০৫:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সৈয়দ আবুল হোসেনের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষের শোক প্রকাশ

মাদারীপুর প্রতিনিধি

সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য তাহমিনা সিদ্দিকী। আজ বুধবার সকালে তিনি জানান, গতকাল রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে এ রাজনীতিক ব্যক্তিত্বকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তিনি মারা যান।

সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে সংক্ষিপ্ত বার্তায় এ তথ্য দেয়া হয়। এদিকে আবুল হোসেনের মরদেহ বর্তমানে রাজধানীর সিএইচএমের হিমাগারে রাখা আছে। ডাসার উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও আবুল হোসেনের ভাগ্নে সৈয়দ শাখাওয়াত হোসেন জানান, দাফন সম্পর্কে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন সৈয়দ আবুল হোসেন। সৈয়দ আবুল হোসেনের জন্ম ১৯৫১ সালে মাদারীপুরে। তিনি ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে মাদারীপুর-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর সপ্তম, অষ্টম ও নবম সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সংসদ সদস্য থাকাকালে তিনি নির্বাচনীয় এলাকায় অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন।

২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের চুক্তি সই করে সরকার। কিন্তু বছরের শেষ দিকেই তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পরে ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি যোগাযোগমন্ত্রীর পদ থেকে সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেন। সেতু বিভাগের তৎকালীন সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকেও দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হয়। এরপর ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এরপর থেকে রাজনীতি থেকে অনেকটা দূরেই ছিলেন।

যদিও ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি সেতুর ঠিকাদার নিয়োগে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদন দেয় দুদক। কিন্তু ৩০ জুন পদ্মা সেতুর ঋণ চুক্তি বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। তবে ৯ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগে কানাডার আদালতে একটি মামলা হয়। ৫ বছরের দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৭ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি কানাডার আদালত জানায়, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির যে অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক ঋণ বাতিল করেছিল, তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

স্ত্রী খাজা নার্গিস, দুই মেয়ে সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন ও সৈয়দা ইফফাত হোসেন রেখে গেছেন সৈয়দ আবুল হোসেন। আগামী শুক্রবার তাঁর গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের ডাসারে জানাজা ও দাফন হওয়ার কথা রয়েছে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা।

জনপ্রিয় সংবাদ

রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ঐতিহাসিক নিদর্শন

সৈয়দ আবুল হোসেনের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষের শোক প্রকাশ

আপডেট সময় : ০৪:১৮:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৩

মাদারীপুর প্রতিনিধি

সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। গতকাল মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত ২টার দিকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য তাহমিনা সিদ্দিকী। আজ বুধবার সকালে তিনি জানান, গতকাল রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে এ রাজনীতিক ব্যক্তিত্বকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তিনি মারা যান।

সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং থেকে সংক্ষিপ্ত বার্তায় এ তথ্য দেয়া হয়। এদিকে আবুল হোসেনের মরদেহ বর্তমানে রাজধানীর সিএইচএমের হিমাগারে রাখা আছে। ডাসার উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও আবুল হোসেনের ভাগ্নে সৈয়দ শাখাওয়াত হোসেন জানান, দাফন সম্পর্কে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। ২০০৯ থেকে ২০১২ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন সৈয়দ আবুল হোসেন। সৈয়দ আবুল হোসেনের জন্ম ১৯৫১ সালে মাদারীপুরে। তিনি ১৯৯১ সালে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হয়ে মাদারীপুর-৩ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর সপ্তম, অষ্টম ও নবম সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সংসদ সদস্য থাকাকালে তিনি নির্বাচনীয় এলাকায় অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেন।

২০১১ সালের ২৮ এপ্রিল পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের চুক্তি সই করে সরকার। কিন্তু বছরের শেষ দিকেই তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। পরে ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি যোগাযোগমন্ত্রীর পদ থেকে সৈয়দ আবুল হোসেন পদত্যাগ করেন। সেতু বিভাগের তৎকালীন সচিব মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়াকেও দায়িত্ব থেকে সরে যেতে হয়। এরপর ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এরপর থেকে রাজনীতি থেকে অনেকটা দূরেই ছিলেন।

যদিও ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি সেতুর ঠিকাদার নিয়োগে দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদন দেয় দুদক। কিন্তু ৩০ জুন পদ্মা সেতুর ঋণ চুক্তি বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। তবে ৯ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগে কানাডার আদালতে একটি মামলা হয়। ৫ বছরের দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২০১৭ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি কানাডার আদালত জানায়, পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির যে অভিযোগ তুলে বিশ্বব্যাংক ঋণ বাতিল করেছিল, তার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

স্ত্রী খাজা নার্গিস, দুই মেয়ে সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন ও সৈয়দা ইফফাত হোসেন রেখে গেছেন সৈয়দ আবুল হোসেন। আগামী শুক্রবার তাঁর গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের ডাসারে জানাজা ও দাফন হওয়ার কথা রয়েছে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা।