০৯:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জনগণের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে বিজিবি

➤ সীমান্ত রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধে ব্যাপক সাফল্য
➤ ১৫ বছরে ১২,৫৯২ কোটি টাকার চোরাচালানি মালামাল আটক
➤ আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হয়েছে
➤বর্ডার গার্ডের নতুন পথচলা শুরু ২০১১ সালের ২৬ জানুয়ারি

 

 

‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে খ্যাত ২২৮ বছরের ঐতিহ্যবাহী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জাতির গৌরব ও আস্থার প্রতীক। বিজিবি’র রয়েছে সুদীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ইতিহাস। মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা এ বাহিনীর অনুপ্রেরণার উৎস। ২০০৯ সালে সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের পর বাহিনী পুনর্গঠিত হয়। ২০১০ সালের ৮ ডিসেম্বর মহান জাতীয় সংসদে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন ২০১০ পাস হয়, যা ২০ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়। ২০১১ সালের ২৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-এর নতুন পতাকা উত্তোলন এবং মনোগ্রাম উন্মোচনের মধ্য দিয়ে এ বাহিনীর নতুন পথচলা শুরু হয়। সরকারের যুগান্তকারী উন্নয়ন ও কল্যাণমূলক কর্মকান্ডের ফলে বিগত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৩ সাল পর্যন্ত) এ বাহিনীর শৃঙ্খলা, মনোবল, দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের উৎকর্ষ বৃদ্ধি পেয়ে বিজিবি আজ জনগণের আস্থার প্রতীক হিসেবে পরিণত হয়েছে।

 

১৫ বছরের সাফল্য নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চোরাচালান প্রতিরোধে ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে বিজিবি। সীমান্ত এলাকা দিয়ে মাদকদ্রব্য অনুপ্রবেশ বন্ধে সরকারের দিকনির্দেশনার প্রেক্ষিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর আন্তরিক প্রচেষ্টায় সার্বক্ষণিক টহল কার্যক্রম পরিচালনা, ব্যাপক তল্লাশী এবং নজরদারি বৃদ্ধির ফলে গত ১৫ বছরের বিজিবি’র অভিযানে ৪,৪৬,৯৯০ টি মামলা দায়ের এবং ৩৬,৩১১ জন ধৃত আসামীকে আটকসহ সর্বমোট ১২,৫৯২ কোটি ৫০ লাখ ৬০ হাজার ৪৮২ টাকা মূল্যের অবৈধ চোরাচালানি মালামাল আটক করা হয়েছে। উদ্ধার করা জিনিসের মধ্যে রয়েছে স্বর্ণ, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র। এছাড়া মানবপাচারে জড়িতদের আটক ও সংশ্লিষ্টদের উদ্ধার করা হয়েছে।

 

প্রতিবেদন সূত্রমতে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তের ৩২৮ কিমি. স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্ত চিহ্নিত করে ‘বর্ডার সার্ভিল্যান্স এন্ড রেসপন্স সিস্টেম’ স্থাপনা সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়াও টেকনাফ এবং কক্সবাজার সীমান্তে ৫৫ কিমি., নওগাঁ জেলার হাঁপানিয়া-করমুডাংগা সীমান্তে ১০ কিমি., চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মাসুদপুর-জহুরপুরটেক সীমান্ত পর্যন্ত ১৫ কিমি. সর্বমোট ৮০ কিমি. এলাকায় বর্ডার সার্ভিল্যান্স এন্ড রেসপন্স সিস্টেম স্থাপনের কার্যক্রম চলমান।

দৈনন্দিন দাপ্তরিক ও প্রশাসনিক কাজকে সহজ করার লক্ষে বিজিবি’র নিজস্ব মেইল সার্ভার, অ্যাক্টিভ ডিরেক্টরী ও এক্সচেঞ্জ মেইল সার্ভারসহ অন্যান্য সার্ভার ‘র‌্যাক’ বেজড হতে এইচসিআই এ আপগ্রেডেশন করায় বিজিবি’র সব অনলাইন অটোমেটিক কার্যক্রম অনেক বেগবান ও সুরক্ষিত হয়েছে।

 

সীমান্তে বিজিবি’র সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নজরদারি জোরদার করার জন্য ২৪৫টি নতুন বিওপি সৃজন এবং সীমান্ত হতে অধিক দূরত্বে স্থাপিত ১২৩টি বিওপি সীমান্তের সন্নিকটে স্থানান্তরের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও বিগত ১৫ বছরে নতুনভাবে ১৫৯টি বিওপি সৃজন করা হয়েছে। ২৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নবসৃজিত নারায়ণগঞ্জে ৬২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের কার্যক্রম চলমান
ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে ৫৩৯ কিমি. অরক্ষিত সীমান্ত এলাকায় নতুন ৬২টি বিওপি নির্মাণের মাধ্যমে ৪১২.৫ কিমি. সীমান্ত এরই মধ্যে নজরদারিতে আনা হয়েছে। এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্ত এলাকায় ২০টি বিওপি এবং সুন্দরবন এলাকায় ২টি ভাসমান বিওপি স্থাপনের মাধ্যমে অবশিষ্ট অরক্ষিত সীমান্ত সুরক্ষার কার্যক্রম চলমান।

 

