন, ‘খুচরা পর্যায়ে আমরা খোলা সয়াবিন তেল কেজি প্রতি ১৮৭ থেকে ১৯০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি করছি। আর পাইকারিতে ১৮২ থেকে ১৮৩ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে।’নতুন দাম নির্ধারণের বিষয়টি জানিয়ে এখনো আগের দাম বিক্রি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সকল পর্যায়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা যেই রেটে তেল এনেছিলাম সেই রেট দিয়ে তো নতুন দামে বিক্রি করা সম্ভব না। আগের তেল শেষ হওয়ার পর নতুন আনা তেল যদি কম দামে নিতে পারি, তাহলে আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারবো।’একদিন আগে সভা ডেকে খোলা সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরদিনই বাজারে দেখা মিলছে বোতলজাত তেলের। বুধবার নগরের খাতুনগঞ্জ-চাক্তাইসহ বেশ কয়েকটি বাজারে দেখা গেছে, সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেল। এদিকে, নতুন দামে নির্ধারণ করার পরদিনই বাজার পরিদর্শনে গিয়ে খোদ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র শাহাদাত হোসেনও বোতলজাত তেলের হদিস পেয়েছেন। বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে নগরের কাজির দেউড়ি বাজারে পরিদর্শনে যান মেয়র শাহাদাত। দোকানে তেল আছে কিনা এবং তেলের মূল্য তদারকি করেন। এ সময় বোতলজাত তেল চোখে পড়েছে মেয়রের।চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘মঙ্গলবার পর্যন্ত আমরা চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজারে দেখতে পেয়েছিলাম, বোতলজাত সয়াবিন গায়েব ছিল। কোথায় যেন উধাও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আজ (বুধবার) থেকে দোকানে আমরা বোতলজাত সয়াবিন তেল দেখতে পাচ্ছি। আমি আশাবাদী, কাল থেকে আরও বেশি সয়াবিন তেলের বোতল পাওয়া যাবে।’তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের একটি টিম খাতুনগঞ্জে গেছে। সেখানে ব্যবসায়ীরা ১৫৫ টাকায় খুচরা বিক্রেতাদের তেল বিক্রি করছে কি না, সেটা মনিটরিং করছে। নির্ধারিত এ তেলের দাম যতক্ষণ পুরো চট্টগ্রামে ১০০ শতাংশ কার্যকর না হবে ততদিন আমাদের অভিযান চলবে। আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট প্রতিদিন বাজার মনিটরিং করবে। যারা নির্দেশনা মানবে না তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’এখনো অনেক জায়গায় ব্যবসায়ীরা খোলা সয়াবিন তেলের নতুন দামের বিষয়ে জানেন না। তাই তারা এখনো আগের দামেই সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।তিনি বলেন, ‘মাত্রই তো নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আজকেও বাজার মনিটরিংয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় এখনো বেশি দামেই বিক্রি করা হচ্ছে। আগামীকাল পর্যন্ত দেখবো। শুক্রবার থেকে নতুন দামে তেল বিক্রি না করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’এর আগে, গত ৩ মার্চ বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকটে দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে যান সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন ও জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। পরিদর্শনে গিয়ে ‘ভোজ্যতেল উধাও’র সত্যতা পেয়ে তেলের উৎপাদনকারী, আমদানিকারক ও আড়তদার ব্যবসায়ীদের বৈঠকে ডাকেন তারা দুজন। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ওই বৈঠকে সবার মতামতের ভিত্তিতে আমদানিকারক থেকে খুচরা পর্যায় পর্যন্ত খোলা তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমদানিকারকরা ১৫৩ টাকা, ট্রেডার্সে ১৫৫ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৬০ টাকা প্রতিলিটার খোলা তেল বিক্রি করবে। যা আজ (মঙ্গলবার) থেকে কার্যকর হবে। আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। যেকোনো পর্যায়ে কেউ যদি নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশিতে বিক্রি করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে বিশেষ টাস্কফোর্স কমিটি।

জনপ্রিয় সংবাদ

দুদিন পর অ্যাকশনে যাবে প্রশাসন

মেয়র-ডিসির নির্ধারিত দামে সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে না কোথাও

