পর্যটন নগরী কক্সবাজার জেলা শহরে প্রায় ১৮ লক্ষ মানুষের বাস তার উপর যুক্ত হয়ে আছে আরো ১৩ লাখের মতো রোহিঙ্গা সব মিলিয়ে জনবহুল সুপরিচিত এ শহরে নেই কোন সরকারি ডায়ালাইসিস সেন্টার।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সহসায় কক্সবাজারের একমাত্র ২৫০ শর্য্যা জেলা সদর হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার চালুর দাবিতে মতবিনিময় সবায় বক্তারা বলেন, জেলায় একমাত্র সরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানটিতে সাধারণ রোগের চিকিৎসা মিললেও ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামে ছুটতে হয় কিডনি রোগীদের। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি বাড়তি খরচের বোঝা বইতে হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে হাসপাতালে নেফ্রোলজি ও ডায়ালাইসিস ইউনিট স্থাপনের উদ্যোগ নিলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। অচিরেই ডায়ালাইসিস সেন্টার চালু করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
২৬ এপ্রিল, শনিবার, বিকেল ৪টায় কক্সবাজার পৌরসভা সম্মেলন কক্ষে, কক্সবাজার জেলার সকল স্বেচ্ছাসেবক ও সচেতন নাগরিক বৃন্দ’র ব্যানারে কক্সবাজারে সরকারিভাবে কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার চালুর দাবিতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জাকির হোসেন এর সভাপতিত্বে ও কামরুল হাসান এবং মোহাম্মদ রিযাজে সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, এডভোকেট শামিম আরা স্বপ্না, সাধারণ সম্পাদক, কক্সবাজার জেলা বিএনপি, আলহাজ্ব রফিকুল হুদা চৌধুরী, সভাপতি, কক্সবাজার পৌর বিএনপি, এডভোকেট সৈয়দ আলম, সভাপতি কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতি, তৌহিদ বেলাল সভাপতি কক্সবাজার জেলা প্রেসক্লাব, আকিল বিন আলো, সংগঠক বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, হাফেজ রমজান আলী প্রিন্সিপাল, সাওতুল কুরমান ইন্টাঃ বিখখ মাদ্রাসা, আবুল কাশেম সাধারণ সম্পাদক-পৌর বিএনপি, জাহাঙ্গীর আলম সহকারি পরিচালক-কোস্ট ট্রাস্ট, খালিদ বিন সাইদ সংগঠক এনসিপি কক্সবাজার জেলা, জগদীশ বড়ুয়া পার্থ চেয়ারম্যান মঙ্গল পার্টি প্রমূখ।
কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামিম আরা স্বপ্না বলেন, আজকের এই মতবিনিময় সভা থেকে বলতে চাই আমরা আগামী সপ্তাহের মধ্যে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের সাথে মতবিনিময় ও স্মারক লিপি দিয়ে অন্তরবর্তি সরকারের কাছে দাবি জানাবো। তা যদি না হয় কক্সবাজার আপামর জনতাকে সাথে নিয়ে বৃহত্তর গণ আন্দোলন গড়ে তুলবো।
কিডনি রোগির স্বজন সালামত উল্লাহ বলেন, কক্সবাজারে একটি প্রাইভেট হসপিটালে ৫ শয্যার ডায়ালাইসিস সেন্টার চালু থাকলেও যেটা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল ও. খুবই ব্যয়বহুল। এখানে একবার ডায়ালাইসিস করতে ৪০০০ ৪৫০০ টাকা খরচ হয়। যেখানে সরকারি ডায়ালাইসিস সেন্টারের খরচ ৫০০-৮০০ টাকা। একজন কিডনি বিকল রোগীর সপ্তাহে দুই বার ডায়ালাইসিস দরকার হয়। সেক্ষেত্রে সপ্তাহে ২বার ডায়ালাইসিস করতে প্রাইভেট হসপিটালের ডায়ালাইসিস সেন্টারে ৯ হাজার টাকা মত খরচ হয়। যা মাসিক হিসাবে ৩৬,০০০ টাকা। শুধু ডায়ালাইসিসে যদি একজন রোগীকে এক মাসে ৩৬০০০ টাকা দিতে হয় সেখানে তার নিয়মিত মেডিসিনও কিনতে হয়। অর্থাৎ একজন রোগীকে মাসে ৪০-৫০ হাজার টাকা শুধু তার চিকিৎসার জন্য ব্যয় করতে হয়। যেখানে সরকারিভাবে তার খরচ হত মাসে ৮-১০ হাজার টাকা। এই বৈষম্য থেকে আমরা বাঁচতে চাই। কিডনি চিকিৎসা এত ব্যয়বহুল যে ২০-২৫ শতাংশ রোগী চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারে। ৭৫-৮০ শতাংশ রোগী বীনা চিকিৎসায় মৃত্যু বরণ করেন। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১৭ হাজার মানুষ কিডনি রোগে মৃত্যুবরণ করেন। যার মধ্যে বেশীর ভাগই বিনা চিকিৎসায়।
উল্লেখ্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১৮৮১ সালে ২২ শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু করে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল। এরপর বিভিন্ন সময় আরো ৭৮ শয্যা যুক্ত করা হয়। ১৯৯৭ সালে জন হাসপাতালটিকে ১০০ থেকে বাড়িয়ে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। অন্যান্য রোগের চিকিৎসা হলেও হাসপাতালটিতে নেই কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট।























