০৩:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডাংরারহাট আজিজিয়া আলিম মাদ্রাসার আয়া নিয়োগ পরীক্ষায় ল্যাপটপ আনার নির্দেশ, এলাকায় চাঞ্চল্য

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ডাংরারহাট আজিজিয়া আলিম মাদ্রাসায় আয়া পদে নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, নিয়োগ বোর্ড থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের নিজস্ব ল্যাপটপ সঙ্গে নিয়ে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়, যা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্ন ও সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি মাদ্রাসাটিতে আয়া পদে নিয়োগের লক্ষ্যে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। পরীক্ষার আগে প্রার্থীদের জানানো হয়—পরীক্ষায় অংশ নিতে হলে প্রত্যেককে ল্যাপটপ সঙ্গে আনতে হবে। সাধারণত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে এ ধরনের কোনো শর্ত না থাকায় বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দেয়।
আয়া পদে আবেদনকারী শিফালী বেগমের স্বামী মাইদুল ইসলামসহ একাধিক প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,“আয়া পদের পরীক্ষায় ল্যাপটপ আনার নির্দেশে আমরা বিস্মিত। এতে নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর সন্দেহ তৈরি হয়েছে।”
এ বিষয়ে স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এ ধরনের অস্বাভাবিক শর্ত সম্পূর্ণ প্রশ্নবিদ্ধ এবং বিষয়টি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি রাখে। তারা স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত নিয়োগ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগ তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছেন নৈশপ্রহরী পদে আবেদনকারী আনিসুর রহমান আনাস ও অফিস সহায়ক পদে আবেদনকারী সবুজ রানা। তারা অভিযোগ করেন, যে পদের জন্য আবেদন করা হয়েছিল সেই পদের প্রবেশপত্র না দিয়ে ভিন্ন পদের প্রবেশপত্র ইস্যু করে বড় ধরনের জালিয়াতি করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও অধ্যক্ষের যোগসাজশে একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আর্থিক লেনদেন করা হয়েছে বলেও তারা দাবি করেন। তাদের ভাষ্যমতে, পরিকল্পিত প্রতারণার উদ্দেশ্যেই নিয়োগ বোর্ড এ ধরনের অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছে।

আরেক আবেদনকারী সোহাগ হোসেন বলেন, “আমি আবেদনপত্রে আমার পূর্ণ নাম ‘সোহাগ হোসেন’ উল্লেখ করলেও প্রবেশপত্রে শুধু ‘হোসেন’ লেখা হয়েছে। এটি আমার সঙ্গে প্রতারণার শামিল। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষার্থী অভিভাবক সদস্য আব্দুল জব্বার জানান, নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে তাকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অবগত করেনি।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সহিদুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি ফোন রিসিভ করেননি। একইভাবে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা চলছে। স্থানীয়রা দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

শু/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

সব রেকর্ড ভেঙে স্বর্ণের দামে নতুন ইতিহাস, ভরি ছাড়াল দুই লাখ ২৭ হাজার

ডাংরারহাট আজিজিয়া আলিম মাদ্রাসার আয়া নিয়োগ পরীক্ষায় ল্যাপটপ আনার নির্দেশ, এলাকায় চাঞ্চল্য

আপডেট সময় : ০৫:০৬:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ডাংরারহাট আজিজিয়া আলিম মাদ্রাসায় আয়া পদে নিয়োগ পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, নিয়োগ বোর্ড থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের নিজস্ব ল্যাপটপ সঙ্গে নিয়ে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়, যা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে প্রশ্ন ও সন্দেহ দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি মাদ্রাসাটিতে আয়া পদে নিয়োগের লক্ষ্যে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। পরীক্ষার আগে প্রার্থীদের জানানো হয়—পরীক্ষায় অংশ নিতে হলে প্রত্যেককে ল্যাপটপ সঙ্গে আনতে হবে। সাধারণত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে এ ধরনের কোনো শর্ত না থাকায় বিষয়টি এলাকায় ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দেয়।
আয়া পদে আবেদনকারী শিফালী বেগমের স্বামী মাইদুল ইসলামসহ একাধিক প্রার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,“আয়া পদের পরীক্ষায় ল্যাপটপ আনার নির্দেশে আমরা বিস্মিত। এতে নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর সন্দেহ তৈরি হয়েছে।”
এ বিষয়ে স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এ ধরনের অস্বাভাবিক শর্ত সম্পূর্ণ প্রশ্নবিদ্ধ এবং বিষয়টি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি রাখে। তারা স্বচ্ছ ও ন্যায়সঙ্গত নিয়োগ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগ তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছেন নৈশপ্রহরী পদে আবেদনকারী আনিসুর রহমান আনাস ও অফিস সহায়ক পদে আবেদনকারী সবুজ রানা। তারা অভিযোগ করেন, যে পদের জন্য আবেদন করা হয়েছিল সেই পদের প্রবেশপত্র না দিয়ে ভিন্ন পদের প্রবেশপত্র ইস্যু করে বড় ধরনের জালিয়াতি করা হয়েছে। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও অধ্যক্ষের যোগসাজশে একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আর্থিক লেনদেন করা হয়েছে বলেও তারা দাবি করেন। তাদের ভাষ্যমতে, পরিকল্পিত প্রতারণার উদ্দেশ্যেই নিয়োগ বোর্ড এ ধরনের অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছে।

আরেক আবেদনকারী সোহাগ হোসেন বলেন, “আমি আবেদনপত্রে আমার পূর্ণ নাম ‘সোহাগ হোসেন’ উল্লেখ করলেও প্রবেশপত্রে শুধু ‘হোসেন’ লেখা হয়েছে। এটি আমার সঙ্গে প্রতারণার শামিল। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষার্থী অভিভাবক সদস্য আব্দুল জব্বার জানান, নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে তাকে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ অবগত করেনি।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সহিদুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি ফোন রিসিভ করেননি। একইভাবে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা চলছে। স্থানীয়রা দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

শু/সবা