০৫:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভুট্টা থেকে পরিবেশ বান্ধব পলিব্যাগ তৈরীতে সফল তরুণ উদ্যোক্তা ইফতেখার

  • চাহিদা বাড়ছে স্থানীয় বাজারে
  • রপ্তানী হচ্ছে বিদেশে

পলিথিনের বিকল্প হিসেবে ভুট্টার স্টার্চ থেকে তৈরী হচ্ছে পরিবেশ বান্ধব পলিব্যাগ তৈরীতে সফলতা পেয়েছেন রাজশাহীর তরুণ উদ্যোক্তা ইফতেখারুল
হক। পচনশীল এই পলিব্যাগ তৈরী করে বিদেশে রপ্তানিসহ স্থানীয়ভাবে বাজারজাত শুরু করেছেন। জৈব উপাদানে তৈরী এই পলিব্যাগগুলো সাড়া ফেলতে
শুরু করেছে স্থানীয় বাজারে। রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। সহায়তায় আশ^স্ত করেছেন জেলা প্রশাসন।
তরুণ উদ্যোক্তা ইফতেখারুল হক জানান, ব্যবসার পাশাপাশি দীর্ঘদিন পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ে কাজ করায়-ক্ষতিকর পলিথিনের বিকল্প কী হতে পারে তা
নিয়ে কাজ শুরু করি। খুঁজে পাই জৈব উপাদানের তৈরী কাচামাল ব্যবহারে পলিথিন ব্যাগের বিকল্প পরিবেশবান্ধব ব্যাগ তৈরীর কৌশল। ২০২২ সালের দিকে
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চাপাল এলাকায় গড়ে তোলেন ক্রিস্টাল বায়োটেক নামের-পরিবেশবান্ধন ব্যাগ তৈরীর প্রতিষ্ঠান।
ইফতেখারুল হকের কারখানায় পলিথিনের বিকল্প যে ব্যাগগুলো তৈরী হয়, তার কাঁচামাল তৈরী হয় ভুট্টা থেকে। পলিথিন ব্যাগের চেয়ে বেশি ধারনক্ষমতা
সম্পন্ন ও টেকসই। আর ব্যাগগুলোর কাঁচামাল জৈব পদার্থ হওয়ায় দ্রুত মাটিতে পঁচে মিশে যায় ফলে পরিবেশ দূষণ হওয়ার কোন উপাই নেই।
বিভিন্ন সাইজের প্রতিপিস ব্যাগ সাড়ে ৪ টাকা থেকে শুরু করে ১০ টাকা মূল্যের ব্যাগ তৈরী করা হচ্ছে। স্থানীয় ভাবে রাজশাহীতে প্রাথমিকভাবে
বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে গিয়ে এই পলিথিন সম্পর্কে অবগত করা হচ্ছে। যারা পরিবেশ নিয়ে চিন্তা করেন ও সচেতন তারা সহজেই বিষয়টি
বুঝে এই পণ্য সম্পর্কে পজেটিভ ধারণা নিয়ে ব্যাগ গুলো নিচ্ছে। এই ব্যাগটি ব্যাপক ভাবে বাজার দখল না করতে পারলেও প্রাথমিক ভাবে রাজশাহীতে
প্রায় ১০-১২টি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ করা হচ্ছে।
বড় বাজার ধরতে করণীয় সম্পর্কে উদ্যোক্তা ইফতেখারুল হক বলেন, স্থানীয় বাজারে পরিবেশবান্ধব এই ব্যাগগুলোর চাহিদা বাড়ছে। অতি সূলভ মূল্যে বা
ফ্রিতে জনগণ বাজারে পলেথিন পাচ্ছে। আবার ভোক্তা পর্যায়ের যারা ব্যবসায়ী যেমন- মুদি দোকানদার, সবজি বাজার, মাছের বাজারের ব্যবসায়ী
থেকে শুরু করে সর্বশ্রেণীর ব্যবসায়ীরা যদি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ও আইনে নিষিদ্ধ বাজারে প্রচলিত পলিথিন সম্পর্ক সচেতন হয়ে সেগুলো
পরিহার করে পরিবেশ বান্ধন পলেথিনে নজর দেয় তাহলে বড় বাজার ধরা সম্ভব এবং ভবিষ্যতে এই শিল্পের বিকাশ অনেক বড় হবে। আবার সরকারের পক্ষ থেকে বাজারে নিষিদ্ধ পলিথিনের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং পরিবেশ বান্ধব পলিথিনের প্রচার ও প্রসার ঘটাতে উদ্যোগ গ্রহণ করে তবেই এর বড় বাজার পাওয়া সম্ভব হবে। ফলে অর্থনৈতিক ভাবে এই শিল্পের ব্যাপক বিকাশ হবে। এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকারী সহায়ত চান এই উদ্যোক্তা।
তিনি আরো বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশেও শুরু হয়েছে রপ্তানি। তবে দেশে এর কাঁচামাল তৈরীর ব্যবস্থা না থাকায় তা আমদানি করায় বাড়ছে এর
উৎপাদন ব্যয়।
পরিবেশ বান্ধব এই পলিথিনের বাজারজাত করণ বা প্রচার প্রচারণার জন্য যে পৃষ্টপোষকতা প্রয়োজন সেটা জেলা প্রশাসন করবে বলে জানিয়েছেন।
অফিসিয়াল কাজে যত ধরনের পলিথিন ব্যবহার হচ্ছে সেগুলো পরিহার করে এই পরিবেশ বান্ধব ব্যাগ ব্যবহারের পাশাপাশি এই তরুণ উদ্যোক্তার যে উদ্যোগ রয়েছে এর পৃষ্ঠপোষকতা রাজশাহী জেলা প্রশাসন সহযোগিতা করবে বলে আশস্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তা ইফতেখারুল হক।

