চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন উপলক্ষে বুধবার সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রবেশপথ ‘জিরো পয়েন্ট’ এলাকায় দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আয়োজিত এই নির্বাচনকে ঘিরে যেন উৎসবের আবহ নেমে এসেছে পুরো ক্যাম্পাসে।
ভোর থেকেই চট্টগ্রাম শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরত্ব পেরিয়ে শাটল ট্রেন ও দ্রুতযান বাসে করে শিক্ষার্থীরা দলে দলে ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করেন। তাদের অনেকেই ইতিহাসের অংশ হতে চেয়েছেন, কেউ বা দায়িত্বশীল ভোটার হিসেবে যোগ্য প্রার্থীকে বেছে নিতে এসেছেন।
শিক্ষার্থী সাইদুর রহমান এবং রজত ইসলাম ভোরবেলা শহর থেকে ক্যাম্পাসে পৌঁছেছেন শুধুমাত্র ভোট দিতে। এমন উদ্যোগ নিয়েছেন হাজার হাজার শিক্ষার্থী। সবার উপস্থিতিতে মুখর হয়ে উঠেছে জিরো পয়েন্ট, যা এখন পরিণত হয়েছে এক মিলনমেলায়।
জিরো পয়েন্টে বাড়তি নিরাপত্তা ও নিয়ন্ত্রণ
সরেজমিন দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা আইডি কার্ড দেখিয়ে জিরো পয়েন্ট দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে আইডি ব্যতীত কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চবির প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে ২২ হাজার থাকেন ক্যাম্পাসের বাইরে। ফলে সিংহভাগ শিক্ষার্থী জিরো পয়েন্ট দিয়েই ক্যাম্পাসে ঢুকছেন, যা এ জায়গাটিকে ভোটদানে কেন্দ্রীয় প্রবেশপথে পরিণত করেছে।
প্রসঙ্গত, জিরো পয়েন্ট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক এবং পরিবহন চলাচলের কেন্দ্রবিন্দু। চট্টগ্রাম শহরের নিউমার্কেট থেকে দ্রুতযান বাস ও ট্রেন এখানে শিক্ষার্থীদের নামিয়ে দিয়ে আবার শহরের পথে যাত্রা করে। এই স্থানটির গুরুত্ব শুধু পরিবহনের জন্য নয়, এখন তা হয়ে উঠেছে গণতন্ত্রের পথে শিক্ষার্থীদের প্রথম পদক্ষেপের সাক্ষী।
ভোটগ্রহণ শুরু, নিরাপত্তায় চার স্তরের বলয়
সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোট নেওয়া হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনের ১৫টি কেন্দ্রে, যেখানে রয়েছে ৬১টি ভোটকক্ষ। প্রতিটি ভোটকক্ষে সর্বোচ্চ ৫০০ জন করে ভোটার ভোট দিতে পারবেন।
নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিতে প্রতিটি অনুষদ ভবনে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। সিসিটিভির মাধ্যমে সার্বক্ষণিক তদারকি চলছে।
ভোট ঘিরে ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়। নিরাপত্তায় থাকছেন প্রায় ১,২০০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, যার মধ্যে রয়েছে পুলিশ, র্যাব ও আর্মড ব্যাটালিয়ন। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মাঠে থাকবে সেনাবাহিনী।
ইতোমধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে পৌঁছে গেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম। ব্যালট পেপার সকালেই কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
এমআর/সবা


