লাকসাম-আখাউড়া রেলওয়ে প্রকল্পের ২টি স্থান (কসবা ও সালদানদী স্টেশন) সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে হওয়ায় ১২ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখ হতে উভয় দেশের মধ্যে অমীমাংসিত যা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিজিবি’র উদ্যোগ ও সমন্বয় সর্বক্ষেত্রে প্রশংসিত হয়েছে। পরবর্তীতে গত ২০ জুলাই ২০২৩ তারিখে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক লাকসাম-আখাউড়া ৭২ কিলোমিটার ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণকাজের শুভ উদ্বোধন করেন।
দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রবহমান ফেনী নদীর ১৯টি স্থানে তীর সংরক্ষণমূলক কাজ উভয় দেশের মধ্যে অমীমাংসিত ছিল। বিএসএফ এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সাথে কূটনৈতিক পর্যায়ে অব্যাহত যোগাযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ মার্চ ২০২৩ তারিখ ফেনী নদীর ১০টি স্থানের তীর সংরক্ষণমূলক কাজ সম্মতির পরিপ্রেক্ষিতে চলমান রয়েছে।

 

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ কর্তৃক বর্ডার অবজারভেশন পোস্টে নতুন করে এরিয়াল মাস্ট টাওয়ার স্থাপন করায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। ফলে বিজিবি সদস্যদের চোরাচালান ও অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনার সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

দুর্গম পার্বত্য এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বিহীন প্রত্যন্ত বিওপি’তে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ভি-স্যাট প্রযুক্তির মাধ্যমে কর্মরত বিজিবি সদস্যগণ তাদের পরিবারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য ইন্টারনেট সেবা এবং টেলিফোন সুবিধা সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
‘রিপোর্ট টু বিজিবি’ অ্যাপের মাধ্যমে জনসাধারণ কর্তৃক পাঠানো তথ্য যাচাই বাছাই করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে সীমান্ত সুরক্ষা, চোরাচালানসহ যে কোনো সীমান্ত অপরাধ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিজিবি দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণসহ দেশের সকল পর্যায়ের জনসাধারণকে সেবা প্রদান করছে। এছাড়াও, আইডিআইএম সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিজিবির দৈনন্দিন কার্যক্রম দ্রুততার ও নির্ভুলতার সঙ্গে করা সম্ভব হচ্ছে।

 

দৈনন্দিন দাপ্তরিক ও প্রশাসনিক কাজকে সহজ করার লক্ষ্যে বিজিবি’র নিজস্ব মেইল সার্ভার স্থাপন এবং বিজিবি’র সকল গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগধারীর অনুকূলে অফিসিয়াল মেইল অ্যাড্রেস বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়াও জাতীয় ওয়েব পোর্টালে বিজিবি’র ওয়েবসাইট হালনাগাদ তথ্য সন্নিবেশ করা হয়েছে।

‘ভিডিও টেলিকনফারেন্স’ সিস্টেম ও মাইক্রোসফট টিমস্ সফট্ওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইন মিটিং, কনফারেন্স, চ্যাটিং, ফাইল শেয়ারিং এবং অনলাইন স্টোরেজসহ অন্যান্য সুবিধা ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে কমান্ডারগণের কনফারেন্সের জন্য সীমান্ত ছেড়ে সদর দপ্তরে আসার প্রয়োজনীয়তা বহুলাংশে হ্রাস পাওয়ায় সরকারি অর্থ ও সময় সাশ্রয় সম্ভব হচ্ছে।

বিজিবি’র নিয়োগ পদ্ধতিতে আধুনিকায়ন এবং স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে ‘ওয়েব বেজড ই-রিক্রুটমেন্ট’ সফটওয়্যার প্রণয়ন করা হয়েছে।

 

বিজিবির সব রিজিয়ন, সেক্টর ও ব্যাটালিয়নগুলোয় ইন্টারনেট সংযোগ সম্প্রসারণ করায় প্রযুক্তি খাতে বিজিবি অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এছাড়াও সীমান্তে যে কোনো দুর্ঘটনা/অপরাধ সংঘটিত হলে দ্রুততার সঙ্গে সদর দপ্তরকে অবগত করা সম্ভব হচ্ছে।
ডাটা সেন্টারের সঙ্গে ডিআর সাইট এর সংযাগ ব্যবস্থাকে আরো উন্নত, গতিশীল ও কাঠামোবদ্ধ করা হয়েছে। যার ফলে পিলখানাস্থ ডাটা সেন্টারের সকল ডাটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে যশোর ডিআর সাইটে রক্ষিত হওয়ায় মাধ্যমে ডাটা সুরক্ষা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। রেডিও লিংক এর পরিবর্তে ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল স্থাপনের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যমান বিজিবি’র নানাবিধ স্থাপনাসমূহের সাথে উন্নত যোগাযোগের ব্যবস্থা স্থাপিত হয়েছে।

বর্ডার গার্ড টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, দ্বিগরাজ, খুলনায় সিগন্যাল পেশার কোর্সসমূহ পরিচালনার জন্য নতুনভাবে প্রশিক্ষণ শেড নির্মাণ করা হয়েছে ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে।

 

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রতিটি বিওপিতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য সোলার প্যানেল বরাদ্দ করা হয়েছে। বর্ডার গার্ড টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, দ্বিগরাজ, খুলনায় সিগন্যাল সম্পর্কিত কোর্সসমূহ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নতুনভাবে ১টি আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব তৈরী করা হয়েছে।

 

বিজিবির আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার অংশ হিসেবে এইচএফ সেট, ইউএইচএফ, ভিএইচএফ (এনালগ) এবং ইউএইচএফ, ভিএইচএফ (ডিএমআর) সংযোজনের ফলে দূর্গম পার্বত্যঞ্চল ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের সীমান্তবর্তী বিওপিসমূহের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। এতে বিজিবির অপারেশনাল সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ কর্তৃক সীমান্তে গুরুত্বপূর্ণ আইসিপি গুলোতে সার্ভিল্যান্স সিস্টেম ক্যামেরা স্থাপনের ফলে সীমান্তে চোরাচালান দমন, সীমান্ত নজরদারি এবং অপারেশনাল কার্যক্রম তরান্বিত করা হয়েছে। বিজিবি এয়ার উইং এর সৈনিকদের আবাসন সমস্যা নিরসনকল্পে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে একটি একতলা সেমি পাকা সৈনিক ব্যারাক নির্মাণ করা হয়েছে।

সীমান্তের সার্বিক সুরক্ষা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার নিমিত্তে বিজিবি’র জন্য সম্মুখ যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ১৪টি এটিজিএম সংযোজিত হয়েছে। এছাড়াও ৪০ টি ‘অ্যালকোটান’ অস্ত্র ক্রয়ের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

 

প্রতিবেদনে সীমান্ত সড়ক নির্মাণ কার্যক্রম প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্ত সুরক্ষায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ১০৩৬ কিঃ মিঃ সীমান্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিজিবি’র সার্বিক নিরাপত্তা সহায়তায় প্রথম পর্বে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলায় ৩১৭ কিঃ মিঃ নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী সীমান্ত সড়ক নির্মাণের অংশ হিসেবে ১ম পর্বে নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ জেলায় সীমান্ত সড়কের সার্ভে কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

মায়ানমার কর্তৃক সৃষ্ট সঙ্কট ও সাম্প্রতিক সময়ের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ১২টি আর্মাড পার্সোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) এবং ১০টি রায়ট কন্ট্রোল ভেহিক্যাল সংযোজিত হয়েছে।

 

ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত করার লক্ষ্যে ১৫ বছরে বিজিবি’তে মোটরযান/জলযান বাড়ানো হয়েছে। নতুন সংযোজিত মোটরযান/জলযানের মধ্যে রয়েছে-সিডান কার ১৯টি, মোটর সাইকেল- ১৮০টি, জিপ ২১৮টি, এটিভি (জাগুয়ার) ৩২টি, মাইক্রোবাস- ৩টি, হাইস্পীড ইঞ্জিন বোট ১২টি, বাস – ১৯টি, স্পীড বোট – ৪টি, পিকআপ (ডাবল কেবিন)- ৩৬১টি, পন্টুন ৩টি এবং ট্রাক- ১৪৬টি।

 

দেশের স্পর্শকাতর ও অধিক চোরাচালান প্রবণ এলাকায় স্মার্ট ডিজিটাল সার্ভেইল্যান্স এন্ড ট্যাকটিকাল রেসপন্স সিস্টেম এর আওতায় ২৫৯টি অষষ ঞবৎৎধরহ ঠবযরপষব (অঞঠ) সংযোজিত হয়েছে। ফলে বিজিবি’র টহল/অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনায় গতিশীলতা পূর্বের তুলনায় বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

বিজিবি এয়ার উইংয়ের জন্য শাহ্ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম এ ৫০ হাজার বর্গফুট এলাকা বিজিবির জন্য বরাদ্দ নিয়ে একটি অত্যাধুনিক হ্যাংগার নির্মাণ করা হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্পর্শকাতর নদী সীমান্ত এলাকায় মানব পাচার, অবৈধ অনুপ্রবেশ, ইয়াবা, মাদক ও অবৈধ অস্ত্র চোরাচালানের অপতৎপরতা প্রতিরোধের জন্য ৪টি এয়ার বোট সংযোজিত হয়েছে।

 

২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি হতে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত মোট ১৮৫টি বিওপি নির্মানের পাশাপাশি ৭৩টি কম্পোজিট বিওপিসহ ১৫টি সাইক্লোন সেন্টার টাইপ বিওপি নির্মাণ করা হয়েছে। একইসময়ে সীমান্তে ২৯টি বিওপিতে বিদ্যুৎ সংযোগ ও সৌরশক্তির মাধ্যমে ১৬৮টি বিওপিতে বিদ্যুতায়ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

 

১ জুলাই ২০১৭ হতে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত বিজিবি সদস্য ও খেলোয়ারসহ সর্বস্তরের খেলার মান উন্নয়নের জন্য একটি আধুনিক ইনডোর স্টেডিয়াম (মাল্টি জিমসহ) নির্মাণ করা হয়েছে।

 

 

বর্ডার গার্ড হাসপাতাল ঢাকায় মেডিসিন, সার্জারি, অর্থোপেডিকস, নেফ্রোলজি, নিউরোলজি, অনকোলজি এবং কার্ডিওলজি এর মতো আধুনিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ১০ তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট ডিসপেনসারী এবং ফিজিওথেরাপি সেন্টারের সমন্বয়ে একটি বহির্বিভাগ ভবন নির্মানের অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে।

 

 

সূত্রমতে, সম্প্রতি বিজিবি’র মিডিয়া ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় অত্যাধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তি ও আধুনিক সুবিধা সম্বলিত একটি সুসজ্জিত “বিজিবি মিডিয়া মনিটরিং সেল” স্থাপন করা হয়েছে। মিডিয়া হতে প্রাপ্ত সংবাদ বা তথ্যসমূহ যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনার মাধ্যমে আভিযানিক কার্যক্রম আরও বেগবান হয়েছে।

 

