০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে সালাহউদ্দিন আহমদ যে বার্তা দিলেন

যদি নির্বাচনের দাবিতে কোনদিন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে ঘেরাও করতে হয়, তা হবে জাতির জন্য দুভার্গ্য বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
শনিবার (১৭ মে) বিকেলে খুলনার সার্কিট হাউজ ময়দানে খুলনা ও বরিশাল বিভাগীয় ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, নির্বাচনমুখী যেই সমস্ত জরুরি সংস্কার করা দরকার, সেই সমস্ত জরুরি সংস্কার (আমরা যা পরামর্শ দিয়েছি) বাস্তবায়ন করে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।
আপনি আশস্ত করেছিলেন। আবার আপনি সরে গেলেন। আপনি মনে করছেন, আপনাকে জনগণ অসীম ক্ষমতাসীন বানিয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলসমূহের কোন পরামর্শ আপনার মানার দরকার নাই। যদি তাই মনে করেন; আপনার নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ হবে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু উপদেষ্টা আপনার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করে উচ্চাভিলাস প্রকাশ করছে। তাদের উদ্দেশ্য অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত যেন অনির্বাচিত এই সরকার থাকতে পারে। আপনার কী উদ্দেশ্য অবশ্য আমরা জানি না।
যদি কোনদিন নির্বাচনের দাবিতে এই্ অন্তর্বর্তী সরকারকে ঘেরাও করতে হয়, তা হবে জাতির জন্য দুভার্গ্য।
তিনি আরো বলেন, আপনি কী চান- এই নির্বাচনের জন্য আপনার সাথে আমাদের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হোক। এ দেশের জনগণ সংশয় প্রকাশ করুক। জনগণ যমুনামুখী লংমার্চ করুক। হুঁশিয়ার করে দিতে চাই- প্রফেসর ডক্টর ইউনূস সাহেব! আপনি বিশ্ববরেণ্য। বিচার ও সংস্কারের বাহনা দিয়ে দেশের গণতন্ত্রকে কণ্টকাকীর্ণ করবেন না। যাদের কথায়, যাদের পরামর্শে আপনি বিভ্রান্ত হচ্ছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পরে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সাংবিধানিকভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্তু মনে করবেন না, রোজ কেয়ামত পর্যন্ত আপনাদেরকে আমরা এই জায়গায় দেখতে চাইবো। আপনার সরকার, এখন মানুষ বলছে ‘এনসিপি মার্কা সরকার’। আপনার সরকারে এনসিপির দুইজন প্রতিনিধি বিদ্যমান। তারা উপদেষ্টা, তারা আবার এনসিপির সংগঠন করেন। অফিসিয়ালি করে না। কিন্তু সবাই সবকিছু জানে। ওপেন সিক্রেট! যদি আপনি নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে চান- তাহলে সেই এনসিপি মার্কা দুইজন উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে বলুন। যদি পদত্যাগ না করে আপনি বিদায় করুন।’
সাবেক মন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘একজন বিদেশি নাগরিককে আপনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা করেছেন। আপনার কী সেই আক্কেল-জ্ঞান নাই। একজন বিদেশি নাগরিকের কাছে এই দেশের সেনাবাহিনী নিরাপত্তা সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রদান করবে- কিভাবে ভাবলেন। তিনি মানবিক করিডরের নামে বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করতে চায়। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে আপনি কথা বলেননি। এ দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোন আলাপ-আলোচনা করেননি। অত্যন্ত ‘অ্যারোগেন্টলি’ আপনার সেই উপদেষ্টা বলছে, ‘তাতে নাকি কিছু যায় আসে না’। এই জনসভা থেকে দাবি করছি, সেই জাতীয় উপদেষ্টাকে আপনি বিদায় করুন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হয় নিজে পদত্যাগ করবেন, না হয় আপনি তাকে বিদায় করবেন। এ দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোন জাতীয় দায়িত্ব বিদেশি নাগরিকের কাছে থাকতে পারে না। এই নাগরিক ষড়যন্ত্র করছে, বাংলাদেশ একটি অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য। আমরা তা হতে দেব না।’
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, এই দেশের বন্দর, করিডর সবকিছু নাকি ইউনূস সরকারের অধিকারের মধ্যে পড়ে। বিদেশি আপনি কী কণ্ঠে আর্জি করে এসেছেন জানি না। আপনি অবলীলাক্রমে বাংলাদেশের সমুন্দ্র বন্দর, নদী বন্দর, করিডর সব বিদেশিদের হাতে হস্তান্তর করবেন। কী চুক্তি করে এসেছেন কী এখতিয়ার আছে আপনার কী ম্যান্ডেট নিয়ে এসেছেন! আপানার একমাত্র ম্যান্ডেট- বাংলাদেশ একটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন করা। আমরা বলেছিলাম, যথেষ্ঠ হয়েছে।
এমআর/সব

জনপ্রিয় সংবাদ

সানজিদা তন্বীর বিয়ের খবর জানালেন ফেসবুকে নিজের হৃদয়গ্রাহী পোস্টে

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে সালাহউদ্দিন আহমদ যে বার্তা দিলেন

