১২:৪০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোটের মাঠে ঈগলের দাপট পিরোজপুর ১,২,৩ আসনে ক্ষমতাসীনদের নৌকা – লাঙ্গলের গলার কাঁটা ঈগল

পিরোজপুরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনী আসন হচ্ছে তিনটি । প্রতিটিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে ক্ষমতাসীনদের মধ্যেই। তিন আসনের দুটিতে নৌকা, একটিতে লাঙ্গল দিয়েছে ক্ষমতাসীন জোট। দুটিতে জোটের শরিক নেতারা প্রার্থী, একটিতে আওয়ামী লীগের নিজস্ব প্রার্থী। তিনটিতেই ঈগল প্রতীক নিয়ে বেশ ভালো অবস্থানে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী। আসন তিনটিতে ক্ষমতাসীনদের অধিকাংশ নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধি স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগলের পক্ষে কাজ করছে। এতে ক্ষমতাসীন দল ও জোটের মধ্যে সর্ম্পক তলানিতে পৌছে একে অপরের চরম শত্রুতে পরিনত হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এ বারের নির্বাচনে জাতিয়তাবাদী দল বিএনপি না থাকায় পিরোজপুরের তিন আসনে ক্ষমতাসীনদের নিজেদের মধ্যে বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে । পরিস্থিতি এমন- ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পাসও করে যেতে পারে এমন দাড়নায় এখন ক্ষমতাসীনদের গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েন ঈগল প্রার্থীরা। পিরোজপুর-১ আসনে সাবেক ও বর্তমান এমপির লড়াই জমে উঠেছে। পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানী ও নাজিরপুর উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর-১ আসন। প্রায় সাড়ে তিন লাখ ভোটারের এ এলাকায় জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী চারজন। দুজনের দেখা
না মিললেও আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীর প্রচারণায় জমে উঠেছে নির্বাচন। দুবারের সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএমএ আউয়াল লড়ছেন ঈগল প্রতীকে। বর্তমান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম নৌকা নিয়ে মাঠে প্রচার প্রচারণা করছেন। জাতীয় পার্টির নজরুল ও তৃণমূল বিএনপির রিপনের কোনো আওয়াজ না থাকলেও রীতিমতো মুখোমুখি নৌকার প্রার্থী রেজাউল ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী একে এম এ আউয়াল। নির্বাচনী মাঠে নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি থেকে খুনের ঘটনায় জড়িয়েছে ক্ষমতাসীন দল। নির্বাচনী মাঠে উভয়ই ভোট যুদ্ধে নিয়োজিত রয়েছেন। এ আসনে প্রার্থীদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, ভোটার ও সমর্থকরা দুই ভাগে বিভক্ত রয়েছে। এলাকার
পরিস্থিতি বলছে, ফলাফল যাই হোক, প্রতিদ্বন্দ্বিতা চরম। এদিকে পিরোজপুর-২ আসনে ওস্তাত-শিষ্যের লড়াই হচ্ছে। ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও নেছারাবাদ নিয়ে পিরোজপুর-২ আসন। এ আসনে প্রায় চার লাখ ভোটার। এখানে ৩৮ বছর ধরে এমপি ১৪ দলীয় জোটের শরিক জেপির আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। আবারও তিনি জোট থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। সব সময় নির্বাচনে বিরোধীদের সঙ্গে লড়াই করলেও এবার লড়াইটা ঘরের লোকের সঙ্গে। তারই এক সময়ের সহকারী একান্ত সচিব মহিউদ্দিন মহারাজ এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে , শীতের মধ্যেও একাধিক নদীবেষ্টিত এ এলাকায় চলছে ভোটের প্রচারণা। দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকরা। এ আসনটি ভোটের লাড়াইয়ে কাগুজে সাত প্রার্থী থাকলেও নৌকা ও ঈগলের বাইরে কারও প্রচারণা চোখে পড়ে না। স্থানীয়রা বলছেন, সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশ হলে তারা ভোট দিতে যাবেন। এখানকার প্রবীণরা আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর পক্ষে থাকলেও স্থানীয় আ’লীগ ও ৯৫ ভাগ জনপ্রতিনিধি, তরুন ও নারীদের একটা বড় শক্তি স্বতন্ত্র (ঈগল) প্রার্থী মহারাজের সঙ্গে। তবে এখানে লড়াইটা বেশ হাড্ডাহাড্ডি হবে।
পিরোজপুর-৩ আওয়ামী লীগ জাপাকে ছাড়লেও বিরোধ অভ্যন্তরেই রয়ে গেছে। ২ লাখ ২৩ হাজার ৪৪১ ভোটা নিয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা পিরোজপুর-৩ আসন গঠিত। আসনটি দীর্ঘদিন মহাজোট শরিক জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ। এবারও তাই হয়েছে। তবে এবার গত চারবারের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির
কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান রুস্তম আলী ফরাজী দলীয় মনোনয়ন পাননি।
পেয়েছেন দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের উপদেষ্টা মাশরেকুল আজম রবি। যে কারণে রুস্তম আলী ফরাজী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবারের নির্বাচনে ঈগল মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয় কর্মকান্ডে নিষ্কৃয় থাকলে বর্তমান এমপির একটা অবস্থান রয়েছে এলাকায়। যার কারণে ডা. মো. রুস্তম আলী ফরাজী জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী। এদিকে কেন্দ্রের নির্দেশনা মেনে মহাজোট শরিক জাতীয় পার্টির প্রার্থীর সঙ্গে কাজ করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও। তবে এখানেও স্বতন্ত্রের দাপট বেশি। তবে মাশরেকুল আজমের প্রত্যাশা,
আধুনিক মঠবাড়িয়া গড়তে মানুষ এরশাদের লাঙল প্রতীকে ভোট দিয়ে তাকে বিজয়ী করবেন। তবে এখানে লড়াইটা বেশ কঠিন হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

