রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলায় চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতালের কম্প্রিহেনসিভ কমিউনিটি হেলথ প্রোগামের নতুন প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক সূচনা ও অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে আয়োজিত এ সভায় সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, সাংবাদিক, হেডম্যান–কার্বারি এবং প্রকল্পের উপকারভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।

অবহিতকরণ সভার প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান খান বলেন, “চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতাল দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য নির্ভরযোগ্য স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে আসছে। বিশেষ করে কমিউনিটি হেলথ প্রোগাম তৃণমূলে মানুষের দরজায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে রাজস্থলীর মানুষের জন্য আরও উন্নত, সহজলভ্য ও মানসম্মত সেবা নিশ্চিত হবে বলে আশা করি।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতাল ও খ্রীষ্টিয়ান লেপ্রোসি সেন্টারের পরিচালক ডা. প্রবীর খিয়াং। তিনি বলেন, “এই প্রোগাম শুধু চিকিৎসা নয়, মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতেও কাজ করছে। ভবিষ্যতে কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত হবে।”

সভার শুরুতে প্রকল্পের সার্বিক কার্যক্রম ভিডিওচিত্রে উপস্থাপন করেন প্রোগ্রাম ম্যানেজার বিজয় মারমা। তিনি জানান, ১৯০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত চন্দ্রঘোনা খ্রীস্টিয়ান হাসপাতাল পার্বত্য অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসাসেবার অন্যতম নির্ভরযোগ্য কেন্দ্র। কমিউনিটি হেলথ প্রোগামের আওতায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, গর্ভবতী ও প্রসূতি মায়ের সেবা, শিশুপুষ্টি, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ, স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং সরকারি টিকাদান কর্মসূচিতে সহায়তা করা হচ্ছে। চলতি বছরের জুলাই থেকে তিন বছর মেয়াদি নতুন প্রকল্প শুরু হয়েছে, যেখানে ‘হিল ফ্লাওয়ার’ অংশীদার হিসেবে কাজ করবে।

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নওশাত খান, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সৃতি চাকমা, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা লিলা চাকমা, সমাজসেবা কর্মকর্তা লিজা চাকমা, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শান্তি রতন চাকমা, রাজস্থলী থানার উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ হাফিজ, হেডম্যান ক্যসইথুই মারমা প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে রাজস্থলীর দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা আরও দ্রুত, কার্যকর ও সহজলভ্য হবে। বিশেষ করে নারী স্বাস্থ্য, শিশুর পুষ্টি, সামাজিক সচেতনতা এবং জলবায়ু–সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সভা শেষে উপস্থিত সবাই নতুন প্রকল্পের সাফল্য কামনা করেন এবং তৃণমূলে স্বাস্থ্যসেবা বিস্তারে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

এমআর/সবা