জনপ্রিয় সংবাদ

সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস, ভরি ছাড়াল দুই লাখ ২৭ হাজার

ভুট্টা থেকে পরিবেশ বান্ধব পলিব্যাগ তৈরীতে সফল তরুণ উদ্যোক্তা ইফতেখার

আপডেট সময় : ০২:২৫:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ অক্টোবর ২০২৩
  • চাহিদা বাড়ছে স্থানীয় বাজারে
  • রপ্তানী হচ্ছে বিদেশে

পলিথিনের বিকল্প হিসেবে ভুট্টার স্টার্চ থেকে তৈরী হচ্ছে পরিবেশ বান্ধব পলিব্যাগ তৈরীতে সফলতা পেয়েছেন রাজশাহীর তরুণ উদ্যোক্তা ইফতেখারুল
হক। পচনশীল এই পলিব্যাগ তৈরী করে বিদেশে রপ্তানিসহ স্থানীয়ভাবে বাজারজাত শুরু করেছেন। জৈব উপাদানে তৈরী এই পলিব্যাগগুলো সাড়া ফেলতে
শুরু করেছে স্থানীয় বাজারে। রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। সহায়তায় আশ^স্ত করেছেন জেলা প্রশাসন।
তরুণ উদ্যোক্তা ইফতেখারুল হক জানান, ব্যবসার পাশাপাশি দীর্ঘদিন পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ে কাজ করায়-ক্ষতিকর পলিথিনের বিকল্প কী হতে পারে তা
নিয়ে কাজ শুরু করি। খুঁজে পাই জৈব উপাদানের তৈরী কাচামাল ব্যবহারে পলিথিন ব্যাগের বিকল্প পরিবেশবান্ধব ব্যাগ তৈরীর কৌশল। ২০২২ সালের দিকে
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার চাপাল এলাকায় গড়ে তোলেন ক্রিস্টাল বায়োটেক নামের-পরিবেশবান্ধন ব্যাগ তৈরীর প্রতিষ্ঠান।
ইফতেখারুল হকের কারখানায় পলিথিনের বিকল্প যে ব্যাগগুলো তৈরী হয়, তার কাঁচামাল তৈরী হয় ভুট্টা থেকে। পলিথিন ব্যাগের চেয়ে বেশি ধারনক্ষমতা
সম্পন্ন ও টেকসই। আর ব্যাগগুলোর কাঁচামাল জৈব পদার্থ হওয়ায় দ্রুত মাটিতে পঁচে মিশে যায় ফলে পরিবেশ দূষণ হওয়ার কোন উপাই নেই।
বিভিন্ন সাইজের প্রতিপিস ব্যাগ সাড়ে ৪ টাকা থেকে শুরু করে ১০ টাকা মূল্যের ব্যাগ তৈরী করা হচ্ছে। স্থানীয় ভাবে রাজশাহীতে প্রাথমিকভাবে
বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে গিয়ে এই পলিথিন সম্পর্কে অবগত করা হচ্ছে। যারা পরিবেশ নিয়ে চিন্তা করেন ও সচেতন তারা সহজেই বিষয়টি
