আবেগটা খুব বাড়াবাড়ি কাজ করে বিয়ের আগে। আমাদের বাংলাদেশের বাঙালি সমাজে তা আরও বেশি মাত্রায়। একটি পুরুষ, একটি নারী শুধু না; তাদের দুই পরিবারই ইচ্ছে মতো স্বপ্ন আর কল্পনার বিস্তার ঘটায় বিয়ের আগে।
কিন্তু বিয়ের পরে কঠিন বাস্তবতা হানা দেয় আবেগের দরজায়। প্রেম কি, পারিবারিক আয়োজনের বিয়ে; এই দুই ধরনের বিয়ের বেলায় এটা ঘটতে বাধ্য। প্রায় সময়ই প্রত্যাশা আর প্রাপ্যে গড়মিল বেঁধে যায়। অধিকাংশক্ষেত্রে যৌথ পরিবারে সমস্যা প্রকট হয়ে ওঠে। একক পরিবার যে একদম ঝামেলা মুক্ত তাও নয়। বিয়ের আগে অজানা থাকা টুকটাক বিষয়ে ভিন্নমত যেকোনো পরিবারেই দৃশ্যমান হয়।
এই অবস্থা যে দম্পতি সামলে নিয়ে দিনযাপন করে ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করেন তারা সুখী হন। আবার অনেক ক্ষেত্রে তিক্ততা চরমে পৌঁছে। সে অবস্থায় বিবাহিত সম্পর্ক হয় টালমাটাল।
এটা অস্বীকার করার উপায় নেই আমাদের সমাজে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বিবাহ বিচ্ছেদ বেড়েছে বহুগুনে। কখনো বিচ্ছেদ আপসে হয়, কখনো তা গড়ায় আদালত অবধি। বিয়ের আগের আবেগ, স্বপ্ন বিচ্ছেদকালে দ্বন্দ্বমুখর হয়ে ওঠে। নবী করিম (সা.) এর দৃষ্টিতে নিকৃষ্টতম গ্রহণযোগ্য বিষয় হচ্ছে তালাক। যদি তালাকে সম্মত হওয়া যুগলের কোনো সন্তান থাকে তবে এই শিশুর জীবনটা হয় ঘোর অমানিশার।
ভয়াবহ বিবাহ বিচ্ছেদ তাই কারও কাম্য নয়। পরিস্থিতি উত্তরণে একটি স্বাভাবিক ও সহজ সমাধান হতে পারে বিয়ের আগে কাউন্সিলিং। এমন পেশাজীবী বাংলাদেশে এখন অনেকেই আছেন। তাই বিয়ের আগে আগামী দিনের বর ও কনের উপযুক্ত কাউন্সিলিংয়ের ধারণা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। সুন্দর ভবিষ্যতের স্বার্থে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রভাবশালীরা এই বিয়ের আগে এই কাউন্সিলিংয়ের ধারণাকে জনপ্রিয় করতে তাদের অবস্থান থেকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন। কারণ, নিরাময়ের চেয়ে সমস্যা প্রতিরোধী ব্যবস্থা চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতো জীবনের সবক্ষেত্রে প্রয়োগযোগ্য।

























