০১:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারতে কমছে মুসলিম প্রতিনিধিত্ব

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর মুসলিম জনসংখ্যার দেশ ভারত। কিন্তু সেই তুলনায় মুসলিম আইনপ্রণেতাদের সংখ্যা দেশটিতে একেবারে কম। তাদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব দিনে দিনে সংকুচিত হয়ে পড়ছে। বিজেপির শক্তি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশটির পার্লামেন্টে মুসলমানদের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে।

বর্তমানে ভারতে মুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্ব পেতে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। দেশের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলের আধা স্বায়ত্তশাসন প্রত্যাহার করা হয়েছে। হিন্দু মন্দির নির্মাণের জন্য হিংসাত্মক জনতা মসজিদ ভেঙে দিচ্ছে। গত এক দশকে এগুলো ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক জয়। ভারতের হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেন এমন একজন নেতা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। যদিও দেশটিতে ২০ কোটি মুসলমান বাস করেন, যারা বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশটিতে নিজেদের রাজনৈতিক শক্তিকে তুলে ধরতে সক্ষম।

ভারতে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা নতুন কিছু নয়। তবে মোদির আমলে তা আরও বেড়েছে। ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) হিন্দু জাতীয়তাবাদী মতাদর্শকে সমর্থন করে এবং মোদি আপাতদৃষ্টিতে গত পাঁচ বছর মেয়াদের শেষের দিকে মুসলিম রাজনীতিবিদ ও নাগরিকদের ওপর থেকে তাঁর দৃষ্টি প্রায় সরিয়ে নিয়েছেন। যার প্রভাব পড়তে পারে এবারের নির্বাচনে। এমনটা নয়, মোদি শুধু তার নির্বাচনী বক্তৃতাকালেই মুসলিমবিদ্বেষী বক্তব্য তুলে ধরেছেন। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি বিজেপি একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উত্থান শুরু করার পর থেকে সংসদ এবং রাজ্য আইনসভাগুলোতে মুসলিম আইনপ্রণেতাদের অনুপাত সংকুচিত করেছেন। ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং বিরোধী দলগুলোতেও মুসলিম প্রতিনিধিত্ব কমেছে। ২০১৪ সালে মোদি যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেন, তখন বিদায়ি সংসদে ৩০ মুসলিম আইনপ্রণেতা ছিলেন এবং মাত্র একজন ছিলেন বিজেপির সদস্য। মুসলমানরা বর্তমানে ৫৪৩ আসনের মধ্যে ২৫টি আসন দখল করে আছেন, তবে তারা কেউ বিজেপির সদস্য নন। নয়াদিল্লির অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ইতিহাসবিদ আলি খান মাহমুদাবাদ বলেছেন, ভারত এমন একটি দেশ হতে চলেছে, যেখানে মুসলমানরা মূলত প্রান্তিক হয়ে পড়েছে, যেখানে তারা সক্রিয়ভাবে বাদ পড়ছে।

এদিকে লোকসভা ভোটের আগে দেশজুড়ে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর করে চমকে দিয়েছিল কেন্দ্র সরকার। এবার ভোট গ্রহণ চলার মাঝেই এ আইনে প্রথম নাগরিকত্ব দেওয়া হলো ৩০০ বিদেশিকে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা বুধবার রাজধানী দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে ওই ৩০০ জনের মধ্যে ১৪ জনের হাতে নাগরিকত্বের সনদ তুলে দেন। বাকিদের কাছে সেই সনদ ই-মেইল মারফত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানানো হয়েছে। ওই বিদেশিরা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে চলে এসেছিলেন। খবর : পিবিএস ও এনডিটিভির।

জনপ্রিয় সংবাদ

সানজিদা তন্বীর বিয়ের খবর জানালেন ফেসবুকে নিজের হৃদয়গ্রাহী পোস্টে

ভারতে কমছে মুসলিম প্রতিনিধিত্ব

আপডেট সময় : ০৮:৪৮:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর মুসলিম জনসংখ্যার দেশ ভারত। কিন্তু সেই তুলনায় মুসলিম আইনপ্রণেতাদের সংখ্যা দেশটিতে একেবারে কম। তাদের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব দিনে দিনে সংকুচিত হয়ে পড়ছে। বিজেপির শক্তি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশটির পার্লামেন্টে মুসলমানদের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে।

বর্তমানে ভারতে মুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্ব পেতে বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে। দেশের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলের আধা স্বায়ত্তশাসন প্রত্যাহার করা হয়েছে। হিন্দু মন্দির নির্মাণের জন্য হিংসাত্মক জনতা মসজিদ ভেঙে দিচ্ছে। গত এক দশকে এগুলো ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাজনৈতিক জয়। ভারতের হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠদের স্বার্থকে প্রাধান্য দেন এমন একজন নেতা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন তিনি। যদিও দেশটিতে ২০ কোটি মুসলমান বাস করেন, যারা বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশটিতে নিজেদের রাজনৈতিক শক্তিকে তুলে ধরতে সক্ষম।

ভারতে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা নতুন কিছু নয়। তবে মোদির আমলে তা আরও বেড়েছে। ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) হিন্দু জাতীয়তাবাদী মতাদর্শকে সমর্থন করে এবং মোদি আপাতদৃষ্টিতে গত পাঁচ বছর মেয়াদের শেষের দিকে মুসলিম রাজনীতিবিদ ও নাগরিকদের ওপর থেকে তাঁর দৃষ্টি প্রায় সরিয়ে নিয়েছেন। যার প্রভাব পড়তে পারে এবারের নির্বাচনে। এমনটা নয়, মোদি শুধু তার নির্বাচনী বক্তৃতাকালেই মুসলিমবিদ্বেষী বক্তব্য তুলে ধরেছেন। ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি বিজেপি একটি রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উত্থান শুরু করার পর থেকে সংসদ এবং রাজ্য আইনসভাগুলোতে মুসলিম আইনপ্রণেতাদের অনুপাত সংকুচিত করেছেন। ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং বিরোধী দলগুলোতেও মুসলিম প্রতিনিধিত্ব কমেছে। ২০১৪ সালে মোদি যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেন, তখন বিদায়ি সংসদে ৩০ মুসলিম আইনপ্রণেতা ছিলেন এবং মাত্র একজন ছিলেন বিজেপির সদস্য। মুসলমানরা বর্তমানে ৫৪৩ আসনের মধ্যে ২৫টি আসন দখল করে আছেন, তবে তারা কেউ বিজেপির সদস্য নন। নয়াদিল্লির অশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ইতিহাসবিদ আলি খান মাহমুদাবাদ বলেছেন, ভারত এমন একটি দেশ হতে চলেছে, যেখানে মুসলমানরা মূলত প্রান্তিক হয়ে পড়েছে, যেখানে তারা সক্রিয়ভাবে বাদ পড়ছে।

এদিকে লোকসভা ভোটের আগে দেশজুড়ে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর করে চমকে দিয়েছিল কেন্দ্র সরকার। এবার ভোট গ্রহণ চলার মাঝেই এ আইনে প্রথম নাগরিকত্ব দেওয়া হলো ৩০০ বিদেশিকে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা বুধবার রাজধানী দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানে ওই ৩০০ জনের মধ্যে ১৪ জনের হাতে নাগরিকত্বের সনদ তুলে দেন। বাকিদের কাছে সেই সনদ ই-মেইল মারফত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানানো হয়েছে। ওই বিদেশিরা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে চলে এসেছিলেন। খবর : পিবিএস ও এনডিটিভির।