বিজিবি সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য পূর্বে বায়তুল ইজ্জত, চট্টগ্রামে বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজ নামে একটি মাত্র প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ছিল। বিগত ১৫ বছরের মধ্যে নতুন করে ৪টি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও বর্ডার গার্ড টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, দ্বিগরাজ, খুলনায় অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।

 

বিজিবি’র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন হয়েছে। মানব সম্পদ উন্নয়নের অংশ হিসেবে বিগত ১৫ বছরে বিজিবি’র ব্যবস্থাপনায় নতুন ২টি কলেজসহ ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এছাড়াও একটি উচ্চ বিদ্যালয়কে কলেজ পর্যায়ে এবং ৩ টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে উন্নীত করা হয়েছে।

 

 

সমাজের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য ২২ মে ২০১৭ তারিখে পিলখানার অভ্যন্তরে ” এ স্কুল অব স্পেশাল লার্নিং’ শ্লোগানকে সামনে রেখে ‘দীপ্ত সীমান্ত’ বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

বিজিবি সদস্যদের সন্তানদের ঢাকার বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার সুবিধার্থে ২০১১ সালে পিলখানার পার্শ্ববর্তী হাতিরঘাটে ৫তলা বিশিষ্ট আধুনিক ছাত্রাবাস এবং ২০১৪ সালে পিলখানার অভ্যন্তরে ৫তলা বিশিষ্ট একটি ছাত্রীনিবাস নির্মাণ করা হয়েছে। বিজিবি সদর দপ্তরে অফিসার, জুনিয়র কর্মকর্তা ও অন্যান্য পদবীধারী সদস্যদের জন্য ২টি ১৫ তলা এবং ১টি ১০তলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
বিজিবি সদস্যদের জন্য ২০১৩ সালে পূর্ণাঙ্গ রেশন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। এছাড়া ৩ বছরের নিচের শিশু সন্তান এবং প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্য রেশন প্রদানের কার্যক্রম প্রবর্তন করা হয়েছে। বিজিবি সদস্যদের সর্বদা সীমান্ত রক্ষা, চোরাচালান দমন, নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করতে হয়। উক্ত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য রায়োট কন্ট্রোল আইটেম সংযোজন করা হয়েছে।

 

বিজিবি সদস্যদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য আর্থিক লেনদেনের সুবিধার্থে ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক সীমান্ত ব্যাংকের উদ্বোধনের মাধ্যমে ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বর্তমানে দেশব্যপী সীমান্ত ব্যাংকের ১৯টি শাখার মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এ বর্তমানে অথবা পূর্বে কর্মরত অফিসার, জুনিয়র কর্মকর্তা ও অন্যান্য পদবীর সৈনিক এবং অসামরিক কর্মচারীদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য কল্যাণ মূলক কার্যাবলি পরিচালনার লক্ষ্যে বিজিবি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট গঠন করা হয়।
প্রতিটি ওয়ার্ড/বিভাগে রোগীদের তথ্য সংরক্ষন, প্রেসক্রিপশন ইত্যাদি ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রদানের লক্ষ্যে ‘এইচআইএমএস’ সন্নিবেশ করা হয়েছে।

 

বিজিবি সদস্যদের চিকিৎসা সেবার আধুনিকায়নে বর্ডার গার্ড হাসপাতাল, ঢাকায় ৬টি মেশিন দ্বারা ডায়ালাইসিস সেন্টার এবং সিসিইউ স্থাপন করা হয়েছে। করোনা আক্রান্ত জটিল রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কোভিড আইসিইউতে ৬টি মেশিন দ্বারা ডায়ালাইসিস এবং ৪ টি সিসিইউ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের রোগ সনাক্ত করার জন্য অত্যাধুনিক এমআরআই মেশিন স্থাপন করা হয়েছে।

 

হৃদরোগে আক্রান্ত বিজিবি সদস্যদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য বর্ডার গার্ড হাসপাতাল ঢাকায় ক্যাথ ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও বিজিবি হাসপাতাল কর্তৃক বিভিন্ন স্থানে বিজিবি সদস্য, তাদের পরিবারবর্গ এবং জনসাধারণের মাঝে করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।
২০১০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত চারটি ক্যাটাগরিতে বিজিবি থেকে ৭০৬ টি পদক প্রদান করা হয়েছে।

 

“বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১” কর্ম পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে- ১৫ হাজার নতুন পদ সৃজন, দুটি রিজিয়ন সদর দপ্তর, ৩টি সেক্টর সদর দপ্তর, ২২টি বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন, একটি গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, একটি স্টেশন সদর দপ্তর, একটি বর্ডার গার্ড হাসপাতাল, একটি সীমান্ত মেডিক্যাল কলেজ, একটি কে-নাইন ইউনিট এন্ড ট্রেনিং সেন্টার, একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ৬টি লজিস্টিক বেইজ
দুটি রিজিয়নাল ইন্টেলিজেন্স এবং একটি রিজার্ভ ব্যাটালিয়ন প্রস্তুত করা।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

আজ বাবার কবর জিয়ারত ও স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানাবেন তারেক রহমান, মসজিদে হবে দোয়া

জনগণের আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়েছে বিজিবি

আপডেট সময় : ০২:৩০:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল ২০২৪

➤ সীমান্ত রক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধে ব্যাপক সাফল্য
➤ ১৫ বছরে ১২,৫৯২ কোটি টাকার চোরাচালানি মালামাল আটক
➤ আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হয়েছে
➤বর্ডার গার্ডের নতুন পথচলা শুরু ২০১১ সালের ২৬ জানুয়ারি