আপডেট সময় : ০৮:১৪:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫

 

 

‘ঘটা’ করে আমদানিকারক, মিলমালিক, পাইকারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে চট্টগ্রামে খোলা সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল মঙ্গলবার। খুচরা পর্যায়ে লিটার প্রতি ১৬০ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। বৈঠকের পর থেকেই নির্ধারিত দাম কার্যকর হবে বলেও সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু বাজারে এর কোনো প্রভাব দেখা যায়নি। নির্ধারিত দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে সয়াবিন। এদিকে, খোলা সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরদিনই বাজারে দেখা মিলছে বোতলজাত তেলের।ব্যবসায়ীরা বলছেন, হুট করে দাম কমিয়ে নির্ধারণ করে দিলেই সেই দামে বিক্রি সম্ভব না। এখন যা তেল রয়েছে তা আগের আনা। সেগুলো অনেক বেশি দামে কিনতে হয়েছে। তাই এখন নির্ধারিত দামে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। আগের আনা তেলগুলো শেষ হতে হবে। পাশাপাশি নতুন তেল ডেলিভারির সময় যদি কম দামে পাওয়া যায় তাহলে আমরাও সেভাবে বিক্রি করতে পারবো।বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রামের বৃহত্তর পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ-চাক্তাইসহ নগরের বেশ কয়েক জায়গায় ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা আগের বেশি দামেই খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন। আগের মতো খোলা সয়াবিন তেল খুচরায় ১৯৫ টাকায় (কেজি), আর পাইকারিতে ১৯০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ নতুন নির্ধারিত দামে খুচরায় প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রির কথা ১৬০ টাকায়, যা কেজিতে ১৭৪ থেকে ১৭৫ টাকা। আর পাইকারিতে লিটার প্রতি ১৫৫ টাকায়, যা কেজিতে ১৫৮ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা ছিল।তবে নতুন নির্ধারিত দামে কোনো দোকানেই তেল বিক্রি হচ্ছে না। আবার অনেক ব্যবসায়ী নতুন করে খোলা সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণের বিষয়ে জানেনও না। এর আগে, মঙ্গলবার (৪ মার্চ) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ভোজ্যতেল আমদানিকারক, মিলমালিক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে দাম নির্ধারণ করে দেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এবং জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমদানিকারকেরা ১৫৩ টাকায় প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল সরবরাহ করবেন। আর পাইকারিতে ১৫৫ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৬০ টাকায় বিক্রি কেরতে হবে। খোলা তেলের নির্ধারিত নতুন এ দাম পুরো রমজান মাসসহ আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।গলির কয়েকটি দোকানে নির্ধারিত দামে খোলা সয়াবিন তেল কিনতে না পেরে চাক্তাইয়ে আসেন বাকলিয়া রাজাখালী এলাকার বাসিন্দা শহীদুল আলম। সেখানেও গিয়েও তিনি দেখতে পান আগের বাড়তি দামেই এখনো সয়াবিন তেল বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘গতকাল টিভিতে দেখলাম চট্টগ্রামে খোলা সয়াবিন তেলের দাম কমেছে। একইসঙ্গে দামও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। মনে করেছি গতকাল বিকেলে না পেলেও আজ সকাল থেকে পাব। তবে গলির দোকানের পাশাপাশি চাক্তাইয়ে এসেও কম দামে তেল নিতে পারিনি।’শুধু শহীদুল আলমই নন; তাঁর মতো অনেকেই ১৬০ টাকা দামে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রির খবর শুনে বাজারে গিয়েছেন। তারা কেউই সেই দামে তেল না পাওয়া অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।লুৎফর রহমানে নামে একজন বলেন, ‘দাম নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে প্রভাব নেই। আর এটা আদৌ সম্ভব হবে কিনা জানা নেই। তবে দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পাশাপাশি প্রশাসন থেকে বাজার মনিটরিং করাটা জরুরি। আর সেটা এক বা দু’দিন নয়। টানা অভিযান চালাতে হবে।’