রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) উত্তরের বাতিঘর এই বছর ১৮তম বর্ষে পদার্পণ করতে যাচ্ছে। ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম বর্ষ ছিল নানা অর্জন, বিতর্ক ও সংগ্রামের বছর। বছরজুড়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি নিম্নরূপ:
আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার
৫ জানুয়ারি ২০২৫ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ৭১ জন শিক্ষার্থীকে, যারা শহীদ আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল, বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দুই সেমিস্টারের জন্য ৩৩ জন এবং এক সেমিস্টারের জন্য ২৩ জনকে বহিষ্কার করা হয়।
সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ
২৮ অক্টোবর ২০২৪ সিন্ডিকেট সভায় ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের দলীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। একই সঙ্গে অভিযুক্ত কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সম্মাননা স্মারক প্রত্যাখান
১২ অক্টোবর ২০২৪ ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নাহিদ ইসলাম স্মারক গ্রহণ না করে, শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রতি সমর্থন জানান।
প্রতিষ্ঠাকালীন নাম পুনর্বহালের দাবি
শিক্ষার্থীরা দাবি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পুনরায় ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ রাখা হোক এবং বেগম রোকেয়ার নামে হোলের নাম পরিবর্তন করা হোক।
যৌন হয়রানি ও নম্বর টেম্পারিং
বছরজুড়ে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়ন ও নম্বর টেম্পারিং অভিযোগ ওঠে। শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিল, কুশপুত্তলিতে জুতা মারার কর্মসূচি পালন করেন।

স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্পে ভুল সংশোধন
শহীদ আবু সাঈদ স্মরণে স্থাপিত স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যাম্পে তথ্যগত অসঙ্গতি থাকায় সামাজিক মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার পর এটি সংশোধন করে পুনরায় উন্মুক্ত করা হয়।
প্রশাসনকে প্রতীকি শাড়ি ও চুড়ি প্রদর্শন
২০ জুলাই ২০২৫ শিক্ষার্থীরা প্রশাসনকে শাড়ি ও চুড়ি প্রদর্শন করে নীতিমালা ভঙ্গের প্রতিবাদ জানায়।
ছাত্র সংসদের দাবিতে আমরণ অনশন
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে ১৭ আগস্ট নয় জন শিক্ষার্থী আমরণ অনশন শুরু করেন। তিনদিন পর প্রশাসনের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে অনশন ভাঙানো হয়।
প্রথম সমাবর্তনের তারিখ ঘোষণা ও বিতর্ক
৭ অক্টোবর উপাচার্য ঘোষণা করেন, প্রথম সমাবর্তন ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। তবে প্রধান অতিথি বিষয়ক ঘোষণা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতর্ক ও সমালোচনা সৃষ্টি করেছে।
বছরজুড়ে এসব ঘটনা বেরোবির ইতিহাসে একটি স্মরণীয় অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে—অর্জন, বিতর্ক, আন্দোলন এবং শিক্ষার উত্তরণের সংগ্রামের মিশ্র ছাপ রেখে।
এমআর/সবা

