 

 

‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে খ্যাত ২২৮ বছরের ঐতিহ্যবাহী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জাতির গৌরব ও আস্থার প্রতীক। বিজিবি’র রয়েছে সুদীর্ঘ ও সমৃদ্ধ ইতিহাস। মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা এ বাহিনীর অনুপ্রেরণার উৎস। ২০০৯ সালে সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের পর বাহিনী পুনর্গঠিত হয়। ২০১০ সালের ৮ ডিসেম্বর মহান জাতীয় সংসদে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন ২০১০ পাস হয়, যা ২০ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়। ২০১১ সালের ২৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-এর নতুন পতাকা উত্তোলন এবং মনোগ্রাম উন্মোচনের মধ্য দিয়ে এ বাহিনীর নতুন পথচলা শুরু হয়। সরকারের যুগান্তকারী উন্নয়ন ও কল্যাণমূলক কর্মকান্ডের ফলে বিগত ১৫ বছরে (২০০৯-২০২৩ সাল পর্যন্ত) এ বাহিনীর শৃঙ্খলা, মনোবল, দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের উৎকর্ষ বৃদ্ধি পেয়ে বিজিবি আজ জনগণের আস্থার প্রতীক হিসেবে পরিণত হয়েছে।

 

১৫ বছরের সাফল্য নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চোরাচালান প্রতিরোধে ব্যাপক সাফল্য দেখিয়েছে বিজিবি। সীমান্ত এলাকা দিয়ে মাদকদ্রব্য অনুপ্রবেশ বন্ধে সরকারের দিকনির্দেশনার প্রেক্ষিতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর আন্তরিক প্রচেষ্টায় সার্বক্ষণিক টহল কার্যক্রম পরিচালনা, ব্যাপক তল্লাশী এবং নজরদারি বৃদ্ধির ফলে গত ১৫ বছরের বিজিবি’র অভিযানে ৪,৪৬,৯৯০ টি মামলা দায়ের এবং ৩৬,৩১১ জন ধৃত আসামীকে আটকসহ সর্বমোট ১২,৫৯২ কোটি ৫০ লাখ ৬০ হাজার ৪৮২ টাকা মূল্যের অবৈধ চোরাচালানি মালামাল আটক করা হয়েছে। উদ্ধার করা জিনিসের মধ্যে রয়েছে স্বর্ণ, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র। এছাড়া মানবপাচারে জড়িতদের আটক ও সংশ্লিষ্টদের উদ্ধার করা হয়েছে।

 

প্রতিবেদন সূত্রমতে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তের ৩২৮ কিমি. স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্ত চিহ্নিত করে ‘বর্ডার সার্ভিল্যান্স এন্ড রেসপন্স সিস্টেম’ স্থাপনা সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়াও টেকনাফ এবং কক্সবাজার সীমান্তে ৫৫ কিমি., নওগাঁ জেলার হাঁপানিয়া-করমুডাংগা সীমান্তে ১০ কিমি., চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মাসুদপুর-জহুরপুরটেক সীমান্ত পর্যন্ত ১৫ কিমি. সর্বমোট ৮০ কিমি. এলাকায় বর্ডার সার্ভিল্যান্স এন্ড রেসপন্স সিস্টেম স্থাপনের কার্যক্রম চলমান।

দৈনন্দিন দাপ্তরিক ও প্রশাসনিক কাজকে সহজ করার লক্ষে বিজিবি’র নিজস্ব মেইল সার্ভার, অ্যাক্টিভ ডিরেক্টরী ও এক্সচেঞ্জ মেইল সার্ভারসহ অন্যান্য সার্ভার ‘র‌্যাক’ বেজড হতে এইচসিআই এ আপগ্রেডেশন করায় বিজিবি’র সব অনলাইন অটোমেটিক কার্যক্রম অনেক বেগবান ও সুরক্ষিত হয়েছে।

 

সীমান্তে বিজিবি’র সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নজরদারি জোরদার করার জন্য ২৪৫টি নতুন বিওপি সৃজন এবং সীমান্ত হতে অধিক দূরত্বে স্থাপিত ১২৩টি বিওপি সীমান্তের সন্নিকটে স্থানান্তরের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও বিগত ১৫ বছরে নতুনভাবে ১৫৯টি বিওপি সৃজন করা হয়েছে। ২৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নবসৃজিত নারায়ণগঞ্জে ৬২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের কার্যক্রম চলমান
ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে ৫৩৯ কিমি. অরক্ষিত সীমান্ত এলাকায় নতুন ৬২টি বিওপি নির্মাণের মাধ্যমে ৪১২.৫ কিমি. সীমান্ত এরই মধ্যে নজরদারিতে আনা হয়েছে। এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্ত এলাকায় ২০টি বিওপি এবং সুন্দরবন এলাকায় ২টি ভাসমান বিওপি স্থাপনের মাধ্যমে অবশিষ্ট অরক্ষিত সীমান্ত সুরক্ষার কার্যক্রম চলমান।

 

