০৫:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শহরের নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ চাপে আছে

➤ গ্রামের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে
➤ এলডিসি কান্ট্রি থেকে উন্নত দেশে যাব ২০২৬ সালে
➤ তিন মাসে রেমিট্যান্স গত বছরের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেশি

গ্রামের মানুষের চেয়ে শহরের নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ চাপে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। তিনি বলেছেন, গ্রামের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। কিন্তু শহরের নিদিষ্ট আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি চাপে আছে। গতকাল বুধবার সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। সচিবালয় কাভার করা সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করে। বিএসআরএফের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় বিএসআরএফের সভাপতি ফসিহ উদ্দিন মাহতাব এতে সভাপতিত্ব করেন।

শহরের নিদিষ্ট আয়ের মানুষ চাপে আছে উল্লেখ করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি টিপ্পনী কাটার জন্য বলছি না। বাস্তবতা বলছি, মানুষের কাছে কিন্তু টাকা আছে। গত তিন মাসে দুই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসছে। যেটা গত বছরের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেশি। এই দুই বিলিয়ন ডলার কিন্তু গ্রামীণ অর্থনীতিতে যোগ হয়। ফলে গ্রামের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। গ্রামের মানুষ যারা উৎপাদন করে তারা কিন্তু শহরের নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের থেকে ভালো আছে। গ্রামের যে লোকটি অটোরিকশা চালায় সে কিন্তু মাল্টিপল কাজ করছে। খুব বেশি চাপে আছে নির্দিষ্ট আয়ের শহরের মানুষ। তাদের সহযোগিতার জন্য টিসিবিসহ অন্যান্য কর্মসূচি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা চেষ্টা করছি, শহরভিত্তিক মানুষের আরও কীভাবে সহায়তা করতে পারি।

আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ডব্লিউটিওসহ বিভিন্ন জোটের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিগুলো করছি। ইউরোপীয় ইউনিয়নে কোটা ফ্রি, ডিউটি ফ্রি সুবিধা যাতে অব্যাহত থাকে সেই ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশের সঙ্গে দ্রুত কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট করবেন। চীনের সঙ্গে আমাদের স্টাডি সম্পন্ন হয়েছে। চীন একটি এফটিএ করার জন্য উদ্যোগী। আসিয়ান কান্ট্রিগুলোর সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছি।ট্যারিফ কমিশনকে ঢেলে সাজানো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এলডিসি কান্ট্রি থেকে উন্নত দেশে যাব ২০২৬ সালে। তখন কিন্তু আমরা আমদানিতে প্রতিবন্ধকতা রাখতে পারব না। অন্যের বাজার পেতে চাইলে নিজেদের বাজার ওপেন করতে হবে। এজন্য ট্যারিফ কমিশনকে ন্যাশনালাইজ করতে হবে। কমিশনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। ট্যারিফ পলিসি ২০২৩ ঘোষণা করছি। সেটা বাস্তবায়নে চেষ্টা করছি।

টিসিবিকে ফ্ল্যাগশিপ পণ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তৈরি করেছেন আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য করার জন্য। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, ৭৫ পরবর্তী সময়ে টিসিবিকে আর রপ্তানি করতে দেয়নি। আমদানি করে ন্যায্যমূল্যের যে দোকানগুলো ছিল সেটাও সামরিক সরকার এসে বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে যারা নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ তাদের কষ্ট হচ্ছে। আমরা এখন পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে পেরেছি। বিশেষ করে আমদানিকৃত দুটি পণ্য চিনি এবং তেল এ দুটির সরবরাহ ও দাম গত পাঁচ ছয় মাসে স্থিতিশীল আছে। আমাদের মন্ত্রণালয় বাজার পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিং করে। আমাদের কাছে টুলস যে আছে তা হলো, আমদানি করে কিছু পণ্য সংগ্রহ করতে পারি। আমরা টিসিবিকে অনেক শক্তিশালী করেছি।

এবারও ব্যবসায়ীরা চামড়া কেনেননি, চামড়ার দাম পাওয়া যায়নিÑ এ বিষয়ে দৃষ্টিআকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, চামড়ার ব্যাপারে প্রতি বছরই হয়, আমিও দেখি। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার পর এটা আমাদের প্রথম বছর ছিল। আমরা চামড়ার দাম নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলাম- ঢাকার বাইরে একটি গরুর লবণযুক্ত চামড়া এক হাজার টাকা আর ঢাকায় এক হাজার ২০০ টাকা। আমরা এটা মনিটরিং করব। মনিটরিং করে যে গ্যাপগুলো আছে সে গ্যাপগুলো যেন আগামী বছর পূরণ হয় সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ৬৪ জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোন জেলায় কত চামড়া কেনা হলো, কতগুলো সংরক্ষিত, কতগুলো অবিক্রিত সে বিষয়ে একটা পরিসংখ্যান নেব। তবে এ বিষয়ে লাইন মিনিস্ট্রি হলো শিল্প মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে আমরা শুধু মনিটরিংই করতে পারি, কাউকে কেনায় বাধ্য করা হলো শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাজ, এর সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয় যুক্ত রয়েছে। সমন্বয়টা আমরা করব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলব।

জনপ্রিয় সংবাদ

পানছড়িতে ৩ বিজিবির অভিযানে ভারতীয় গরুসহ চোরাচালানি আটক

শহরের নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ চাপে আছে

আপডেট সময় : ০৯:১০:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪

➤ গ্রামের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে
➤ এলডিসি কান্ট্রি থেকে উন্নত দেশে যাব ২০২৬ সালে
➤ তিন মাসে রেমিট্যান্স গত বছরের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেশি

গ্রামের মানুষের চেয়ে শহরের নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ চাপে আছে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু। তিনি বলেছেন, গ্রামের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। কিন্তু শহরের নিদিষ্ট আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি চাপে আছে। গতকাল বুধবার সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। সচিবালয় কাভার করা সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করে। বিএসআরএফের সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় বিএসআরএফের সভাপতি ফসিহ উদ্দিন মাহতাব এতে সভাপতিত্ব করেন।

শহরের নিদিষ্ট আয়ের মানুষ চাপে আছে উল্লেখ করে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি টিপ্পনী কাটার জন্য বলছি না। বাস্তবতা বলছি, মানুষের কাছে কিন্তু টাকা আছে। গত তিন মাসে দুই বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসছে। যেটা গত বছরের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেশি। এই দুই বিলিয়ন ডলার কিন্তু গ্রামীণ অর্থনীতিতে যোগ হয়। ফলে গ্রামের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। গ্রামের মানুষ যারা উৎপাদন করে তারা কিন্তু শহরের নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের থেকে ভালো আছে। গ্রামের যে লোকটি অটোরিকশা চালায় সে কিন্তু মাল্টিপল কাজ করছে। খুব বেশি চাপে আছে নির্দিষ্ট আয়ের শহরের মানুষ। তাদের সহযোগিতার জন্য টিসিবিসহ অন্যান্য কর্মসূচি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা চেষ্টা করছি, শহরভিত্তিক মানুষের আরও কীভাবে সহায়তা করতে পারি।

আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ডব্লিউটিওসহ বিভিন্ন জোটের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিগুলো করছি। ইউরোপীয় ইউনিয়নে কোটা ফ্রি, ডিউটি ফ্রি সুবিধা যাতে অব্যাহত থাকে সেই ব্যাপারে আমরা কাজ করছি। নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশের সঙ্গে দ্রুত কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট করবেন। চীনের সঙ্গে আমাদের স্টাডি সম্পন্ন হয়েছে। চীন একটি এফটিএ করার জন্য উদ্যোগী। আসিয়ান কান্ট্রিগুলোর সঙ্গেও আমাদের যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছি।ট্যারিফ কমিশনকে ঢেলে সাজানো হবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা এলডিসি কান্ট্রি থেকে উন্নত দেশে যাব ২০২৬ সালে। তখন কিন্তু আমরা আমদানিতে প্রতিবন্ধকতা রাখতে পারব না। অন্যের বাজার পেতে চাইলে নিজেদের বাজার ওপেন করতে হবে। এজন্য ট্যারিফ কমিশনকে ন্যাশনালাইজ করতে হবে। কমিশনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। ট্যারিফ পলিসি ২০২৩ ঘোষণা করছি। সেটা বাস্তবায়নে চেষ্টা করছি।

টিসিবিকে ফ্ল্যাগশিপ পণ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) তৈরি করেছেন আমদানি রপ্তানি বাণিজ্য করার জন্য। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, ৭৫ পরবর্তী সময়ে টিসিবিকে আর রপ্তানি করতে দেয়নি। আমদানি করে ন্যায্যমূল্যের যে দোকানগুলো ছিল সেটাও সামরিক সরকার এসে বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে যারা নির্দিষ্ট আয়ের মানুষ তাদের কষ্ট হচ্ছে। আমরা এখন পর্যন্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে পেরেছি। বিশেষ করে আমদানিকৃত দুটি পণ্য চিনি এবং তেল এ দুটির সরবরাহ ও দাম গত পাঁচ ছয় মাসে স্থিতিশীল আছে। আমাদের মন্ত্রণালয় বাজার পর্যবেক্ষণ ও মনিটরিং করে। আমাদের কাছে টুলস যে আছে তা হলো, আমদানি করে কিছু পণ্য সংগ্রহ করতে পারি। আমরা টিসিবিকে অনেক শক্তিশালী করেছি।

এবারও ব্যবসায়ীরা চামড়া কেনেননি, চামড়ার দাম পাওয়া যায়নিÑ এ বিষয়ে দৃষ্টিআকর্ষণ করলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, চামড়ার ব্যাপারে প্রতি বছরই হয়, আমিও দেখি। কিন্তু দায়িত্ব নেওয়ার পর এটা আমাদের প্রথম বছর ছিল। আমরা চামড়ার দাম নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলাম- ঢাকার বাইরে একটি গরুর লবণযুক্ত চামড়া এক হাজার টাকা আর ঢাকায় এক হাজার ২০০ টাকা। আমরা এটা মনিটরিং করব। মনিটরিং করে যে গ্যাপগুলো আছে সে গ্যাপগুলো যেন আগামী বছর পূরণ হয় সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ৬৪ জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোন জেলায় কত চামড়া কেনা হলো, কতগুলো সংরক্ষিত, কতগুলো অবিক্রিত সে বিষয়ে একটা পরিসংখ্যান নেব। তবে এ বিষয়ে লাইন মিনিস্ট্রি হলো শিল্প মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে আমরা শুধু মনিটরিংই করতে পারি, কাউকে কেনায় বাধ্য করা হলো শিল্প মন্ত্রণালয়ের কাজ, এর সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয় যুক্ত রয়েছে। সমন্বয়টা আমরা করব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলব।