ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেছেন, তহশিল অফিসে বিল্ডিং করা হচ্ছে। যেগুলো হয়নি, সেগুলোও দ্রুত ছাড়ার ব্যবস্থা করবো। কিন্তু আপনাদের খাস জমি রক্ষা ও ব্যবস্থাপনা করতে হবে। খাস জমি যদি আগে থেকে রক্ষা করতে পারি, তাহলে ১০তলা বিল্ডিং ভাঙতে হবে না। আপনারা এগিয়ে আসুন। তৃতীয় পক্ষ (দালাল) যেন ভূমি অফিসে না ঢুকে। আপনারা সাধারণ মানুষকে সহযোগিতা করবেন এবং বলবেন তারা যেন দালালের কাছে না যায়।
গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর কাকরাইলস্থ ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশে বাংলাদেশ ভূমি অফিসার্স কল্যাণ সমিতি আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রীকে সমিতির পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
ভূমিমন্ত্রী বলেন, ভূমির মালিক এক সময় জমিদাররা ছিলেন। এখন জমিদারের পরিবর্তে ভূমির মালিক সরকার। মূলত এখন জনগণই মালিক। কারণ এখন স্থায়ী স্বত্ব দেওয়া হয়েছে। আগে উৎখাত করা যেত, এখন উৎখাত করা যায় না। প্রয়োজনে কিনে নেওয়া যায়, এর জন্য দাম দিতে হয়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী তিনগুণ দামও দিচ্ছেন। স্বত্ব চলে গেছে জনগণের হাতে। দেশের জনগণই ভূমির মালিক। অতএব এর ব্যবস্থাপনা যদি সুষ্ঠু না হয়, তাহলে পুরো জনগোষ্ঠী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে আপনাদের (ভূমি কর্মকর্তা) দায়িত্ব পালনের ওপরই নির্ভর করবে, জনগণ কতটা সন্তুষ্ট থাকছেন। বাংলাদেশের সীমানা জুড়ে যে ভূমি ও সমুদ্র রয়েছে সেগুলো ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতায়। তাই এ মন্ত্রণালয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ মন্ত্রণায়লেয়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নাগরিক জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে পারে।
তিনি আরো বলেন, ভূমি কর্মকর্তাদের নিয়ে অতীতে যে কথাগুলো রয়েছে, সে কথাগুলো থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে। আমরা স্বচ্ছতায় ফিরে যেতে চাই। অনেক পথ আমরা পার হয়েছি। অনেক পরিবর্তনও হয়েছে। নিজেদের ত্রুটির পাশাপাশি এখানে তৃতীয় পক্ষ (দালাল) রয়েছে। যারা মধ্যস্থতা করে অনেক কিছু করে। আমি ৬ বার চেয়ারম্যান ছিলাম। ভূমি বিষয়ে কি কারচুপি তা পুঙ্খানুপুঙ্খ জানি। আমি গরিবদের জমি বন্দবস্ত দিয়েছি। সেই গরিবদের ভুলায়ে ১৫ বছর পর পুরো জমি একটি লোক নিয়ে গেছে। এখানে নায়েব সহযোগিতা করেছে। নায়েব সহযোগিতা না করলে এটা করতে পারতো না। আমাদের এই জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। ভূমি ব্যবস্থাপনা দুর্নীতিমুক্ত হোক।
ই-নাম জারির বিষয়ে তিনি বলেন, এখানেও তৃতীয় পক্ষ হস্তক্ষেপ করছে। এখানেও দুর্নীতি চলছে। এখানে সমস্যা হয়েছে, আমাদের প্রতিটি নাগরিক কম্পিউটার অপারেট করতে পারে না। যার কারণে তারা তৃতীয় পক্ষের কাছে যাচ্ছে। নাগরিকরা যতদিন পর্যন্ত এটা অপারেট করতে পারবে না, ততদিন পর্যন্ত সঠিক সফলতা আসবে না। কিন্তু ১৬-১৭ কোটি নাগরিককে তো ট্রেনিং দেওয়া সম্ভব না। আমরা এজন্য মাঠ পর্যায়ে যাবো। গিয়ে সেখানে প্রচার করতে চাই, যিনি নিজে পারবেন না, তিনি যেন তহশিল অফিস বা ইউনিয়ন পরিষদ বা হাই স্কুলের কম্পিউটার অপারেটরদের সাহায্য নেন। তাহলে স্বচ্ছতা ফিরে আসবে।
সমিতির সভাপতি মো. মোতাহার হোসেন খানের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মো. আসাদুজ্জামানের স্বাগত বক্তব্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মহিউদ্দিন আহমেদ, সমিতির কার্যকরী সভাপতি আবুল হোসেন, প্রধান উপদেষ্টা মো. ফারুক খান, সহ-সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন, মো. নাসির উদ্দিন, মো. মৌদুদুর রহমান কল্লোল ও অর্থ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান।
স/মিফা

