লাকসাম-আখাউড়া রেলওয়ে প্রকল্পের ২টি স্থান (কসবা ও সালদানদী স্টেশন) সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে হওয়ায় ১২ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখ হতে উভয় দেশের মধ্যে অমীমাংসিত যা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বিজিবি’র উদ্যোগ ও সমন্বয় সর্বক্ষেত্রে প্রশংসিত হয়েছে। পরবর্তীতে গত ২০ জুলাই ২০২৩ তারিখে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক লাকসাম-আখাউড়া ৭২ কিলোমিটার ডাবল লাইন রেলপথ নির্মাণকাজের শুভ উদ্বোধন করেন।
দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রবহমান ফেনী নদীর ১৯টি স্থানে তীর সংরক্ষণমূলক কাজ উভয় দেশের মধ্যে অমীমাংসিত ছিল। বিএসএফ এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সাথে কূটনৈতিক পর্যায়ে অব্যাহত যোগাযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৬ মার্চ ২০২৩ তারিখ ফেনী নদীর ১০টি স্থানের তীর সংরক্ষণমূলক কাজ সম্মতির পরিপ্রেক্ষিতে চলমান রয়েছে।

 

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ কর্তৃক বর্ডার অবজারভেশন পোস্টে নতুন করে এরিয়াল মাস্ট টাওয়ার স্থাপন করায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। ফলে বিজিবি সদস্যদের চোরাচালান ও অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনার সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

দুর্গম পার্বত্য এলাকায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বিহীন প্রত্যন্ত বিওপি’তে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর ভি-স্যাট প্রযুক্তির মাধ্যমে কর্মরত বিজিবি সদস্যগণ তাদের পরিবারের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য ইন্টারনেট সেবা এবং টেলিফোন সুবিধা সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
‘রিপোর্ট টু বিজিবি’ অ্যাপের মাধ্যমে জনসাধারণ কর্তৃক পাঠানো তথ্য যাচাই বাছাই করে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে সীমান্ত সুরক্ষা, চোরাচালানসহ যে কোনো সীমান্ত অপরাধ এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিজিবি দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণসহ দেশের সকল পর্যায়ের জনসাধারণকে সেবা প্রদান করছে। এছাড়াও, আইডিআইএম সফটওয়্যারের মাধ্যমে বিজিবির দৈনন্দিন কার্যক্রম দ্রুততার ও নির্ভুলতার সঙ্গে করা সম্ভব হচ্ছে।

 

দৈনন্দিন দাপ্তরিক ও প্রশাসনিক কাজকে সহজ করার লক্ষ্যে বিজিবি’র নিজস্ব মেইল সার্ভার স্থাপন এবং বিজিবি’র সকল গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগধারীর অনুকূলে অফিসিয়াল মেইল অ্যাড্রেস বরাদ্দ করা হয়েছে। এছাড়াও জাতীয় ওয়েব পোর্টালে বিজিবি’র ওয়েবসাইট হালনাগাদ তথ্য সন্নিবেশ করা হয়েছে।

‘ভিডিও টেলিকনফারেন্স’ সিস্টেম ও মাইক্রোসফট টিমস্ সফট্ওয়্যারের মাধ্যমে অনলাইন মিটিং, কনফারেন্স, চ্যাটিং, ফাইল শেয়ারিং এবং অনলাইন স্টোরেজসহ অন্যান্য সুবিধা ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে কমান্ডারগণের কনফারেন্সের জন্য সীমান্ত ছেড়ে সদর দপ্তরে আসার প্রয়োজনীয়তা বহুলাংশে হ্রাস পাওয়ায় সরকারি অর্থ ও সময় সাশ্রয় সম্ভব হচ্ছে।

বিজিবি’র নিয়োগ পদ্ধতিতে আধুনিকায়ন এবং স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে ‘ওয়েব বেজড ই-রিক্রুটমেন্ট’ সফটওয়্যার প্রণয়ন করা হয়েছে।

 

বিজিবির সব রিজিয়ন, সেক্টর ও ব্যাটালিয়নগুলোয় ইন্টারনেট সংযোগ সম্প্রসারণ করায় প্রযুক্তি খাতে বিজিবি অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এছাড়াও সীমান্তে যে কোনো দুর্ঘটনা/অপরাধ সংঘটিত হলে দ্রুততার সঙ্গে সদর দপ্তরকে অবগত করা সম্ভব হচ্ছে।
ডাটা সেন্টারের সঙ্গে ডিআর সাইট এর সংযাগ ব্যবস্থাকে আরো উন্নত, গতিশীল ও কাঠামোবদ্ধ করা হয়েছে। যার ফলে পিলখানাস্থ ডাটা সেন্টারের সকল ডাটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে যশোর ডিআর সাইটে রক্ষিত হওয়ায় মাধ্যমে ডাটা সুরক্ষা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। রেডিও লিংক এর পরিবর্তে ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল স্থাপনের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যমান বিজিবি’র নানাবিধ স্থাপনাসমূহের সাথে উন্নত যোগাযোগের ব্যবস্থা স্থাপিত হয়েছে।

বর্ডার গার্ড টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, দ্বিগরাজ, খুলনায় সিগন্যাল পেশার কোর্সসমূহ পরিচালনার জন্য নতুনভাবে প্রশিক্ষণ শেড নির্মাণ করা হয়েছে ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে।

 

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের প্রতিটি বিওপিতে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য সোলার প্যানেল বরাদ্দ করা হয়েছে। বর্ডার গার্ড টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, দ্বিগরাজ, খুলনায় সিগন্যাল সম্পর্কিত কোর্সসমূহ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নতুনভাবে ১টি আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব তৈরী করা হয়েছে।

 