বুঝে এই পণ্য সম্পর্কে পজেটিভ ধারণা নিয়ে ব্যাগ গুলো নিচ্ছে। এই ব্যাগটি ব্যাপক ভাবে বাজার দখল না করতে পারলেও প্রাথমিক ভাবে রাজশাহীতে
প্রায় ১০-১২টি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহ করা হচ্ছে।
বড় বাজার ধরতে করণীয় সম্পর্কে উদ্যোক্তা ইফতেখারুল হক বলেন, স্থানীয় বাজারে পরিবেশবান্ধব এই ব্যাগগুলোর চাহিদা বাড়ছে। অতি সূলভ মূল্যে বা
ফ্রিতে জনগণ বাজারে পলেথিন পাচ্ছে। আবার ভোক্তা পর্যায়ের যারা ব্যবসায়ী যেমন- মুদি দোকানদার, সবজি বাজার, মাছের বাজারের ব্যবসায়ী
থেকে শুরু করে সর্বশ্রেণীর ব্যবসায়ীরা যদি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ও আইনে নিষিদ্ধ বাজারে প্রচলিত পলিথিন সম্পর্ক সচেতন হয়ে সেগুলো
পরিহার করে পরিবেশ বান্ধন পলেথিনে নজর দেয় তাহলে বড় বাজার ধরা সম্ভব এবং ভবিষ্যতে এই শিল্পের বিকাশ অনেক বড় হবে। আবার সরকারের পক্ষ থেকে বাজারে নিষিদ্ধ পলিথিনের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং পরিবেশ বান্ধব পলিথিনের প্রচার ও প্রসার ঘটাতে উদ্যোগ গ্রহণ করে তবেই এর বড় বাজার পাওয়া সম্ভব হবে। ফলে অর্থনৈতিক ভাবে এই শিল্পের ব্যাপক বিকাশ হবে। এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকারী সহায়ত চান এই উদ্যোক্তা।
তিনি আরো বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশেও শুরু হয়েছে রপ্তানি। তবে দেশে এর কাঁচামাল তৈরীর ব্যবস্থা না থাকায় তা আমদানি করায় বাড়ছে এর
উৎপাদন ব্যয়।
পরিবেশ বান্ধব এই পলিথিনের বাজারজাত করণ বা প্রচার প্রচারণার জন্য যে পৃষ্টপোষকতা প্রয়োজন সেটা জেলা প্রশাসন করবে বলে জানিয়েছেন।
অফিসিয়াল কাজে যত ধরনের পলিথিন ব্যবহার হচ্ছে সেগুলো পরিহার করে এই পরিবেশ বান্ধব ব্যাগ ব্যবহারের পাশাপাশি এই তরুণ উদ্যোক্তার যে উদ্যোগ রয়েছে এর পৃষ্ঠপোষকতা রাজশাহী জেলা প্রশাসন সহযোগিতা করবে বলে আশস্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তা ইফতেখারুল হক।