১১:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে জটিলতার শঙ্কা

⏺পাঁচ ঘণ্টার মিডটার্ম ও চূড়ান্ত পরীক্ষা নিয়ে উৎকণ্ঠায় সংশ্লিষ্টরা
⏺শিক্ষকদের মূল্যায়ন দক্ষতা ও প্রস্তুতি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন

 

 

 

 

নতুন কারিকুলাম চালুর ১৫ মাস পরও এ নিয়ে বিতর্ক ও জটিলতা কাটছেই না। পাঠ্যবইয়ের নানা অসঙ্গতি ও বিতর্কের পর বড় সমস্যা দাঁড়িয়েছে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড-এনসিটিবি। তবে বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের মতামতের ভিত্তিতে মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার যে খসড়া তৈরি করেছে- তা নিয়েও নতুন করে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে পাঁচ ঘণ্টার যে পরীক্ষা বা মূল্যায়ন পদ্ধতির কথা বলা হচ্ছে তা চালু হলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিসহ জটিলতা আরো বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

গত বছর নানা বিতর্ক ও জটিলতার মধ্য দিয়ে তিন শ্রেণিতে (প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম) নতুন কারিকুলামের যাত্রা শুরু হয়। পরীক্ষা ও মুখস্থনির্ভর শিক্ষা থেকে বের হয়ে শিক্ষার্থীদের আনন্দের সঙ্গে পড়ালেখায় উৎসাহী করা এবং কোচিং-প্রাইভেট ও নোট-গাইডে চালু হওয়া এ কারিকুলাম নিয়ে উল্টো বিপাকে পড়ে সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে যথাযথ প্রশিক্ষণ না পাওয়ায় শিক্ষকরা অনেকটা অন্ধকারে শ্রেণি কার্যক্রম চালান। এতে শিক্ষার্থীরা নতুন কারিকুলামের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে বেশ বিপাকে পড়ে। গ্রুপ-ওয়ার্ক ও হোম-ওয়ার্কের নামে চরম ভোগান্তির শিকার হয় শিক্ষার্থীরা। তাদের প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা নিয়েও বিপাকে পড়েন অভিভাবকরা। সর্বোপরি অর্ধ-বার্ষিক ও বার্ষিক মূল্যায়ন নিয়ে বেশ জটিলতা ও বিতর্কের মধ্যেই পার হয় বছর।

 

এদিকে চলতি বছরে আরো চারটি শ্রেণিতে (দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম, নবম) চালু হয়েছে নতুন কারিকুলাম। ফলে ব্যাপক সংখ্যক শিক্ষার্থীকে নতুন এই পদ্ধতির লেখাপড়ার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। যে পদ্ধতি সম্পর্কে শ্রেণি শিক্ষকের পাশাপাশি, কোচিং-প্রাইভেট ও অভিভাবকরা খুব বেশি আয়ত্ত করতে পারেননি। যে কারণে কারিকুলাম এক হলেও দেশের একেক এলাকায়, একেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার তেমন কোনো মিল নেই। যে যেভাবে, যতটুকু বুঝতে পারছে সেভাবেই নতুন বইপড়া, হোম ও ব্যক্তিগত কাজ করছে শিক্ষার্থীরা।

 

বিশেষ করে নতুন বছরের তিন মাস পার হলেও এখনো মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে অন্ধকারে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

অবশ্য নতুন শিক্ষাক্রম চালুর পর থেকে প্রতিটি ক্লাসে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশা পরিপ্রেক্ষিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে সমন্বয় কমিটি করে সরকার। এরই মধ্যে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে খসড়া নিয়ম চূড়ান্ত করেছে এনসিটিবি।
জানা গেছে, শিক্ষা বোর্ডগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে খসড়াটি করা হয়েছে। সে অনুযায়ী, আগের পদ্ধতিতে আর পরীক্ষা হবে না। এটিকে মূল্যায়ন বলা হচ্ছে। আগে তিন ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা হলেও নতুন মূল্যায়ন প্রক্রিয়া ভিন্ন হচ্ছে।

 

নতুন কারিকুলাম চালুর পর আগের মতো পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ছিল। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও উদ্বেগে ছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, গত ২৪ মার্চ মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে সভা হয়েছে। পরে সভা করে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

 

জানা গেছে, নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতির পরীক্ষায় মার্কিং নিয়ম থাকবে না। রিপোর্টিং ভালো, অর্জনের পথে এবং প্রাথমিক পর্যায়- এমন তিনভাগে ফলাফল হবে। চতুর্থ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মিডটার্ম ও ফাইনাল পরীক্ষা হবে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবে চূড়ান্ত পরীক্ষার মাধ্যমে।

 

 

 

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১০টি সাধারণ বিষয় পড়তে হবে। এসএসসি পরীক্ষা হবে দশম শ্রেণির পাঠ্যক্রমের ওপর। আর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রতি বছর পাবলিক পরীক্ষা হবে। গত বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছে। চলতি বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে এবং আগামী বছর চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে চালু হবে এ নিয়ম। এর আলোকে ২০২৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা হবে।

 

খসড়া অনুযায়ী, প্রতিটি মিডটার্ম ও চূড়ান্ত পরীক্ষা পাঁচ ঘণ্টার হবে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হবে অন্য কেন্দ্রে। আর চতুর্থ থেকে নবম শ্রেণির পরীক্ষা হবে নিজ স্কুলে। এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চলবে। এতে ছয়টি সেশন থাকবে। চার ঘণ্টা থাকবে ব্যবহারিক। মিডটার্ম ও বার্ষিক চূড়ান্ত পরীক্ষায় সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে নতুন কারিকুলামের আলোকে।

 

 

চলতি বছরের জুন মাস থেকেই এ প্রক্রিয়ায় মূল্যায়ন হবে স্কুলে। এর আগেই সব চূড়ান্ত হবে জানিয়ে এনসিটিবির সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেছেন, অভিজ্ঞ শিক্ষাবিদদের নিয়ে খসড়া করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন।
নতুন কারিকুলাম ও এর মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির কো-চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম ভালো। তবে এটি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন আছে। যারা এর প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তারাই সঠিকভাবে আয়ত্ত করতে পারেননি। এসব সমস্যার সমাধান সরকারকেই করতে হবে। শিক্ষকদের প্রস্তুতির পাশাপাশি নজরদারি করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দেশে শিক্ষানীতি হলেও আজও শিক্ষা আইন না হওয়া এবং স্থায়ী শিক্ষা কমিশন না থাকায় নানা সমস্যার সমাধানে জটিলতা দেখা দিচ্ছে।

 

 

বিশিষ্ট শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ড. মনজুর আহমদ বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন আছে। শিক্ষকরাও অনেকাংশে এটা বুঝতে পারছেন না। তাছাড়া শিক্ষার বিভিন্ন বিষয়ে কর্মকর্তারাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে গবেষকদের যুক্ত করা হচ্ছে কি না- প্রশ্ন আছে। এতে শিক্ষাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হচ্ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে সামান্তা শারমিনের নতুন বার্তা

মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে জটিলতার শঙ্কা

আপডেট সময় : ০৪:৩০:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ এপ্রিল ২০২৪

⏺পাঁচ ঘণ্টার মিডটার্ম ও চূড়ান্ত পরীক্ষা নিয়ে উৎকণ্ঠায় সংশ্লিষ্টরা
⏺শিক্ষকদের মূল্যায়ন দক্ষতা ও প্রস্তুতি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন

 

 

 

 

নতুন কারিকুলাম চালুর ১৫ মাস পরও এ নিয়ে বিতর্ক ও জটিলতা কাটছেই না। পাঠ্যবইয়ের নানা অসঙ্গতি ও বিতর্কের পর বড় সমস্যা দাঁড়িয়েছে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মূল্যায়ন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড-এনসিটিবি। তবে বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের মতামতের ভিত্তিতে মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার যে খসড়া তৈরি করেছে- তা নিয়েও নতুন করে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে পাঁচ ঘণ্টার যে পরীক্ষা বা মূল্যায়ন পদ্ধতির কথা বলা হচ্ছে তা চালু হলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিসহ জটিলতা আরো বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

গত বছর নানা বিতর্ক ও জটিলতার মধ্য দিয়ে তিন শ্রেণিতে (প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম) নতুন কারিকুলামের যাত্রা শুরু হয়। পরীক্ষা ও মুখস্থনির্ভর শিক্ষা থেকে বের হয়ে শিক্ষার্থীদের আনন্দের সঙ্গে পড়ালেখায় উৎসাহী করা এবং কোচিং-প্রাইভেট ও নোট-গাইডে চালু হওয়া এ কারিকুলাম নিয়ে উল্টো বিপাকে পড়ে সংশ্লিষ্টরা। বিশেষ করে যথাযথ প্রশিক্ষণ না পাওয়ায় শিক্ষকরা অনেকটা অন্ধকারে শ্রেণি কার্যক্রম চালান। এতে শিক্ষার্থীরা নতুন কারিকুলামের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে বেশ বিপাকে পড়ে। গ্রুপ-ওয়ার্ক ও হোম-ওয়ার্কের নামে চরম ভোগান্তির শিকার হয় শিক্ষার্থীরা। তাদের প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করা নিয়েও বিপাকে পড়েন অভিভাবকরা। সর্বোপরি অর্ধ-বার্ষিক ও বার্ষিক মূল্যায়ন নিয়ে বেশ জটিলতা ও বিতর্কের মধ্যেই পার হয় বছর।

 

