০৩:৪৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ৩ বছর ধরে তেল সরবরাহ বন্ধ 

  • সবুজ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৫:০৫:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩
  • 58
ভরা বর্ষা মৌসুমেও তেল সরবরাহ করেনি  ভাসমান তেল ডিপাে 
ব্রহ্মপুত্র নদে নাব্যতা সংকট দেখালেও ভরা বর্ষা মৌসুমেও তেল সরবরাহ করেনি চিলমারীর ভাসমান তেল ডিপাে মেঘনা ও যমুনা পেট্রােলিয়াম লিমিটেড। টানা ৩ বছর ধরে একই অজুহাতে তেল সরবরাহ বন্ধ রেখেছে তেল ডিপাে দুটি।
উত্তরের প্রান্তিক চাষিদের জ্বালানি তেলর যােগান দিতে ১৯৮৯ সাল থেকে কুড়িগ্রামের  চিলমারীতে তেল সরবরাহ করতাে ভাসমান  তেল ডিপাে। এতে অনকটা সাশ্রয়ী মুল্যে তেল কিনতে পারতাে চাষিরা।
 ২০ সেপ্টেম্বর  চিলমারী বন্দর ফেরি সার্ভিস চালু হলে প্রতিদিন কয়েক হাজার লিটার তেল লাগছে ফেরি চালাতে। ফেরিঘাটর পাশেই তেলের ডিপাে থাকলেও তেল পাচ্ছেনা বিআইডব্লিউটিসি। বাড়তি খরচ করে প্রায় ১’শ কি.মি দূরপথ রংপুর থেকে তেল কিনে আনতে হচ্ছে তাদের।
বিআইডব্লিউটিসি’র চিলমারী অফিসের তথ্যমতে, বর্তমানে চিলমারী বন্দর ফেরিঘাট থেকে রৌমারী ফেরিঘাট ২টি ফেরি নিয়মিত ৩ বার করে যাতায়াত করছে।
 এতে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার লিটার তেল লাগছে ফেরির ইঞ্জিন চালাত। মাসে গড়ে প্রায় ৬০ হাজার লিটার। এ ছাড়া নদে একদিনে ড্রেজিং চালাতে লাগছে প্রায় ২ হাজার লিটার।
বিআইডব্লিউটিএর চিলমারী ফেরিঘাটের প্রধান পাইলট মাহবুবুর রহমান বলেন, বর্তমান বন্দরে ড্রেজিং জাহাজ রয়েছে। তেলের বার্জ আসতে নাব্যতা সংকট থাকবে না আশা রাখি।
তেলব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মতিয়ার রহমান বলেন, এ অঞ্চল চাষাবাদ মৌসুমের সময় প্রতিদিন গড়ে ২ থেকে আড়াই লাখ লিটার তেল লাগে। মৌসুম ছাড়া গড়ে ১ লাখ লিটার তেল লাগতাে। বর্তমানে বন্দর ফেরি যুক্ত হওয়ায় জ্বালানি তেলের চাহিদা বেড়েছে। বর্তমান এ তেলের যােগান পার্বতীপুর থেকে এনর দিতে হচ্ছে। তিনি আরাে বলেন, তেল সরবরাহ না হওয়ায় ডিপা দুটিতে কর্মরত শ্রমিকরাও  মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সাগর ফিলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী মাহফুজার রহমান বলেন, এ বিষয়ে রংপুর পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা পট্রালিয়াম লিমিটেডের কর্তৃপক্ষের সাথে আমার কথা হয়েছিল। তারা বলেছেন ভাসমান তেল ডিপাে চালু করা হবে। কিন্তু  বাস্তবিক অর্থ কােন দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
শ্রমিক মেরাজ হোসেন বলেন, ‘যখন তেল সরবরাহ ছিল তখন কয়েক শ মানুষের কাজের সুযোগ হয়েছিল। অনেকের কাজ  না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।  তেল সরবরাহ চালু হলে কাজের সুযোগ হতো।
জানা যায়, ১৯৮৯ সালে চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা পেট্রােলিয়াম লিমিটেডের তিনটি ভাসমান ডিপাে (বার্জ) চালু করা হয়। এর অল্পদিনের মধ্যেই আকস্মিকভাব পদ্মা পেট্রােলিয়াম তাদের ডিপাটি সরিয়ে নেয়। এর পর থেকে মেঘনা ও যমুনা পেট্রােলিয়াম এ অঞ্চলে তেল সরবরাহ করে আসছিল।
