১০:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সেফ এক্সিট নিয়ে নতুন বিতর্ক, মুখ খুললেন সরকারের উপদেষ্টারা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টাদের শপথ (ফাইল ছবি)

অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা সেফ এক্সিট বা নিরাপদ প্রস্থানের পথ খুঁজছেন—জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দুই নেতার এমন অভিযোগ ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে। এনসিপি নেতাদের বক্তব্যের পর কয়েকজন উপদেষ্টা গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে উপদেষ্টাদের ‘সেফ এক্সিট’ প্রসঙ্গ তোলেন। এরপর উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমও দলের এক সভায় একই বিষয় উল্লেখ করেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, “উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট নিয়ে আমাদের নেতাদের বক্তব্যই দলের সামগ্রিক অবস্থান। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিচার ও সংস্কার গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু কেউ কেউ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়ে এখন দায়িত্ব থেকে পালিয়ে বাঁচতে চান।”

 

তবে নাহিদ ইসলাম বা সারজিস আলম কেউই নির্দিষ্ট কোনো উপদেষ্টার নাম উল্লেখ করেননি।

বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “সব রাজনৈতিক দলের মতো নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও সরকারের ভালো একটা কাজের সম্পর্ক আছে। এটা উনি অভিমান থেকে বলেছেন নাকি কোনো বিষয়ে তাঁর দুঃখবোধ আছে—সেটা তাঁকেই পরিষ্কার করতে হবে। সরকারের বক্তব্য দেওয়ার এখনো সময় হয়নি।”

উপদেষ্টারা সত্যিই এক্সিট খুঁজছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি একদম কোনো এক্সিট খুঁজছি না। এর আগেও অনেক ঝড়ঝঞ্ঝা এসেছে, সেগুলো মোকাবিলা করে দেশেই থেকেছি। বাকিটা জীবনও বাংলাদেশেই কাটাব।”

এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। শিরোনাম দেন—‘উপদেষ্টার রোজনামচা: চালকের হেলমেট নাই, ও সেফ এক্সিট’।

স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, “এই বিষয়টি উত্থাপনকারী, প্রাক্তন উপদেষ্টা ও বর্তমান এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম আমার অত্যন্ত স্নেহভাজন ও জুলাই আন্দোলনের অগ্রসেনা হিসাবে শ্রদ্ধার পাত্র। তাই তাঁর বক্তব্যের ওপর মন্তব্য করা শোভন নয়। আমি রাজনৈতিক বিষয়ে মন্তব্য করি না। যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ পেয়েও গ্রহণ করিনি। আজ ৭২+ বছর বয়সে আমাকে যদি সেফ এক্সিটের কথা ভাবতে হয়, তা হবে গভীর দুঃখের বিষয়।”

অন্যদিকে, মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, “উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিটের দরকার আছে বলে মনে করি না। বিশেষ পরিস্থিতিতে এই সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। উপদেষ্টাদের নিরাপদ প্রস্থানের প্রয়োজন নেই।”

এনসিপি নেতাদের বক্তব্যকে তিনি ‘রাজনৈতিক’ বলে আখ্যা দেন।

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

একনেক সভায় ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন

সেফ এক্সিট নিয়ে নতুন বিতর্ক, মুখ খুললেন সরকারের উপদেষ্টারা

আপডেট সময় : ০৪:৪৭:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা সেফ এক্সিট বা নিরাপদ প্রস্থানের পথ খুঁজছেন—জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দুই নেতার এমন অভিযোগ ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে। এনসিপি নেতাদের বক্তব্যের পর কয়েকজন উপদেষ্টা গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

চলতি সপ্তাহের শুরুতে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে উপদেষ্টাদের ‘সেফ এক্সিট’ প্রসঙ্গ তোলেন। এরপর উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমও দলের এক সভায় একই বিষয় উল্লেখ করেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, “উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিট নিয়ে আমাদের নেতাদের বক্তব্যই দলের সামগ্রিক অবস্থান। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিচার ও সংস্কার গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা। কিন্তু কেউ কেউ দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়ে এখন দায়িত্ব থেকে পালিয়ে বাঁচতে চান।”

 

তবে নাহিদ ইসলাম বা সারজিস আলম কেউই নির্দিষ্ট কোনো উপদেষ্টার নাম উল্লেখ করেননি।

বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “সব রাজনৈতিক দলের মতো নতুন রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও সরকারের ভালো একটা কাজের সম্পর্ক আছে। এটা উনি অভিমান থেকে বলেছেন নাকি কোনো বিষয়ে তাঁর দুঃখবোধ আছে—সেটা তাঁকেই পরিষ্কার করতে হবে। সরকারের বক্তব্য দেওয়ার এখনো সময় হয়নি।”

উপদেষ্টারা সত্যিই এক্সিট খুঁজছেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি একদম কোনো এক্সিট খুঁজছি না। এর আগেও অনেক ঝড়ঝঞ্ঝা এসেছে, সেগুলো মোকাবিলা করে দেশেই থেকেছি। বাকিটা জীবনও বাংলাদেশেই কাটাব।”

এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। শিরোনাম দেন—‘উপদেষ্টার রোজনামচা: চালকের হেলমেট নাই, ও সেফ এক্সিট’।

স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, “এই বিষয়টি উত্থাপনকারী, প্রাক্তন উপদেষ্টা ও বর্তমান এনসিপি নেতা নাহিদ ইসলাম আমার অত্যন্ত স্নেহভাজন ও জুলাই আন্দোলনের অগ্রসেনা হিসাবে শ্রদ্ধার পাত্র। তাই তাঁর বক্তব্যের ওপর মন্তব্য করা শোভন নয়। আমি রাজনৈতিক বিষয়ে মন্তব্য করি না। যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরে স্থায়ী হওয়ার সুযোগ পেয়েও গ্রহণ করিনি। আজ ৭২+ বছর বয়সে আমাকে যদি সেফ এক্সিটের কথা ভাবতে হয়, তা হবে গভীর দুঃখের বিষয়।”

অন্যদিকে, মহিলা ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ বলেন, “উপদেষ্টাদের সেফ এক্সিটের দরকার আছে বলে মনে করি না। বিশেষ পরিস্থিতিতে এই সরকার দায়িত্ব নিয়েছে। উপদেষ্টাদের নিরাপদ প্রস্থানের প্রয়োজন নেই।”

এনসিপি নেতাদের বক্তব্যকে তিনি ‘রাজনৈতিক’ বলে আখ্যা দেন।

এমআর/সবা