এদিকে চলতি বছরে আরো চারটি শ্রেণিতে (দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম, নবম) চালু হয়েছে নতুন কারিকুলাম। ফলে ব্যাপক সংখ্যক শিক্ষার্থীকে নতুন এই পদ্ধতির লেখাপড়ার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। যে পদ্ধতি সম্পর্কে শ্রেণি শিক্ষকের পাশাপাশি, কোচিং-প্রাইভেট ও অভিভাবকরা খুব বেশি আয়ত্ত করতে পারেননি। যে কারণে কারিকুলাম এক হলেও দেশের একেক এলাকায়, একেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার তেমন কোনো মিল নেই। যে যেভাবে, যতটুকু বুঝতে পারছে সেভাবেই নতুন বইপড়া, হোম ও ব্যক্তিগত কাজ করছে শিক্ষার্থীরা।

 

বিশেষ করে নতুন বছরের তিন মাস পার হলেও এখনো মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে অন্ধকারে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

অবশ্য নতুন শিক্ষাক্রম চালুর পর থেকে প্রতিটি ক্লাসে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশা পরিপ্রেক্ষিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে সমন্বয় কমিটি করে সরকার। এরই মধ্যে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে খসড়া নিয়ম চূড়ান্ত করেছে এনসিটিবি।
জানা গেছে, শিক্ষা বোর্ডগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে খসড়াটি করা হয়েছে। সে অনুযায়ী, আগের পদ্ধতিতে আর পরীক্ষা হবে না। এটিকে মূল্যায়ন বলা হচ্ছে। আগে তিন ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা হলেও নতুন মূল্যায়ন প্রক্রিয়া ভিন্ন হচ্ছে।

 

নতুন কারিকুলাম চালুর পর আগের মতো পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ছিল। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও উদ্বেগে ছিলেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, গত ২৪ মার্চ মূল্যায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে সভা হয়েছে। পরে সভা করে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

 

জানা গেছে, নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতির পরীক্ষায় মার্কিং নিয়ম থাকবে না। রিপোর্টিং ভালো, অর্জনের পথে এবং প্রাথমিক পর্যায়- এমন তিনভাগে ফলাফল হবে। চতুর্থ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মিডটার্ম ও ফাইনাল পরীক্ষা হবে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবে চূড়ান্ত পরীক্ষার মাধ্যমে।

 

 

 

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী, ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১০টি সাধারণ বিষয় পড়তে হবে। এসএসসি পরীক্ষা হবে দশম শ্রেণির পাঠ্যক্রমের ওপর। আর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে প্রতি বছর পাবলিক পরীক্ষা হবে। গত বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হয়েছে। চলতি বছর দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে এবং আগামী বছর চতুর্থ, পঞ্চম ও দশম শ্রেণিতে চালু হবে এ নিয়ম। এর আলোকে ২০২৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা হবে।

 

খসড়া অনুযায়ী, প্রতিটি মিডটার্ম ও চূড়ান্ত পরীক্ষা পাঁচ ঘণ্টার হবে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা হবে অন্য কেন্দ্রে। আর চতুর্থ থেকে নবম শ্রেণির পরীক্ষা হবে নিজ স্কুলে। এক ঘণ্টা বিরতি দিয়ে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চলবে। এতে ছয়টি সেশন থাকবে। চার ঘণ্টা থাকবে ব্যবহারিক। মিডটার্ম ও বার্ষিক চূড়ান্ত পরীক্ষায় সামষ্টিক মূল্যায়ন হবে। ধারাবাহিক মূল্যায়ন হবে নতুন কারিকুলামের আলোকে।

 

 

চলতি বছরের জুন মাস থেকেই এ প্রক্রিয়ায় মূল্যায়ন হবে স্কুলে। এর আগেই সব চূড়ান্ত হবে জানিয়ে এনসিটিবির সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বলেছেন, অভিজ্ঞ শিক্ষাবিদদের নিয়ে খসড়া করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন।
নতুন কারিকুলাম ও এর মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা করে জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির কো-চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম ভালো। তবে এটি বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন আছে। যারা এর প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তারাই সঠিকভাবে আয়ত্ত করতে পারেননি। এসব সমস্যার সমাধান সরকারকেই করতে হবে। শিক্ষকদের প্রস্তুতির পাশাপাশি নজরদারি করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, দেশে শিক্ষানীতি হলেও আজও শিক্ষা আইন না হওয়া এবং স্থায়ী শিক্ষা কমিশন না থাকায় নানা সমস্যার সমাধানে জটিলতা দেখা দিচ্ছে।

 

 

বিশিষ্ট শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ড. মনজুর আহমদ বলেন, নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন আছে। শিক্ষকরাও অনেকাংশে এটা বুঝতে পারছেন না। তাছাড়া শিক্ষার বিভিন্ন বিষয়ে কর্মকর্তারাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এক্ষেত্রে গবেষকদের যুক্ত করা হচ্ছে কি না- প্রশ্ন আছে। এতে শিক্ষাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হচ্ছে।