যমুনা অয়েল কােম্পানির ডিপােতে পাঁচ লাখ ২৫ হাজার লিটার ও মেঘনা পেট্রােলিয়াম লিমিটেডের ডিপােতে চার লাখ ৪৫ হাজার লিটার তেল ধারণর সক্ষমতা রয়েছে।
কিন্তু ব্রহ্মপুত্রের নাব্যতা সংকটের অজুহাত গত ২০২০ সালের ৮ জুন যমুনা পেট্রােলিয়াম এবং ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে মেঘনা পেট্রােলিয়াম তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
এতে টানা ৩ বছর ধরে জেলার প্রান্তিক চাষিরা সাশ্রয়ী মূল্যে তেল কিনতে পারছেন না।  এর প্রভাব পড়েছে ব্রহ্মপুত্র নদী বেষ্টিত উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী, রাজীবপুর এবং পার্শ্ববতী গাইবান্ধার জেলার সুদরগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চল ধান, পাট, ভুট্টা, গমসহ বিভিন্ন চাষাবাদ। জ্বালানি তেলের বাড়তি দাম হওয়ায় অঞ্চলগুলাতে উৎপাদন হ্রাস পেতে শুরু করেছে।
মেঘনা পেট্রােলিয়াম লিমিটেডের ভাসমান বার্জ ডিপাে ইনচার্জ মহসিন হােসেন বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্রে নাব্যতা সংকটের কারণে আপাতত সেখানে তেল সরবরাহ বন্ধ আছে।’
যমুনা পেট্রােলিয়াম চিলমারী ডিপাের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সমীর কুমাল পাল বলেন, তেল ডিপাে চালুর ব্যাপারে এখনাে কােন নির্দেশনা আসেনি। তবে স্থায়ীভাবে চালুর সম্ভাবনা রয়েছে।
জনপ্রিয় সংবাদ

সানজিদা তন্বীর বিয়ের খবর জানালেন ফেসবুকে নিজের হৃদয়গ্রাহী পোস্টে

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ৩ বছর ধরে তেল সরবরাহ বন্ধ 

আপডেট সময় : ০৫:০৫:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩
ভরা বর্ষা মৌসুমেও তেল সরবরাহ করেনি  ভাসমান তেল ডিপাে 
ব্রহ্মপুত্র নদে নাব্যতা সংকট দেখালেও ভরা বর্ষা মৌসুমেও তেল সরবরাহ করেনি চিলমারীর ভাসমান তেল ডিপাে মেঘনা ও যমুনা পেট্রােলিয়াম লিমিটেড। টানা ৩ বছর ধরে একই অজুহাতে তেল সরবরাহ বন্ধ রেখেছে তেল ডিপাে দুটি।
উত্তরের প্রান্তিক চাষিদের জ্বালানি তেলর যােগান দিতে ১৯৮৯ সাল থেকে কুড়িগ্রামের  চিলমারীতে তেল সরবরাহ করতাে ভাসমান  তেল ডিপাে। এতে অনকটা সাশ্রয়ী মুল্যে তেল কিনতে পারতাে চাষিরা।
 ২০ সেপ্টেম্বর  চিলমারী বন্দর ফেরি সার্ভিস চালু হলে প্রতিদিন কয়েক হাজার লিটার তেল লাগছে ফেরি চালাতে। ফেরিঘাটর পাশেই তেলের ডিপাে থাকলেও তেল পাচ্ছেনা বিআইডব্লিউটিসি। বাড়তি খরচ করে প্রায় ১’শ কি.মি দূরপথ রংপুর থেকে তেল কিনে আনতে হচ্ছে তাদের।
বিআইডব্লিউটিসি’র চিলমারী অফিসের তথ্যমতে, বর্তমানে চিলমারী বন্দর ফেরিঘাট থেকে রৌমারী ফেরিঘাট ২টি ফেরি নিয়মিত ৩ বার করে যাতায়াত করছে।
 এতে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার লিটার তেল লাগছে ফেরির ইঞ্জিন চালাত। মাসে গড়ে প্রায় ৬০ হাজার লিটার। এ ছাড়া নদে একদিনে ড্রেজিং চালাতে লাগছে প্রায় ২ হাজার লিটার।
