আজ ৩৮তম জন্মদিন লিওনেল মেসির। এই দিনে আর্জেন্টাইন ফুটবল জাদুকর ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে গ্রপ পর্বের ম্যাচে খেলতে নেমেছিলেন। প্রতিপক্ষ ব্রাজিলের পালমেইরাস। এ-গ্রুপের এই ম্যাচে জিতলে বা ড্র করলেই রাউন্ড অব ১৬ তে নাম লেখাতো মায়ামি। অবশেষে লিখিয়েছেও তাই। তবে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি তারা। বরং জেতা ম্যাচ ড্র করেছে তারা। এতে করে মেসির জন্মদিনের আনন্দটা পানসে হয়ে গেছে!
অথচ একপর্যায়ে ম্যাচের ৭৯ মিনিট পর্যন্ত মায়ামি ২-০ গোলে এগিয়েছিল! আর্জেন্টিনার তাদেও আলেন্দে ১৬ মিনিটে এবং উরুগুয়ের লুইস সুয়ারেজ ৬৫ মিনিটে গোল করেন।
গোল শোধে মরিয়া ব্রাজিলিয়ান ক্লাব পালমেইরাস মায়ামির ওপর শেষের ১০ মিনিটে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করে এবং দুটি গোলই শোধ করে উল্টো মায়ামিকেই চাপে ফেলে দেয়। পাওলিনহো ৮০ মিনিটে এবং মরিসিও ৮৭ মিনিটে গোলগুলো করেন।
শুরু থেকেই মায়ামির ডিফেন্স ছিল ভঙ্গুর ও নড়বড়ে। অনেক ভুল করেছে তারা। যার খেসারত দিতে হয়েছে জোড়া গোল হজম করে। এমনকি ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে আরেকটি গোল হজম করে হারতে বসেছিল তারা! তবে আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক অস্কার উসতারির অসাধারণ প্রচেষ্টায় কোনক্রমে বেঁচে যায় মায়ামি। ম্যাচসেরা হন সুয়ারেজ।
ম্যাচে মেসি বিপক্ষের গোলপোস্টে জোরালোি একটি শট নেয়া ছাড়া বলতে গেলে পুরো ম্যাচে নিষ্প্রভই ছিলেন। এমনকি ফাউল করে হলুদ কার্ডও দেখত হয়েছে তাকে! কোন এ্যাসিস্টও করতে পারেননি দলের দুই গোলে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই জন্মদিনটা খুব একটা সুখকর হয়নি তার জন্য।
এই ড্রয়ে এ-গ্রুপ থেকে শীর্ষ দল হিসেবে শেষ ষোলোয় উঠল পালমেইরাস। ৩ ম্যাচ শেষে পালমেইরাস ও মায়ামির পয়েন্ট সমান ৫। কিন্তু গোল ব্যবধানে মায়ামির (+১) চেয়ে এগিয়ে পালমেইরাস (+২)।

এই গ্রুপের অন্য ম্যাচটি ছিল অসাধারণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। যাতে পর্তুগালের এফসি পোর্তো মোকাবিলা করে মিশরের আল আহলির। রোমাঞ্চকর এই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ড্র হয়েছে ৪–৪ গোলে! আল আহলির আবু আলী অনবদ্য হ্যাটট্রিক করেন। তবে ২ পয়েন্ট নিয়ে দুই দলকেই গ্রুপ পর্ব শেষেই বিদায় নিতে হচ্ছে। শেষ ষোলোয় মেসির সাবেক ক্লাব পিএসজির মুখোমুখি হবে ইন্টার মায়ামি। পালমেইরাস মুখোমুখি হবে স্বদেশি ক্লাব বোতাফোগোর।
ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে খেলা নিজের ৩৩টি টুর্নামেন্টের কোনোটিতেই কখনো গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়েননি মেসি। আজকের ম্যাচের পর তার এই অসাধারণ ক্যারিয়ার-রেকর্ড শতভাগ অক্ষুন্ন রইলো। এমন রেকর্ড আর কারোরই নেই।
বিশ্বকাপ, কোপা আমেরিকা, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, অলিম্পিক, অনুর্ধ-২০ বিশ্বকাপ—সবখানেই মেসি নিজ দলকে গ্রুপ পর্ব পার করে নকআউট পর্ব পর্যন্ত নিয়ে গেছেন (সবমিলিয়ে ৩৩টি ভিন্ন গ্রপ পর্বে)। আজও তাই হয়েছে।
এদিকে নিজের সাবেক ক্লাব পিএসজির মুখোমুখি হতে হবে মেসিকে, যা বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। সম্প্রতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছে ফরাসি এই ক্লাবটি। মেসি এই ক্লাবে ২০২১-২০২৩ সাল পর্যন্ত খেলেন ৭৫ ম্যাচ, করেন ৩২ গোল। জেতেন দুটি শিরোপা (লিগ ওয়ান এবং ট্রফি দেস চ্যাম্পিয়ন্স)। কিন্তু দুই মৌসুম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলে একবারও অন্ততঃ ফাইনালে উঠতে পারেননি। মেসির পিএসজি অধ্যায় শেষ হয় বেশ তিক্তভাবেই। ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে আর্জেন্টিনা শিরোপা জেতায় এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পিএসজির হয়ে কিছু করতে না পারায় তাদের সমর্থকদের চক্ষুশূলে পরিণত হন মেসি।
আরকে/সবা

