বিজিবির আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার অংশ হিসেবে এইচএফ সেট, ইউএইচএফ, ভিএইচএফ (এনালগ) এবং ইউএইচএফ, ভিএইচএফ (ডিএমআর) সংযোজনের ফলে দূর্গম পার্বত্যঞ্চল ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের সীমান্তবর্তী বিওপিসমূহের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছে। এতে বিজিবির অপারেশনাল সক্ষমতা বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ কর্তৃক সীমান্তে গুরুত্বপূর্ণ আইসিপি গুলোতে সার্ভিল্যান্স সিস্টেম ক্যামেরা স্থাপনের ফলে সীমান্তে চোরাচালান দমন, সীমান্ত নজরদারি এবং অপারেশনাল কার্যক্রম তরান্বিত করা হয়েছে। বিজিবি এয়ার উইং এর সৈনিকদের আবাসন সমস্যা নিরসনকল্পে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে একটি একতলা সেমি পাকা সৈনিক ব্যারাক নির্মাণ করা হয়েছে।

সীমান্তের সার্বিক সুরক্ষা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার নিমিত্তে বিজিবি’র জন্য সম্মুখ যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ১৪টি এটিজিএম সংযোজিত হয়েছে। এছাড়াও ৪০ টি ‘অ্যালকোটান’ অস্ত্র ক্রয়ের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

 

প্রতিবেদনে সীমান্ত সড়ক নির্মাণ কার্যক্রম প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্ত সুরক্ষায় সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ১০৩৬ কিঃ মিঃ সীমান্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বিজিবি’র সার্বিক নিরাপত্তা সহায়তায় প্রথম পর্বে রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলায় ৩১৭ কিঃ মিঃ নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়াও সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী সীমান্ত সড়ক নির্মাণের অংশ হিসেবে ১ম পর্বে নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ জেলায় সীমান্ত সড়কের সার্ভে কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

মায়ানমার কর্তৃক সৃষ্ট সঙ্কট ও সাম্প্রতিক সময়ের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ১২টি আর্মাড পার্সোনেল ক্যারিয়ার (এপিসি) এবং ১০টি রায়ট কন্ট্রোল ভেহিক্যাল সংযোজিত হয়েছে।

 

ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত করার লক্ষ্যে ১৫ বছরে বিজিবি’তে মোটরযান/জলযান বাড়ানো হয়েছে। নতুন সংযোজিত মোটরযান/জলযানের মধ্যে রয়েছে-সিডান কার ১৯টি, মোটর সাইকেল- ১৮০টি, জিপ ২১৮টি, এটিভি (জাগুয়ার) ৩২টি, মাইক্রোবাস- ৩টি, হাইস্পীড ইঞ্জিন বোট ১২টি, বাস – ১৯টি, স্পীড বোট – ৪টি, পিকআপ (ডাবল কেবিন)- ৩৬১টি, পন্টুন ৩টি এবং ট্রাক- ১৪৬টি।

 

দেশের স্পর্শকাতর ও অধিক চোরাচালান প্রবণ এলাকায় স্মার্ট ডিজিটাল সার্ভেইল্যান্স এন্ড ট্যাকটিকাল রেসপন্স সিস্টেম এর আওতায় ২৫৯টি অষষ ঞবৎৎধরহ ঠবযরপষব (অঞঠ) সংযোজিত হয়েছে। ফলে বিজিবি’র টহল/অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনায় গতিশীলতা পূর্বের তুলনায় বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

বিজিবি এয়ার উইংয়ের জন্য শাহ্ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম এ ৫০ হাজার বর্গফুট এলাকা বিজিবির জন্য বরাদ্দ নিয়ে একটি অত্যাধুনিক হ্যাংগার নির্মাণ করা হয়। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্পর্শকাতর নদী সীমান্ত এলাকায় মানব পাচার, অবৈধ অনুপ্রবেশ, ইয়াবা, মাদক ও অবৈধ অস্ত্র চোরাচালানের অপতৎপরতা প্রতিরোধের জন্য ৪টি এয়ার বোট সংযোজিত হয়েছে।

 

২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি হতে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত মোট ১৮৫টি বিওপি নির্মানের পাশাপাশি ৭৩টি কম্পোজিট বিওপিসহ ১৫টি সাইক্লোন সেন্টার টাইপ বিওপি নির্মাণ করা হয়েছে। একইসময়ে সীমান্তে ২৯টি বিওপিতে বিদ্যুৎ সংযোগ ও সৌরশক্তির মাধ্যমে ১৬৮টি বিওপিতে বিদ্যুতায়ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

 

১ জুলাই ২০১৭ হতে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত বিজিবি সদস্য ও খেলোয়ারসহ সর্বস্তরের খেলার মান উন্নয়নের জন্য একটি আধুনিক ইনডোর স্টেডিয়াম (মাল্টি জিমসহ) নির্মাণ করা হয়েছে।

 

 

বর্ডার গার্ড হাসপাতাল ঢাকায় মেডিসিন, সার্জারি, অর্থোপেডিকস, নেফ্রোলজি, নিউরোলজি, অনকোলজি এবং কার্ডিওলজি এর মতো আধুনিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ১০ তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট ডিসপেনসারী এবং ফিজিওথেরাপি সেন্টারের সমন্বয়ে একটি বহির্বিভাগ ভবন নির্মানের অনুমোদন প্রদান করা হয়েছে।

 

 

সূত্রমতে, সম্প্রতি বিজিবি’র মিডিয়া ব্যবস্থাপনাকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় অত্যাধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তি ও আধুনিক সুবিধা সম্বলিত একটি সুসজ্জিত “বিজিবি মিডিয়া মনিটরিং সেল” স্থাপন করা হয়েছে। মিডিয়া হতে প্রাপ্ত সংবাদ বা তথ্যসমূহ যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনার মাধ্যমে আভিযানিক কার্যক্রম আরও বেগবান হয়েছে।