বিআইডব্লিউটিএর চিলমারী ফেরিঘাটের প্রধান পাইলট মাহবুবুর রহমান বলেন, বর্তমান বন্দরে ড্রেজিং জাহাজ রয়েছে। তেলের বার্জ আসতে নাব্যতা সংকট থাকবে না আশা রাখি।
তেলব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মতিয়ার রহমান বলেন, এ অঞ্চল চাষাবাদ মৌসুমের সময় প্রতিদিন গড়ে ২ থেকে আড়াই লাখ লিটার তেল লাগে। মৌসুম ছাড়া গড়ে ১ লাখ লিটার তেল লাগতাে। বর্তমানে বন্দর ফেরি যুক্ত হওয়ায় জ্বালানি তেলের চাহিদা বেড়েছে। বর্তমান এ তেলের যােগান পার্বতীপুর থেকে এনর দিতে হচ্ছে। তিনি আরাে বলেন, তেল সরবরাহ না হওয়ায় ডিপা দুটিতে কর্মরত শ্রমিকরাও  মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
সাগর ফিলিং স্টেশনের স্বত্বাধিকারী মাহফুজার রহমান বলেন, এ বিষয়ে রংপুর পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা পট্রালিয়াম লিমিটেডের কর্তৃপক্ষের সাথে আমার কথা হয়েছিল। তারা বলেছেন ভাসমান তেল ডিপাে চালু করা হবে। কিন্তু  বাস্তবিক অর্থ কােন দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
শ্রমিক মেরাজ হোসেন বলেন, ‘যখন তেল সরবরাহ ছিল তখন কয়েক শ মানুষের কাজের সুযোগ হয়েছিল। অনেকের কাজ  না থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।  তেল সরবরাহ চালু হলে কাজের সুযোগ হতো।
জানা যায়, ১৯৮৯ সালে চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা পেট্রােলিয়াম লিমিটেডের তিনটি ভাসমান ডিপাে (বার্জ) চালু করা হয়। এর অল্পদিনের মধ্যেই আকস্মিকভাব পদ্মা পেট্রােলিয়াম তাদের ডিপাটি সরিয়ে নেয়। এর পর থেকে মেঘনা ও যমুনা পেট্রােলিয়াম এ অঞ্চলে তেল সরবরাহ করে আসছিল।
যমুনা অয়েল কােম্পানির ডিপােতে পাঁচ লাখ ২৫ হাজার লিটার ও মেঘনা পেট্রােলিয়াম লিমিটেডের ডিপােতে চার লাখ ৪৫ হাজার লিটার তেল ধারণর সক্ষমতা রয়েছে।
কিন্তু ব্রহ্মপুত্রের নাব্যতা সংকটের অজুহাত গত ২০২০ সালের ৮ জুন যমুনা পেট্রােলিয়াম এবং ২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে মেঘনা পেট্রােলিয়াম তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
এতে টানা ৩ বছর ধরে জেলার প্রান্তিক চাষিরা সাশ্রয়ী মূল্যে তেল কিনতে পারছেন না।  এর প্রভাব পড়েছে ব্রহ্মপুত্র নদী বেষ্টিত উলিপুর, চিলমারী, রৌমারী, রাজীবপুর এবং পার্শ্ববতী গাইবান্ধার জেলার সুদরগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চল ধান, পাট, ভুট্টা, গমসহ বিভিন্ন চাষাবাদ। জ্বালানি তেলের বাড়তি দাম হওয়ায় অঞ্চলগুলাতে উৎপাদন হ্রাস পেতে শুরু করেছে।
মেঘনা পেট্রােলিয়াম লিমিটেডের ভাসমান বার্জ ডিপাে ইনচার্জ মহসিন হােসেন বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্রে নাব্যতা সংকটের কারণে আপাতত সেখানে তেল সরবরাহ বন্ধ আছে।’
যমুনা পেট্রােলিয়াম চিলমারী ডিপাের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সমীর কুমাল পাল বলেন, তেল ডিপাে চালুর ব্যাপারে এখনাে কােন নির্দেশনা আসেনি। তবে স্থায়ীভাবে চালুর সম্ভাবনা রয়েছে।