১২:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশের প্রথম ক্রীড়াসচিবের বিদায়

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম কুশীলব তিনি। ষাট বা সত্তরের দশকে যার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব পেয়েছিল বাংলাদেশ ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বর্তমানে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ)। দেশের ক্রীড়াঙ্গনে যিনি এক টাকার সচিব নামে পরিচিত সেই কাজী আনিসুর রহমান আজ শুক্রবার দুপুরে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আগামী রোববার সকাল ১১টায় তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।

দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। বিসিএস ক্যাডার না হয়েও নিজ যোগ্যতায় তৎকালীন ক্রীড়া, শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ইউসুফ আলী এবং প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের হস্তক্ষেপে ১৯৭২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৭৫ সালের ৩১ মার্চ বাংলাদেশ ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থার আহ্বায়ক এবং ১৯৭৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৭৬ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশ ক্রীড়া পরিষদের সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।

সেসময় মাত্র মাসিক ১ টাকা সম্মানীর বিনিময়ে সকাল আটটা থেকে দশটা এবং বিকেল ছয়টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত কাজ করতেন। শুরুতে ক্রীড়া অফিস ঠিক করা, ক্রীড়া সামগ্রি কেনার মতো চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করেছেন। দায়িত্ব গ্রহনের তিন মাস পরেই ঢাকায় ১৩ মে বাংলাদেশ একাদশ ও মোহনাবাগানের মধ্যকার একটি প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। এর ঠিক ছয় মাস পর অবশ্য ইস্ট বেঙ্গলও বাংলাদেশে এসেছিল।

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের অনেক ইতিহাসের সাক্ষী তিনি। ৭২ সালে মিউনিখ অলিম্পিকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব, অলিম্পিক গেমসে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, বাফুফের ফিফা, এএফসি’র সদস্য পদ পাওয়ার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল আনিসুর রহমানের। ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সচিব থাকাবস্থায় ১৮টি ক্রীড়া ফেডারেশন গঠন তার হাতেই।

কাজী আনিসুর রহমান আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদ অলংকৃত করেছেন। ১৯৯৭ সালে স্পেনের বার্সেলোনায় আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)-র ‘স্পোর্টস ফর অল’ সম্মাননা লাভ করেন। ২০০৭ সালে পেয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার।

জনপ্রিয় সংবাদ

স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

দেশের প্রথম ক্রীড়াসচিবের বিদায়

আপডেট সময় : ০৬:৫৬:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৪

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম কুশীলব তিনি। ষাট বা সত্তরের দশকে যার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব পেয়েছিল বাংলাদেশ ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বর্তমানে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ)। দেশের ক্রীড়াঙ্গনে যিনি এক টাকার সচিব নামে পরিচিত সেই কাজী আনিসুর রহমান আজ শুক্রবার দুপুরে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আগামী রোববার সকাল ১১টায় তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে।

দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। বিসিএস ক্যাডার না হয়েও নিজ যোগ্যতায় তৎকালীন ক্রীড়া, শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্ত্রী ইউসুফ আলী এবং প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের হস্তক্ষেপে ১৯৭২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৭৫ সালের ৩১ মার্চ বাংলাদেশ ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থার আহ্বায়ক এবং ১৯৭৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৭৬ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশ ক্রীড়া পরিষদের সচিবের দায়িত্ব পালন করেন।

সেসময় মাত্র মাসিক ১ টাকা সম্মানীর বিনিময়ে সকাল আটটা থেকে দশটা এবং বিকেল ছয়টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত কাজ করতেন। শুরুতে ক্রীড়া অফিস ঠিক করা, ক্রীড়া সামগ্রি কেনার মতো চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করেছেন। দায়িত্ব গ্রহনের তিন মাস পরেই ঢাকায় ১৩ মে বাংলাদেশ একাদশ ও মোহনাবাগানের মধ্যকার একটি প্রীতি ম্যাচের আয়োজন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন। এর ঠিক ছয় মাস পর অবশ্য ইস্ট বেঙ্গলও বাংলাদেশে এসেছিল।

বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের অনেক ইতিহাসের সাক্ষী তিনি। ৭২ সালে মিউনিখ অলিম্পিকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব, অলিম্পিক গেমসে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, বাফুফের ফিফা, এএফসি’র সদস্য পদ পাওয়ার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল আনিসুর রহমানের। ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সচিব থাকাবস্থায় ১৮টি ক্রীড়া ফেডারেশন গঠন তার হাতেই।

কাজী আনিসুর রহমান আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদ অলংকৃত করেছেন। ১৯৯৭ সালে স্পেনের বার্সেলোনায় আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি)-র ‘স্পোর্টস ফর অল’ সম্মাননা লাভ করেন। ২০০৭ সালে পেয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার।