জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন, জেলার নেতৃবৃন্দকে প্রার্থীতার পাশাপাশি ভোটাধিকারের সুযোগ এবং ১৫৮ জন কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের মধ্যে যারা কোন রাজনৈতিক দলে নেই তাদের কে প্রার্থীতা ও ভোটাধিকারের সুযোগ দেওয়ার দাবী জানিয়েছে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কবৃন্দ৷
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের ক্যাফেটেরিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাংগঠনিক অবস্থান, কার্যক্রম, গঠনতন্ত্র প্রণয়ন ও কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবী জানান বিভিন্ন জেলা থেকে আগত সমন্বয়করা।
লিখিত বক্তব্যে সমন্বয়কেরা বলেন, জুলাই আগস্ট গনঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই ব্যানারেই একত্রিত হয়েছিল আপামর ছাত্র-জনতা। এই অন্তর্বর্তী সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে সকল স্তরের ছাত্র জনতার ত্যাগ ও বিসর্জনের ফলাফল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্য আমরা এখন পর্যন্ত দুই হাজার শহীদ ভাই, লক্ষাধিক পঙ্গুত্ববরণকারী ভাই এবং জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি নিতে পারি নাই। অন্যদিকে অস্ত্র হাতে আওয়ামী পেটুয়া পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আজ আইনের ধরাছোঁয়ার বাইরে। গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদী সংগঠন এবং তার নেতাকর্মীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক শেল্টারে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে যা জুলাই ও জুলাই শহীদদের সাথে গাদ্দারী করার শামিল।
ফ্যাসিবাদ পতনের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আজ অভিভাবকহীন এবং সুবিধাবাদী রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কাছে কুক্ষিগত। ফ্যাসিবাদি ব্যবস্থার বিলোপ করতে গিয়েই যে সংগঠন হারালো মেধাবী তরুণ- নিষ্পাপ তাজা প্রাণগুলোকে, সেই সংগঠনই আজ ফ্যাসিবাদী বন্দোবস্তের কাছে ধরাশায়ী হতে চলেছে। এই সংগঠনের বীজ যে সাহসী নির্ভীক তরুন ছাত্র নেতারা বুনেছিলো সেই ছাত্র নেতারা এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং সাংগঠনিক রুপরেখা না দিয়েই এই সংগঠন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। পরবর্তীতে অভিভাবকহীন এই সংগঠনের সুবিধাবাদী- স্বার্থান্বেষী একশ্রেণীর নেতাকর্মীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে অরাজনৈতিক এই ব্যানারকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি অরাজনৈতিক লেজুরবৃত্তিহীন ছাত্র সংগঠন উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনী ব্যবস্থায় রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যক্তিদের প্রভাব কোনো ভাবেই প্রত্যাশিত নয়। আরো লক্ষ্য করা গেছে যে, উক্ত নির্বাচনে যে সকল নেতৃবৃন্দ গণঅভ্যুত্থানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন অর্থাৎ জেলা আহ্বায়ক কমিটি থেকে প্রার্থীতার সুযোগ রাখলেও ভোটাধিকার ব্যবস্থার কোন সুযোগ রাখেনি, যা ঐক্যমতের ভিত্তিতে সাংগঠনিক নেতৃত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে বিতর্কিত ও অগ্রহণযোগ্য। তাছাড়া জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শুরুতে তৎকালীন ১৫৮ জন সমন্বয়ক এর মধ্যে যারা এখনো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে কাজ করে যাচ্ছে তাদেরকেও প্রার্থিতা ও ভোটাধিকার এর সুযোগ রাখেনি।
নেতারা আরো বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যে সকল আপামর ছাত্র জনতা বিশেষ করে সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, আলিয়া মাদ্রাসা, কওমি মাদ্রাসা কারিগরি প্রতিষ্ঠান, মেডিকেল ও নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীসহ যারাই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নিজেকে উৎসর্গ করেছিল তাদের সকলের পরামর্শ ও সহযোগিতা নিয়ে অরাজনৈতিক ও লেজুড়বৃত্তিহীন- ফ্যাসিবাদী বন্দোবস্ত মুক্ত একটি ছাত্র সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি।
এসময় কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে ৩দফা দাবি জানান তারা। দাবি সমূহ হচ্ছে – নির্বাচন কমিশন নতুন করে গঠন করতে হবে, কোন রাজনৈতিক দলের নেতা নির্বাচন কমিশনার হতে পারবে না; জেলার নেতৃবৃন্দকে প্রার্থীতার পাশাপাশি ভোটাধিকারের সুযোগ দিতে হবে এবং কেন্দ্রীয় যেসকল সমন্বয়ক কোন রাজনৈতিক দলে নেই তাদের কে প্রার্থীতা ও ভোটাধিকারের সুযোগ দিতে হবে।
এমআর/সব
শিরোনাম
৩ দাবীতে ইবিতে খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কদের সংবাদ সম্মেলন
-
ইবি প্রতিনিধি - আপডেট সময় : ০৭:৪৩:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫
- ।
- 119
জনপ্রিয় সংবাদ


