খাতুনগঞ্জের মেসার্স মক্কা স্টোরের স্বত্তাধিকারী তৌফিকুল আলম  বলেন, ‘খুচরা পর্যায়ে আমরা খোলা সয়াবিন তেল কেজি প্রতি ১৮৭ থেকে ১৯০ টাকায় পর্যন্ত বিক্রি করছি। আর পাইকারিতে ১৮২ থেকে ১৮৩ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে।’নতুন দাম নির্ধারণের বিষয়টি জানিয়ে এখনো আগের দাম বিক্রি হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সকল পর্যায়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু আমরা যেই রেটে তেল এনেছিলাম সেই রেট দিয়ে তো নতুন দামে বিক্রি করা সম্ভব না। আগের তেল শেষ হওয়ার পর নতুন আনা তেল যদি কম দামে নিতে পারি, তাহলে আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারবো।’একদিন আগে সভা ডেকে খোলা সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরদিনই বাজারে দেখা মিলছে বোতলজাত তেলের। বুধবার নগরের খাতুনগঞ্জ-চাক্তাইসহ বেশ কয়েকটি বাজারে দেখা গেছে, সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বোতলজাত সয়াবিন তেল। এদিকে, নতুন দামে নির্ধারণ করার পরদিনই বাজার পরিদর্শনে গিয়ে খোদ চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র শাহাদাত হোসেনও বোতলজাত তেলের হদিস পেয়েছেন। বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে নগরের কাজির দেউড়ি বাজারে পরিদর্শনে যান মেয়র শাহাদাত। দোকানে তেল আছে কিনা এবং তেলের মূল্য তদারকি করেন। এ সময় বোতলজাত তেল চোখে পড়েছে মেয়রের।চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘মঙ্গলবার পর্যন্ত আমরা চট্টগ্রামের বিভিন্ন বাজারে দেখতে পেয়েছিলাম, বোতলজাত সয়াবিন গায়েব ছিল। কোথায় যেন উধাও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আজ (বুধবার) থেকে দোকানে আমরা বোতলজাত সয়াবিন তেল দেখতে পাচ্ছি। আমি আশাবাদী, কাল থেকে আরও বেশি সয়াবিন তেলের বোতল পাওয়া যাবে।’তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের একটি টিম খাতুনগঞ্জে গেছে। সেখানে ব্যবসায়ীরা ১৫৫ টাকায় খুচরা বিক্রেতাদের তেল বিক্রি করছে কি না, সেটা মনিটরিং করছে। নির্ধারিত এ তেলের দাম যতক্ষণ পুরো চট্টগ্রামে ১০০ শতাংশ কার্যকর না হবে ততদিন আমাদের অভিযান চলবে। আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট প্রতিদিন বাজার মনিটরিং করবে। যারা নির্দেশনা মানবে না তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’এখনো অনেক জায়গায় ব্যবসায়ীরা খোলা সয়াবিন তেলের নতুন দামের বিষয়ে জানেন না। তাই তারা এখনো আগের দামেই সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।তিনি বলেন, ‘মাত্রই তো নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। আজকেও বাজার মনিটরিংয়ে অভিযান চালানো হয়েছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় এখনো বেশি দামেই বিক্রি করা হচ্ছে। আগামীকাল পর্যন্ত দেখবো। শুক্রবার থেকে নতুন দামে তেল বিক্রি না করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’এর আগে, গত ৩ মার্চ বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকটে দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে যান সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন ও জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম। পরিদর্শনে গিয়ে ‘ভোজ্যতেল উধাও’র সত্যতা পেয়ে তেলের উৎপাদনকারী, আমদানিকারক ও আড়তদার ব্যবসায়ীদের বৈঠকে ডাকেন তারা দুজন। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ওই বৈঠকে সবার মতামতের ভিত্তিতে আমদানিকারক থেকে খুচরা পর্যায় পর্যন্ত খোলা তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আমদানিকারকরা ১৫৩ টাকা, ট্রেডার্সে ১৫৫ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ১৬০ টাকা প্রতিলিটার খোলা তেল বিক্রি করবে। যা আজ (মঙ্গলবার) থেকে কার্যকর হবে। আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। যেকোনো পর্যায়ে কেউ যদি নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশিতে বিক্রি করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে বিশেষ টাস্কফোর্স কমিটি।