নওগাঁর বদলগাছীতে সমতল ভূমিতে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ছাগল ও ঘর নির্মাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। সরকারের “সমন্বিত প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ প্রকল্প” এর আওতায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিবারগুলোকে স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে এ সহায়তা প্রদান করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে বদলগাছী উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ ও হাসপাতাল চত্বরে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ১৫০ জন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মহিলার মাঝে জন প্রতি দুটি করে ছাগল এবং ঘর নির্মাণ সামগ্রী বিতরণ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান ছনি।
অনুষ্ঠানে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রিপা রানী, সহকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। ইউএনও ইসরাত জাহান ছনি বলেন, “বর্তমান সরকার গ্রামের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করছে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নারীদের জন্য এই সহায়তা শুধু আর্থিক সহযোগিতা নয়, এটি আত্মনির্ভরতারও প্রতীক। আশা করি, এই উদ্যোগের মাধ্যমে তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে।”
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রিপা রানী জানান, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মহিলারা ছাগল পালন করে পারিবারিক আয় বৃদ্ধি করতে পারবেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১৯০ জন মহিলাকে একইভাবে দুটি করে ছাগল, ঘর নির্মাণ সামগ্রী এবং খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। “আমাদের লক্ষ্য হলো এই মানুষগুলোকে পশুপালনের মাধ্যমে স্থায়ী আয়ের পথে নিয়ে আসা,” বলেন ডা. রিপা রানী।
সহায়তা পেয়ে খুশি উপকারভোগীরা। বদলগাছীর বুধইল এলাকার জেমস মুর্মু বলেন, “আগে হাতে কিছুই ছিল না, এখন ছাগলগুলো পালন করে পরিবারে কিছুটা স্বস্তি ফিরবে।” একই এলাকার সুমিতা হেমব্রম বলেন, “আমরা অনেক কষ্টে দিন কাটাতাম। সরকার আমাদের কথা ভেবে সহায়তা দিচ্ছে, এতে আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারব।”
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে সরকারের এই উদ্যোগ বদলগাছী উপজেলায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সহায়তার মাধ্যমে এই জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানের শেষে ইউএনও ইসরাত জাহান ছনি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিবারের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং ছাগল পালনের বিষয়ে পরামর্শ দেন।
এমআর/সবা






















