কাঠমান্ডুসহ নেপালজুড়ে বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়ায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেমেছে সেনাবাহিনী। মৃত্যুর মিছিল, অগ্নিসংযোগ ও ধ্বংসযজ্ঞের ভয়াবহ চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। কেপি শর্মা অলির পদত্যাগের পর আন্দোলন শান্ত করার দায়িত্ব এখন সেনাদের কাঁধে। দেশজুড়ে কারফিউ জারি করে সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মবের নামে লুটপাট, ভাঙচুর কিংবা হামলার ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল গত মঙ্গলবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে আন্দোলনকারীদের সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের কঠিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে। জাতীয় ঐতিহ্য, জনসম্পদ ও কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা রক্ষা করা অপরিহার্য। নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনাও জানান তিনি। গত দুই দিনে বিক্ষোভ ভয়াবহ রূপ নেয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন দ্রুত দুর্নীতি ও সরকারের স্বচ্ছতার অভাবের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে রূপ নেয়। পুলিশের গুলিতে ২০ জন নিহত হলে ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। নিজেদের ‘জেন জেড’ পরিচয়ে তরুণ প্রজন্ম রাজনীতিবিদদের বিলাসী জীবনযাত্রা ও সাধারণ নেপালিদের দুর্দশার বৈষম্য তুলে ধরছেন। এদিকে, সহিংসতায় সরকারি ভবন ও রাজনৈতিক নেতাদের লক্ষ্য করে হামলা হচ্ছে। এরই মধ্যে সেনারা কাঠমান্ডুর বিমানবন্দর, সচিবালয় ভবন সিংহদরবারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কারফিউ চলাকালে কেবল অ্যাম্বুলেন্স ও মরদেহবাহী গাড়ি চলাচলের অনুমতি রয়েছে। সেনাবাহিনী স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, প্রতিবাদের নামে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও হামলা দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। একই সঙ্গে নাগরিক ও সাংবাদিকদের সরকারি তথ্যের ওপরই নির্ভর করতে এবং গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। নেপালে দেশব্যাপী বিক্ষোভের ফলে কেপি শর্মা ওলি সরকার পতনের পর নতুন সরকার না আসা পর্যন্ত শান্তি নিশ্চিত করার দায়িত্ব নিয়েছে নেপাল সেনাবাহিনী। জাতির উদ্দেশে ভাষণে সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগডেল ভাঙচুর, লুটপাট বা ব্যক্তিদের উপর হামলার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাতে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে বিক্ষুব্ধ জাতিকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রতিবাদকারী গোষ্ঠীর প্রতি প্রতিবাদ কর্মসূচি বন্ধ করে জাতির কল্যাণে শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য সংলাপে এগিয়ে আসার আবেদন করছি। আমাদের বর্তমান কঠিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে এবং আমাদের ঐতিহাসিক ও জাতীয় ঐতিহ্য এবং জনসাধারণের পাশাপাশি ব্যক্তিগত সম্পত্তি রক্ষা করতে হবে এবং সাধারণ জনগণ এবং কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এ সময় ৮ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া সহিংসতার সময় প্রাণহানির ঘটনায় তিনি শোক প্রকাশ করেছেন। নেপালের ইতিহাসের শুরু থেকেই, নেপাল সেনাবাহিনী সবসময় এমনকি কঠিন পরিস্থিতিতেও – নেপালের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক অখণ্ডতা, জাতীয় ঐক্য এবং নেপালি জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শিরোনাম
নেপালজুড়ে মব আতঙ্ক
সেনাবাহিনীর কঠোর অবস্থানের হুঁশিয়ারি
-
সবুজ বাংলা ডেস্ক - আপডেট সময় : ০৭:৩৩:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- ।
- 58
জনপ্রিয় সংবাদ

