আপডেট সময় : ০৯:১৬:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫

যদি নির্বাচনের দাবিতে কোনদিন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে ঘেরাও করতে হয়, তা হবে জাতির জন্য দুভার্গ্য বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
শনিবার (১৭ মে) বিকেলে খুলনার সার্কিট হাউজ ময়দানে খুলনা ও বরিশাল বিভাগীয় ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল যৌথভাবে এ সমাবেশের আয়োজন করে।
প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশ্যে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, নির্বাচনমুখী যেই সমস্ত জরুরি সংস্কার করা দরকার, সেই সমস্ত জরুরি সংস্কার (আমরা যা পরামর্শ দিয়েছি) বাস্তবায়ন করে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।
আপনি আশস্ত করেছিলেন। আবার আপনি সরে গেলেন। আপনি মনে করছেন, আপনাকে জনগণ অসীম ক্ষমতাসীন বানিয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দলসমূহের কোন পরামর্শ আপনার মানার দরকার নাই। যদি তাই মনে করেন; আপনার নিরপেক্ষতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ হবে। ইতোমধ্যে কিছু কিছু উপদেষ্টা আপনার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করে উচ্চাভিলাস প্রকাশ করছে। তাদের উদ্দেশ্য অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত যেন অনির্বাচিত এই সরকার থাকতে পারে। আপনার কী উদ্দেশ্য অবশ্য আমরা জানি না।
যদি কোনদিন নির্বাচনের দাবিতে এই্ অন্তর্বর্তী সরকারকে ঘেরাও করতে হয়, তা হবে জাতির জন্য দুভার্গ্য।
তিনি আরো বলেন, আপনি কী চান- এই নির্বাচনের জন্য আপনার সাথে আমাদের দ্বিধা-দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হোক। এ দেশের জনগণ সংশয় প্রকাশ করুক। জনগণ যমুনামুখী লংমার্চ করুক। হুঁশিয়ার করে দিতে চাই- প্রফেসর ডক্টর ইউনূস সাহেব! আপনি বিশ্ববরেণ্য। বিচার ও সংস্কারের বাহনা দিয়ে দেশের গণতন্ত্রকে কণ্টকাকীর্ণ করবেন না। যাদের কথায়, যাদের পরামর্শে আপনি বিভ্রান্ত হচ্ছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানের পরে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সাংবিধানিকভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্তু মনে করবেন না, রোজ কেয়ামত পর্যন্ত আপনাদেরকে আমরা এই জায়গায় দেখতে চাইবো। আপনার সরকার, এখন মানুষ বলছে ‘এনসিপি মার্কা সরকার’। আপনার সরকারে এনসিপির দুইজন প্রতিনিধি বিদ্যমান। তারা উপদেষ্টা, তারা আবার এনসিপির সংগঠন করেন। অফিসিয়ালি করে না। কিন্তু সবাই সবকিছু জানে। ওপেন সিক্রেট! যদি আপনি নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে চান- তাহলে সেই এনসিপি মার্কা দুইজন উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে বলুন। যদি পদত্যাগ না করে আপনি বিদায় করুন।’
সাবেক মন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘একজন বিদেশি নাগরিককে আপনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা করেছেন। আপনার কী সেই আক্কেল-জ্ঞান নাই। একজন বিদেশি নাগরিকের কাছে এই দেশের সেনাবাহিনী নিরাপত্তা সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রদান করবে- কিভাবে ভাবলেন। তিনি মানবিক করিডরের নামে বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করতে চায়। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে আপনি কথা বলেননি। এ দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোন আলাপ-আলোচনা করেননি। অত্যন্ত ‘অ্যারোগেন্টলি’ আপনার সেই উপদেষ্টা বলছে, ‘তাতে নাকি কিছু যায় আসে না’। এই জনসভা থেকে দাবি করছি, সেই জাতীয় উপদেষ্টাকে আপনি বিদায় করুন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হয় নিজে পদত্যাগ করবেন, না হয় আপনি তাকে বিদায় করবেন। এ দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোন জাতীয় দায়িত্ব বিদেশি নাগরিকের কাছে থাকতে পারে না। এই নাগরিক ষড়যন্ত্র করছে, বাংলাদেশ একটি অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য। আমরা তা হতে দেব না।’
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, এই দেশের বন্দর, করিডর সবকিছু নাকি ইউনূস সরকারের অধিকারের মধ্যে পড়ে। বিদেশি আপনি কী কণ্ঠে আর্জি করে এসেছেন জানি না। আপনি অবলীলাক্রমে বাংলাদেশের সমুন্দ্র বন্দর, নদী বন্দর, করিডর সব বিদেশিদের হাতে হস্তান্তর করবেন। কী চুক্তি করে এসেছেন কী এখতিয়ার আছে আপনার কী ম্যান্ডেট নিয়ে এসেছেন! আপানার একমাত্র ম্যান্ডেট- বাংলাদেশ একটি সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন করা। আমরা বলেছিলাম, যথেষ্ঠ হয়েছে।
এমআর/সব