সানজিদা তন্বীর বিয়ের খবর জানালেন ফেসবুকে নিজের হৃদয়গ্রাহী পোস্টে

ভোটের মাঠে ঈগলের দাপট পিরোজপুর ১,২,৩ আসনে ক্ষমতাসীনদের নৌকা – লাঙ্গলের গলার কাঁটা ঈগল

আপডেট সময় : ০৫:২৯:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ জানুয়ারী ২০২৪

পিরোজপুরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনী আসন হচ্ছে তিনটি । প্রতিটিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে ক্ষমতাসীনদের মধ্যেই। তিন আসনের দুটিতে নৌকা, একটিতে লাঙ্গল দিয়েছে ক্ষমতাসীন জোট। দুটিতে জোটের শরিক নেতারা প্রার্থী, একটিতে আওয়ামী লীগের নিজস্ব প্রার্থী। তিনটিতেই ঈগল প্রতীক নিয়ে বেশ ভালো অবস্থানে তিন স্বতন্ত্র প্রার্থী। আসন তিনটিতে ক্ষমতাসীনদের অধিকাংশ নেতাকর্মী ও জনপ্রতিনিধি স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগলের পক্ষে কাজ করছে। এতে ক্ষমতাসীন দল ও জোটের মধ্যে সর্ম্পক তলানিতে পৌছে একে অপরের চরম শত্রুতে পরিনত হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, এ বারের নির্বাচনে জাতিয়তাবাদী দল বিএনপি না থাকায় পিরোজপুরের তিন আসনে ক্ষমতাসীনদের নিজেদের মধ্যে বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে । পরিস্থিতি এমন- ঈগল প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পাসও করে যেতে পারে এমন দাড়নায় এখন ক্ষমতাসীনদের গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েন ঈগল প্রার্থীরা। পিরোজপুর-১ আসনে সাবেক ও বর্তমান এমপির লড়াই জমে উঠেছে। পিরোজপুর সদর, ইন্দুরকানী ও নাজিরপুর উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর-১ আসন। প্রায় সাড়ে তিন লাখ ভোটারের এ এলাকায় জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী চারজন। দুজনের দেখা
না মিললেও আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীর প্রচারণায় জমে উঠেছে নির্বাচন। দুবারের সাবেক এমপি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএমএ আউয়াল লড়ছেন ঈগল প্রতীকে। বর্তমান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম নৌকা নিয়ে মাঠে প্রচার প্রচারণা করছেন। জাতীয় পার্টির নজরুল ও তৃণমূল বিএনপির রিপনের কোনো আওয়াজ না থাকলেও রীতিমতো মুখোমুখি নৌকার প্রার্থী রেজাউল ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী একে এম এ আউয়াল। নির্বাচনী মাঠে নিজেদের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি থেকে খুনের ঘটনায় জড়িয়েছে ক্ষমতাসীন দল। নির্বাচনী মাঠে উভয়ই ভোট যুদ্ধে নিয়োজিত রয়েছেন। এ আসনে প্রার্থীদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, ভোটার ও সমর্থকরা দুই ভাগে বিভক্ত রয়েছে। এলাকার
