ফ্যাসিস্ট হাসিনা বিরোধী লড়াইয়ে সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য দেখা গিয়েছিল। গণঅভ্যুত্থানের ৯ মাস অতিক্রান্ত না হতেই সে ঐক্যে চিড় ধরার বিষয়টি প্রকাশ্যে। এর পেছনে যে দ্রুত গদিতে বসার নির্লজ্জ লোভ তা আর গোপন নেই এতটুকু। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জনে সয়লাব দেশ।
গত বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ইউনূস উপদেষ্টা পরিষদের নিয়মিত বৈঠক শেষে অনির্ধারিত আলোচনায় তার পদত্যাগের ভাবনা জানান। এ সময় তিনি সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে নানা প্রতিবন্ধকতার কথা প্রকাশ করেন। এর মধ্যে আছে প্রায়ই সড়ক আটকে নানা দাবিদাওয়া পূরণের আন্দোলন, সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য, রাষ্ট্রীয় কাজে নানা পক্ষের অসহযোগিতা। ড. ইউনূসের ঘনিষ্ঠজনদের মতে প্রধান উপদেষ্টা নির্দিষ্ট বেশ কিছু কারণে বিরক্ত। এর মধ্যে আছে সেনাবাহিনীর সঙ্গে দূরত্ব ও সেনাপ্রধানের বক্তব্য, নির্বাচন কমিশনের আগ বাড়িয়ে কথা বলা, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তিতে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র পদে বসানোর দাবির আন্দোলন যমুনা পর্যন্ত চলে আসা এবং সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনৈক্য অন্যতম।
সরকার চাপে আছে এটি টের পেয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনের দাবি জোরালো হতে শুরু করে। জুলাই শহিদদের রক্তের দাগ না শুকাতেই গণহত্যাকারীদের বিচারের আগে নির্বাচনের রোডম্যাপ চাওয়া হয়। চাওয়া মাত্রই পাওয়া নিশ্চিতে যে ব্যবস্থায় স্বৈরাচারের উদ্ভব হয় এর সংস্কারের দাবিও ভুলে বসে আছে রাজনৈতিক দলগুলো।
এখন দেখা যাচ্ছে, প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি আলাদা ভাষায় কথা বলছে। একটি গণঅভ্যুত্থান ও আওয়ামী লীগ বিতাড়নেও এলো না ন্যূনতম রাজনৈতিক ঐক্য। এ পরিস্থিতি জনগণের দিক থেকে নিঃসন্দেহে হতাশাজনক। এমন দশায় জনগণের রাজনীতির প্রতি মোহমুক্তি ঘটে। রাজনীতিবিদদের অনৈক্যে মানুষ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে এটা স্পষ্ট। বাংলাদেশের গণতন্ত্র জনগণের সমর্থনহীনতায় এখন সমূহ বিপদের সামনে দাঁড়ানো। কে তাদের বাঁচাবে? সে উত্তর ভবিষ্যতের হাতেই জমা।
এমআর/সব
শিরোনাম
কোথায় গেল জুলাইয়ের ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য?
-
হাসান শাওন - আপডেট সময় : ০৭:০৪:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
- ।
- 222
জনপ্রিয় সংবাদ

























