১০:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যেসব স্বার্থে ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্য সফরে

ঝানু ব্যবসায়ী লোক ট্রাম্প। নিজের স্বার্থের বাইরে বুঝতে চান না তিনি কিছুই। তার “মেইক অ্যামেরিকা গ্রেট এগেইন” স্লোগান সাধারণ মার্কিনীদের জন্য যে নয় তা ইতোমধ্যে উন্মোচিত। শুল্ক যুদ্ধসহ তার প্রতিটি সিদ্ধান্তে লাভবান হচ্ছেন তিনি নিজে ও তার অনুচর ব্যবসায়ীরা। যুক্তরাষ্ট্রে এ মুহূর্তে মূল্যস্ফীতি যেকোনো সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশি। আগাম জরিপ জানাচ্ছে মধ্যবর্তী নির্বাচনে তার নিশ্চিত পরাজয়ের পূর্বাভাস।

এই যখন নিজ দেশে ট্রাম্পের অবস্থা তখন তিনি তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বড় কোনো বিদেশ সফরে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করছেন। চার দিনের এই সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ব্যস্ত সময় কাটাবেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সফরের প্রধান লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বিপুল নতুন বিনিয়োগ নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে উপসাগরীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সার্বভৌম তহবিল থেকে বিনিয়োগ এনে দেশে “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতির সাফল্য তুলে ধরতে ট্রাম্প মরিয়া।

মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় মিত্র ইসরায়েলে যাচ্ছেন না এবার ট্রাম্প। উল্টো তিনি এ সফরে যুগান্তকারী স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ঘোষণা দিতে পারেন।

মঙ্গলবার সৌদি আরবে পৌঁছে ট্রাম্প দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। একই দিন রিয়াদে একটি সৌদি-মার্কিন বিনিয়োগ ফোরামে অংশ নেন তিনি। এ ফোরামে ব্ল্যাকরক, প্যালান্টির, সিটিগ্রুপ, আইবিএম, কোয়ালকম, অ্যালফাবেট ও ফ্র্যাঙ্কলিন টেম্পলটনের মতো কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।

বুধবার তিনি উপসাগরীয় নেতাদের এক সম্মেলনে অংশ নিতে কাতার যাচ্ছেন। সফরের শেষ দিন শুক্রবার তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছাবেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প জানেন মধ্যপ্রাচ্যের অগণিত পেট্রোডলারের সামনে তার অর্থনীতি দাঁড়াতে পারবে না। তাই তিনি এ অঞ্চলের দেশগুলো সঙ্গে নতুন অর্থনৈতিক চুক্তি করতে মনোযোগী। সোজা কথায় তিনি সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের মাধ্যমে মার্কিন অর্থনীতিতে আরব বিনিয়োগ আরও বাড়াতে চান।

ট্রাম্প যেখানেই যান বিতর্ক তার পিছু ছাড়ে না। এবার কাতার সফর নিয়েও গুঞ্জন চলছে ব্যাপক। কাতার সরকারের পক্ষ থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের একটি বোয়িং-৭৪৭ বিমান উপহার দেওয়া হতে পারে। এটি মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্ধারিত বিমান এয়ারফোর্স ওয়ানের পরিবর্তে নতুন বিমান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। এমনটা ঘটলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তা হবে অভূতপূর্ব।

এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর নিয়েও বিতর্ক আছে। কেননা ট্রাম্পের ব্যক্তিগত কোম্পানি সম্প্রতি আবুধাবির বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে একটি নতুন ক্রিপ্টোকারেন্সি চুক্তি করেছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটি তিনি করতে পারেন কিনা এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।

বড় দুর্বিনিত প্রেসিডেন্ট এই ডোনাল্ড ট্রাম্প। কূটনৈতিক রাখঢাক নয়, বরং নিজের মর্জিমাফিক চলাই তার স্বভাব। চলমান মধ্যপ্রাচ্য সফর তার এমন প্রবণতার বাইরে নয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