পরিস্থিতি বলছে, ফলাফল যাই হোক, প্রতিদ্বন্দ্বিতা চরম। এদিকে পিরোজপুর-২ আসনে ওস্তাত-শিষ্যের লড়াই হচ্ছে। ভান্ডারিয়া, কাউখালী ও নেছারাবাদ নিয়ে পিরোজপুর-২ আসন। এ আসনে প্রায় চার লাখ ভোটার। এখানে ৩৮ বছর ধরে এমপি ১৪ দলীয় জোটের শরিক জেপির আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। আবারও তিনি জোট থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন। সব সময় নির্বাচনে বিরোধীদের সঙ্গে লড়াই করলেও এবার লড়াইটা ঘরের লোকের সঙ্গে। তারই এক সময়ের সহকারী একান্ত সচিব মহিউদ্দিন মহারাজ এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে , শীতের মধ্যেও একাধিক নদীবেষ্টিত এ এলাকায় চলছে ভোটের প্রচারণা। দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকরা। এ আসনটি ভোটের লাড়াইয়ে কাগুজে সাত প্রার্থী থাকলেও নৌকা ও ঈগলের বাইরে কারও প্রচারণা চোখে পড়ে না। স্থানীয়রা বলছেন, সুন্দর ও সুষ্ঠু পরিবেশ হলে তারা ভোট দিতে যাবেন। এখানকার প্রবীণরা আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর পক্ষে থাকলেও স্থানীয় আ’লীগ ও ৯৫ ভাগ জনপ্রতিনিধি, তরুন ও নারীদের একটা বড় শক্তি স্বতন্ত্র (ঈগল) প্রার্থী মহারাজের সঙ্গে। তবে এখানে লড়াইটা বেশ হাড্ডাহাড্ডি হবে।
পিরোজপুর-৩ আওয়ামী লীগ জাপাকে ছাড়লেও বিরোধ অভ্যন্তরেই রয়ে গেছে। ২ লাখ ২৩ হাজার ৪৪১ ভোটা নিয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা পিরোজপুর-৩ আসন গঠিত। আসনটি দীর্ঘদিন মহাজোট শরিক জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ। এবারও তাই হয়েছে। তবে এবার গত চারবারের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির
কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান রুস্তম আলী ফরাজী দলীয় মনোনয়ন পাননি।
পেয়েছেন দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের উপদেষ্টা মাশরেকুল আজম রবি। যে কারণে রুস্তম আলী ফরাজী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবারের নির্বাচনে ঈগল মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয় কর্মকান্ডে নিষ্কৃয় থাকলে বর্তমান এমপির একটা অবস্থান রয়েছে এলাকায়। যার কারণে ডা. মো. রুস্তম আলী ফরাজী জয়ের ব্যাপারে বেশ আশাবাদী। এদিকে কেন্দ্রের নির্দেশনা মেনে মহাজোট শরিক জাতীয় পার্টির প্রার্থীর সঙ্গে কাজ করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও। তবে এখানেও স্বতন্ত্রের দাপট বেশি। তবে মাশরেকুল আজমের প্রত্যাশা,
আধুনিক মঠবাড়িয়া গড়তে মানুষ এরশাদের লাঙল প্রতীকে ভোট দিয়ে তাকে বিজয়ী করবেন। তবে এখানে লড়াইটা বেশ কঠিন হবে।