➤ সপ্তাহের ব্যবধানে গড়ে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে
➤ দাম কমে যাওয়াকে ক্ষণস্থায়ী বলছেন ক্রেতারা
➤ গোশতের বাজার রয়েছে চড়া
কয়েক মাস ধরেই নিত্যপ্রয়োজনীয় বেশিরভাগ পণ্যের দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। পণ্যের দাম ভোক্তার নাগালে রাখতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও তেমন কোনো কাজে আসছে না। তবে সপ্তাহ ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে সব ধরনের সবজি ও পেঁয়াজের দাম কমেছে। তবে ভারি বৃষ্টিপাত ও চাহিদা কমে যাওয়ায় সব ধরনের সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে গড়ে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত সবজির দাম কমেছে। এতে কিছুটা হলেও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে পারছে সাধারণ মানুষ। যদিও এই দাম কমে যাওয়াকে ক্রেতারা ক্ষণস্থায়ী বলছেন। ক্রেতাদের দাবি, আজকে কম দামে পাচ্ছি, এটা আজকের জন্য শান্তি দিচ্ছে। আগামীকাল কী হবে আমরা তা জানি না।
আজকের বাজারে সবজি বিক্রি হচ্ছে তুলনামূলক কম দামে। তবে সবজি কম হলেও গোশতের বাজার রয়েছে চড়া। সরকার গরুর গোশত, মুরগির গোশতের দাম নির্ধারণ করে দিলেও তার কোনো তোয়াক্কাই করছে না বিক্রেতারা। তারা বিভিন্ন অজুহাতে এসব গোশত বিক্রি করছে উচ্চমূল্যে। এদিকে গত সপ্তাহেও সব গরুর গোশতের দোকানে মূল্য তালিকা থাকলেও আজকে কোনো দোকানেই তা দেখা যায়নি। মূল্য তালিকা না থাকার কারণ জানতে চাইলে বিক্রেতাদের উত্তপ্ত উত্তর ‘কোনো মূল্য তালিকা নাই’। শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মগবাজার, মালিবাগ বাজার ঘুরে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এতথ্য জানা গেছে।
চলতি সপ্তাহে এসব বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভারত থেকে আমদানির কারণে সপ্তাহ ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা কমে ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। তবে ভারতীয় পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে গ্রীষ্মকালীন সবজির দামও কিছুটা কমেছে। গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখী ৮০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৭০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকায়, শসা ৮০ টাকা, খিরাই ৬০ টাকা, প্রতিটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ধুন্দুল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, পটোল ৮০ টাকা এবং সজনে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারগুলোতে প্রতি কেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, শিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, ফুলকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা পিস, বাঁধা কপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা পিস, ব্রুকলি ৩০ টাকা পিস, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা এবং আলু ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজারে লেবুর হালি ৩০ থেকে ৭০ টাকা, ধনেপাতা কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, কলা হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া বাজারগুলোতে লাল শাক ১৫ টাকা আঁটি, লাউ শাক ৩০ টাকা, মুলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
গতকাল বাজারে ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৯৫-২১৫ টাকা, কক মুরগি ২৯০-৩১০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০-৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মুরগির লাল ডিম ১২০ টাকা এবং সাদা ডিম ১১৫ টাকা প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে।
নির্ধারিত দামে কেন ব্রয়লার মুরগির গোশত বিক্রি হচ্ছে না জানতে চাইলে বি.বাড়িয়া চিকেন হাউসের বিক্রেতা মো. আমান বলেন, সরকার যে কী দাম নির্ধারণ করে তা আমরা বুঝি না। ১৭৫ টাকা দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, অথচ আমার কেনাই পড়েছে ১৯৪ টাকা। তাহলে আমি ১৭৫ টাকায় কীভাবে বিক্রি করবো? এসময় তিনি তার ক্রয় রসিদও দেখান।
এছাড়া গরুর গোশত কেজি প্রতি ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা, গরুর কলিজা ৭৫০ টাকা, গরুর মাথার মাংস ৪৫০ টাকা, গরুর বট ৩৫০ টাকা এবং খাসির গোশত কেজি প্রতি ১০৫০-১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে এক ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায়, দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা যায়।
এছাড়া আজকের বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী ২০০০-২৮০০ টাকা, রুই মাছ ৪৫০-৫৫০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০-৫৫০ টাকা, কালিবাউশ ৫০০-৮০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৯০০-১৫০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৫০০ টাকা, কৈ মাছ ৬০০-১২০০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০-৬০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-১২০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০-১০০০ টাকা, মেনি মাছ ৫০০-৮০০ টাকা, বেলে মাছ ১২০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৭০০-১২০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ১০০০-১৩০০ টাকা, কাজলী ১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।


























