০৭:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নাম গোপন করে যুক্তরাজ্যে ফ্ল্যাট কিনেছেন নেতানিয়াহুর ছেলে

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ছেলে আভনার নেতানিয়াহু

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ছেলে আভনার নেতানিয়াহু ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যে ছদ্মনাম ব্যবহার করে গোপনে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। মিডল ইস্ট মনিটর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহুর ছেলে ছদ্মনাম ব্যবহার করে ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেন।
বুধবার (২ জুলাই) ইসরায়েলের অর্থনীতি ও বাণিজ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম কালকালিস্ত জানায়, অক্সফোর্ড শহরে ৫ লাখ ২ হাজার ৫০০ পাউন্ড (৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার) মূল্যের অ্যাপার্টমেন্টটি আভনার কিনেছিলেন ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে। ওই সময় তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের ঘোষিত একটি বাজেট প্রস্তাব পাউন্ডের মান ধসিয়ে দেয়।
সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, অ্যাপার্টমেন্টটির জন্য আভনার ১৯ লাখ ৮০ হাজার শেকেল (ইসরায়েলি মুদ্রা) পরিশোধ করেন। বিদেশে সম্পদ কেনাকাটার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের কর কর্তৃপক্ষকে বাধ্যতামূলকভাবে জানাতে হয় এমন ২০ লাখ শেকেল সীমার নিচে এটি।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

কালকালিস্ত বলছে, লিজ ট্রাসের বাজেট ঘোষণার ঠিক ১০ দিন আগে বা পরে যদি অ্যাপার্টমেন্টটি কেনা হতো, তাহলে সেটির মূল্য ২০ লাখ শেকেল ছাড়িয়ে যেত এবং তা ইসরায়েলি কর কর্তৃপক্ষকে জানানো বাধ্যতামূলক হতো।
যুক্তরাজ্যের ভূমি রেজিস্ট্রির তথ্য উদ্ধৃত করে পত্রিকাটি জানায়, ‘আভি আভনার সেগাল’ নামে অ্যাপার্টমেন্টটি কেনা হয়। এটি আভনার নেতানিয়াহুর একটি বৈধ ছদ্মনাম। এ নামটি তিনি তার বাবার দিকের এক দাদির পদবি থেকে গ্রহণ করেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য আভনারকে কোনো মর্টগেজ নিতে হয়নি।
ক্রয়–সংক্রান্ত সমালোচনার জবাবে আভনার কালকালিস্তকে বলেন, নাম পরিবর্তনটি আইনি প্রক্রিয়াতেই হয়েছে এবং তা ইসরায়েলের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধিত।
‘আমি প্রথমে আমার পরিচয়পত্রে নাম পরিবর্তন করি, এরপর পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্সেও পরিবর্তন করি। সব মিলিয়ে এটি একটি পুরো প্যাকেজ’, বলেন আভনার। তিনি দাবি করেন, ‘ইসরায়েল ও যুক্তরাজ্যের কর কর্তৃপক্ষের কাছে যা যা জানানো দরকার, সবই জানানো হয়েছে।’
‘আমি যেখানে যেমন নিয়ম, সব কিছু আইনি পথেই করেছি’, বলেন আভনার।
বর্তমানে কৌশলগত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড’-এ (হিসাবরক্ষণ প্রতিষ্ঠান পিডব্লিউসির অংশ) কাজ করছেন আভনার। তিনি বলেন, নিরাপত্তার কারণেই নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন।
যে সময় ওই অ্যাপার্টমেন্ট কেনা হয়, তখন তার বাবা নেতানিয়াহু বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন এবং বিদেশে পড়ালেখার সময় তার (আভনার) জন্য শিন বেতের (ইসরায়েলি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা) নিরাপত্তা চাওয়া হলেও তা মঞ্জুর হয়নি।
আভনার বলেন, ‘তখন আমার সঙ্গে কোনো নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন না।’ তার দাবি, ‘আমি জানতাম, যদি সেই নামটা নিয়ে বিদেশের কোনো দেশে—যেখানে মুসলিমরা আছেন—রেলস্টেশনের মতো স্থানে হেঁটে বেড়াই, তাহলে প্রথমেই কেউ ছুরি মেরে বসবেন।’
এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

