দীর্ঘ ৩৫ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচন। আগামী ১৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীদের ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে চাকসু ভবন। ইতোমধ্যে ভবনটির সংস্কারের জন্য প্রায় ৩৫ লাখ টাকার বাজেট বরাদ্দ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় চাকসু ভবন সংস্কারে ৩৪ লাখ ৮২ হাজার ৬৭৭ টাকার বাজেট পাস হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে চবির প্রকৌশল দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল আহাদ জানান, দ্রুততার সঙ্গে এবং স্বচ্ছতা বজায় রেখে সংস্কারকাজ শেষ করা হবে। তিনি আরও জানান, পুরো ভবন রং করা, ইলেকট্রিক, টাইলস, গ্লাস, ও প্লাম্বিংয়ের কাজসহ যাবতীয় সংস্কার এই বাজেটের আওতায় সম্পন্ন হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, চাকসু ভবনের সংস্কারে বড় বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রকৌশল দপ্তরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য। এ কাজ তদারকিতে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে রয়েছেন ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৈয়ব চৌধুরী, চাকসু কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান চৌধুরী, সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক বজলুর রহমান এবং প্রকৌশল দপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমদাদুল হক রিয়াদ।
সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। এরপর থেকে ভবনটি কার্যত পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। ভবনটি এতদিন ‘ভাতের হোটেল’ নামেই অধিক পরিচিত ছিল শিক্ষার্থীদের কাছে। তবে এখন সেই ভবন সংস্কার করে পুনরায় শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বের কেন্দ্রস্থলে রূপান্তরিত করা হচ্ছে, যা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা গেছে।
আরবি সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফ তানজু বলেন, দীর্ঘদিন পর চাকসু ভবন সংস্কারে আমরা অনেক আনন্দিত। ভবনের রঙ ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন দেখেই ভালো লাগছে। তবে আমাদের প্রত্যাশা, শুধু ভবনের সংস্কার নয়—নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া যেন সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয়।
এবারের চাকসু নির্বাচন ঘিরে প্রচারণা শুরু হয়েছে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে। প্রার্থীরা জিরো পয়েন্ট, শহীদ মিনার, কলা ঝুপড়ি, অনুষদ চত্বর, লেডিস ঝুপড়ি ও শাটল ট্রেন স্টেশন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। তারা নিজেদের পরিকল্পনা তুলে ধরছেন, দিচ্ছেন পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি। প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকসু ভবন এখন আর শুধু একটি স্থাপনা নয়, বরং তা হয়ে উঠেছে ছাত্ররাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রতীক।
এমআর/সবা
