 

বিজিবি সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য পূর্বে বায়তুল ইজ্জত, চট্টগ্রামে বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজ নামে একটি মাত্র প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ছিল। বিগত ১৫ বছরের মধ্যে নতুন করে ৪টি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও বর্ডার গার্ড টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার, দ্বিগরাজ, খুলনায় অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে।

 

বিজিবি’র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন হয়েছে। মানব সম্পদ উন্নয়নের অংশ হিসেবে বিগত ১৫ বছরে বিজিবি’র ব্যবস্থাপনায় নতুন ২টি কলেজসহ ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এছাড়াও একটি উচ্চ বিদ্যালয়কে কলেজ পর্যায়ে এবং ৩ টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে উন্নীত করা হয়েছে।

 

 

সমাজের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য ২২ মে ২০১৭ তারিখে পিলখানার অভ্যন্তরে ” এ স্কুল অব স্পেশাল লার্নিং’ শ্লোগানকে সামনে রেখে ‘দীপ্ত সীমান্ত’ বিশেষায়িত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

বিজিবি সদস্যদের সন্তানদের ঢাকার বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার সুবিধার্থে ২০১১ সালে পিলখানার পার্শ্ববর্তী হাতিরঘাটে ৫তলা বিশিষ্ট আধুনিক ছাত্রাবাস এবং ২০১৪ সালে পিলখানার অভ্যন্তরে ৫তলা বিশিষ্ট একটি ছাত্রীনিবাস নির্মাণ করা হয়েছে। বিজিবি সদর দপ্তরে অফিসার, জুনিয়র কর্মকর্তা ও অন্যান্য পদবীধারী সদস্যদের জন্য ২টি ১৫ তলা এবং ১টি ১০তলা বিশিষ্ট আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
বিজিবি সদস্যদের জন্য ২০১৩ সালে পূর্ণাঙ্গ রেশন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। এছাড়া ৩ বছরের নিচের শিশু সন্তান এবং প্রতিবন্ধী সন্তানের জন্য রেশন প্রদানের কার্যক্রম প্রবর্তন করা হয়েছে। বিজিবি সদস্যদের সর্বদা সীমান্ত রক্ষা, চোরাচালান দমন, নারী ও শিশু পাচার প্রতিরোধের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে দায়িত্ব পালন করতে হয়। উক্ত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য রায়োট কন্ট্রোল আইটেম সংযোজন করা হয়েছে।

 

বিজিবি সদস্যদের বেতন-ভাতাসহ অন্যান্য আর্থিক লেনদেনের সুবিধার্থে ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক সীমান্ত ব্যাংকের উদ্বোধনের মাধ্যমে ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বর্তমানে দেশব্যপী সীমান্ত ব্যাংকের ১৯টি শাখার মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এ বর্তমানে অথবা পূর্বে কর্মরত অফিসার, জুনিয়র কর্মকর্তা ও অন্যান্য পদবীর সৈনিক এবং অসামরিক কর্মচারীদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষা, অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য কল্যাণ মূলক কার্যাবলি পরিচালনার লক্ষ্যে বিজিবি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট গঠন করা হয়।
প্রতিটি ওয়ার্ড/বিভাগে রোগীদের তথ্য সংরক্ষন, প্রেসক্রিপশন ইত্যাদি ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রদানের লক্ষ্যে ‘এইচআইএমএস’ সন্নিবেশ করা হয়েছে।

 

বিজিবি সদস্যদের চিকিৎসা সেবার আধুনিকায়নে বর্ডার গার্ড হাসপাতাল, ঢাকায় ৬টি মেশিন দ্বারা ডায়ালাইসিস সেন্টার এবং সিসিইউ স্থাপন করা হয়েছে। করোনা আক্রান্ত জটিল রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কোভিড আইসিইউতে ৬টি মেশিন দ্বারা ডায়ালাইসিস এবং ৪ টি সিসিইউ স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের রোগ সনাক্ত করার জন্য অত্যাধুনিক এমআরআই মেশিন স্থাপন করা হয়েছে।

 

হৃদরোগে আক্রান্ত বিজিবি সদস্যদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য বর্ডার গার্ড হাসপাতাল ঢাকায় ক্যাথ ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও বিজিবি হাসপাতাল কর্তৃক বিভিন্ন স্থানে বিজিবি সদস্য, তাদের পরিবারবর্গ এবং জনসাধারণের মাঝে করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।
২০১০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত চারটি ক্যাটাগরিতে বিজিবি থেকে ৭০৬ টি পদক প্রদান করা হয়েছে।

 

“বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১” কর্ম পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে- ১৫ হাজার নতুন পদ সৃজন, দুটি রিজিয়ন সদর দপ্তর, ৩টি সেক্টর সদর দপ্তর, ২২টি বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন, একটি গার্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, একটি স্টেশন সদর দপ্তর, একটি বর্ডার গার্ড হাসপাতাল, একটি সীমান্ত মেডিক্যাল কলেজ, একটি কে-নাইন ইউনিট এন্ড ট্রেনিং সেন্টার, একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, ৬টি লজিস্টিক বেইজ
দুটি রিজিয়নাল ইন্টেলিজেন্স এবং একটি রিজার্ভ ব্যাটালিয়ন প্রস্তুত করা।