নাম গোপন করে যুক্তরাজ্যে ফ্ল্যাট কিনেছেন নেতানিয়াহুর ছেলে

আপডেট সময় : ০৯:২৭:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ছেলে আভনার নেতানিয়াহু ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যে ছদ্মনাম ব্যবহার করে গোপনে একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। মিডল ইস্ট মনিটর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহুর ছেলে ছদ্মনাম ব্যবহার করে ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনেন।
বুধবার (২ জুলাই) ইসরায়েলের অর্থনীতি ও বাণিজ্যবিষয়ক সংবাদমাধ্যম কালকালিস্ত জানায়, অক্সফোর্ড শহরে ৫ লাখ ২ হাজার ৫০০ পাউন্ড (৬ লাখ ৮০ হাজার ডলার) মূল্যের অ্যাপার্টমেন্টটি আভনার কিনেছিলেন ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে। ওই সময় তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের ঘোষিত একটি বাজেট প্রস্তাব পাউন্ডের মান ধসিয়ে দেয়।
সংবাদমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, অ্যাপার্টমেন্টটির জন্য আভনার ১৯ লাখ ৮০ হাজার শেকেল (ইসরায়েলি মুদ্রা) পরিশোধ করেন। বিদেশে সম্পদ কেনাকাটার ক্ষেত্রে ইসরায়েলের কর কর্তৃপক্ষকে বাধ্যতামূলকভাবে জানাতে হয় এমন ২০ লাখ শেকেল সীমার নিচে এটি।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু

কালকালিস্ত বলছে, লিজ ট্রাসের বাজেট ঘোষণার ঠিক ১০ দিন আগে বা পরে যদি অ্যাপার্টমেন্টটি কেনা হতো, তাহলে সেটির মূল্য ২০ লাখ শেকেল ছাড়িয়ে যেত এবং তা ইসরায়েলি কর কর্তৃপক্ষকে জানানো বাধ্যতামূলক হতো।
যুক্তরাজ্যের ভূমি রেজিস্ট্রির তথ্য উদ্ধৃত করে পত্রিকাটি জানায়, ‘আভি আভনার সেগাল’ নামে অ্যাপার্টমেন্টটি কেনা হয়। এটি আভনার নেতানিয়াহুর একটি বৈধ ছদ্মনাম। এ নামটি তিনি তার বাবার দিকের এক দাদির পদবি থেকে গ্রহণ করেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য আভনারকে কোনো মর্টগেজ নিতে হয়নি।
ক্রয়–সংক্রান্ত সমালোচনার জবাবে আভনার কালকালিস্তকে বলেন, নাম পরিবর্তনটি আইনি প্রক্রিয়াতেই হয়েছে এবং তা ইসরায়েলের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধিত।
‘আমি প্রথমে আমার পরিচয়পত্রে নাম পরিবর্তন করি, এরপর পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্সেও পরিবর্তন করি। সব মিলিয়ে এটি একটি পুরো প্যাকেজ’, বলেন আভনার। তিনি দাবি করেন, ‘ইসরায়েল ও যুক্তরাজ্যের কর কর্তৃপক্ষের কাছে যা যা জানানো দরকার, সবই জানানো হয়েছে।’
‘আমি যেখানে যেমন নিয়ম, সব কিছু আইনি পথেই করেছি’, বলেন আভনার।
বর্তমানে কৌশলগত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ‘স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড’-এ (হিসাবরক্ষণ প্রতিষ্ঠান পিডব্লিউসির অংশ) কাজ করছেন আভনার। তিনি বলেন, নিরাপত্তার কারণেই নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেন।
যে সময় ওই অ্যাপার্টমেন্ট কেনা হয়, তখন তার বাবা নেতানিয়াহু বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন এবং বিদেশে পড়ালেখার সময় তার (আভনার) জন্য শিন বেতের (ইসরায়েলি অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা) নিরাপত্তা চাওয়া হলেও তা মঞ্জুর হয়নি।
আভনার বলেন, ‘তখন আমার সঙ্গে কোনো নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন না।’ তার দাবি, ‘আমি জানতাম, যদি সেই নামটা নিয়ে বিদেশের কোনো দেশে—যেখানে মুসলিমরা আছেন—রেলস্টেশনের মতো স্থানে হেঁটে বেড়াই, তাহলে প্রথমেই কেউ ছুরি মেরে বসবেন।’
এমআর/সবা