নায়ক রিয়াজের মৃত্যুসংবাদ ফেসবুকে, যা জানাল পরিবার

যেসব স্বার্থে ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্য সফরে

আপডেট সময় : ০১:৫৮:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

ঝানু ব্যবসায়ী লোক ট্রাম্প। নিজের স্বার্থের বাইরে বুঝতে চান না তিনি কিছুই। তার “মেইক অ্যামেরিকা গ্রেট এগেইন” স্লোগান সাধারণ মার্কিনীদের জন্য যে নয় তা ইতোমধ্যে উন্মোচিত। শুল্ক যুদ্ধসহ তার প্রতিটি সিদ্ধান্তে লাভবান হচ্ছেন তিনি নিজে ও তার অনুচর ব্যবসায়ীরা। যুক্তরাষ্ট্রে এ মুহূর্তে মূল্যস্ফীতি যেকোনো সময়ের চেয়ে সবচেয়ে বেশি। আগাম জরিপ জানাচ্ছে মধ্যবর্তী নির্বাচনে তার নিশ্চিত পরাজয়ের পূর্বাভাস।

এই যখন নিজ দেশে ট্রাম্পের অবস্থা তখন তিনি তার দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম বড় কোনো বিদেশ সফরে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করছেন। চার দিনের এই সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে ব্যস্ত সময় কাটাবেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সফরের প্রধান লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বিপুল নতুন বিনিয়োগ নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে উপসাগরীয় দেশগুলোর রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সার্বভৌম তহবিল থেকে বিনিয়োগ এনে দেশে “আমেরিকা ফার্স্ট” নীতির সাফল্য তুলে ধরতে ট্রাম্প মরিয়া।

মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় মিত্র ইসরায়েলে যাচ্ছেন না এবার ট্রাম্প। উল্টো তিনি এ সফরে যুগান্তকারী স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ঘোষণা দিতে পারেন।

মঙ্গলবার সৌদি আরবে পৌঁছে ট্রাম্প দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। একই দিন রিয়াদে একটি সৌদি-মার্কিন বিনিয়োগ ফোরামে অংশ নেন তিনি। এ ফোরামে ব্ল্যাকরক, প্যালান্টির, সিটিগ্রুপ, আইবিএম, কোয়ালকম, অ্যালফাবেট ও ফ্র্যাঙ্কলিন টেম্পলটনের মতো কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।

বুধবার তিনি উপসাগরীয় নেতাদের এক সম্মেলনে অংশ নিতে কাতার যাচ্ছেন। সফরের শেষ দিন শুক্রবার তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছাবেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প জানেন মধ্যপ্রাচ্যের অগণিত পেট্রোডলারের সামনে তার অর্থনীতি দাঁড়াতে পারবে না। তাই তিনি এ অঞ্চলের দেশগুলো সঙ্গে নতুন অর্থনৈতিক চুক্তি করতে মনোযোগী। সোজা কথায় তিনি সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের মাধ্যমে মার্কিন অর্থনীতিতে আরব বিনিয়োগ আরও বাড়াতে চান।

ট্রাম্প যেখানেই যান বিতর্ক তার পিছু ছাড়ে না। এবার কাতার সফর নিয়েও গুঞ্জন চলছে ব্যাপক। কাতার সরকারের পক্ষ থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের একটি বোয়িং-৭৪৭ বিমান উপহার দেওয়া হতে পারে। এটি মার্কিন প্রেসিডেন্টের নির্ধারিত বিমান এয়ারফোর্স ওয়ানের পরিবর্তে নতুন বিমান হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। এমনটা ঘটলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তা হবে অভূতপূর্ব।

এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর নিয়েও বিতর্ক আছে। কেননা ট্রাম্পের ব্যক্তিগত কোম্পানি সম্প্রতি আবুধাবির বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে একটি নতুন ক্রিপ্টোকারেন্সি চুক্তি করেছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে এটি তিনি করতে পারেন কিনা এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে।

বড় দুর্বিনিত প্রেসিডেন্ট এই ডোনাল্ড ট্রাম্প। কূটনৈতিক রাখঢাক নয়, বরং নিজের মর্জিমাফিক চলাই তার স্বভাব। চলমান মধ্যপ্রাচ্য সফর তার এমন প্রবণতার বাইরে নয়।