০৭:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় আন্তর্জাতিক প্রশাসন মানবে না ফিলিস্তিন

Smoke billows from an area targeted by Israeli bombardment in the Gaza City district of Shujaiya on June 28, 2024, amid the ongoing conflict between Israel and the militant Hamas group. - Israel's military said on June 28 it was conducting raids backed by air strikes in northern Gaza, killing "dozens" of militants in an area where it had declared the command structure of Hamas dismantled months ago. The operation in Shujaiya, on the edge of Gaza City, caused numerous casualties, witnesses and medics said the previous day when it began. (Photo by Omar AL-QATTAA / AFP)

◉ ইসরায়েলি সেনাদের ওপর তুলকারেম ব্রিগেডের হামলা
◉ ৫৫ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিল ইসরায়েল
◉ লেবাননে ইসরায়েলের সিরিজ হামলা

 

গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী দ্বারা গঠিত প্রশাসনের ইসরায়েলের যে প্রস্তাবনা রয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট প্রশাসন। গত রোববার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের প্রশাসন জানিয়েছে, তারা গাজায় কোনো আন্তর্জাতিক বাহিনীর প্রশাসন মেনে নেবে না। প্রেসিডেন্টের সরকারি মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইন বলেছেন, ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে কোনো বিদেশি উপস্থিতির বৈধতা নেই। শুধু ফিলিস্তিনের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে কোন সরকার তাদেরকে শাসন করবে এবং কারা তাদের রাজনৈতিক বিষয়গুলো পরিচালনা করবে। ইসরায়েলি গণমাধ্যমে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকায় থাকবে যতক্ষণ না সেখানে আন্তর্জাতিক বাহিনী গাজা শাসনের ভার নেবে। মূলত ইসরায়েলি গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই গাজার শাসন নিয়ে ওমন সতর্কবার্তা দিয়েছে ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট প্রশাসনের ওই মুখপাত্র।

উপনিবেশ অবৈধ হলেও ইসরায়েল তা গাজায় বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করে আবু রুদেইন বলেন, তারা সাধারণ জনগণকে বাস্তুচ্যুত এবং হত্যা করে গাজায় দখলদারি স্থায়ীত্বের চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে আমরা কোনোভাবেই আমাদের ভূখণ্ড বিদেশি শক্তির হাতে ছেড়ে দেব না, সেটা পশ্চিম তীর হোক বা গাজা হোক। ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা করা গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে দেওয়া না দেওয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, এটি সমগ্র আরবের একটি বিষয়।

 

ইসরায়েলি সেনাদের ওপর তুলকারেম ব্রিগেডের হামলা
গাজার তুলকারেমের নুর শামস শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলিবাহিনীর ওপর হামলার দাবি করেছে তুলকারেম ব্রিগেড। ইসরায়েলি আর্মি রেডিওর খবরে বলা হয়েছে, অভিযান চালানোর সময় সেনাবাহিনীর একটি সামরিক যান বোমার ওপর দিয়ে চলে যায়। ওই সময় ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ইসরায়েলি সেনাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এক্সে ইসরায়েলি আর্মি রেডিওর সাংবাদিক একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। পোস্টকৃত ভিডিওতে তুলকারেমের ভবন থেকে কুণ্ডলি পাকিয়ে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। এর আগে ইসলামিক জিহাদ জনায়, ইসরায়েলি অভিযানে তাদের একজন যোদ্ধা নিহত হয়েছে। এছাড়া আরও পাঁচজন আহত হয়েছে। এরপর ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলার এই ঘটনা ঘটে।

৫৫ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিল ইসরায়েল
গাজায় চলমান যুদ্ধের মাঝে আটক ৫৫ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। মুক্তি পাওয়া বন্দিদের মধ্যে রয়েছেন আলোচিত আল শিফা হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবু সেলমিয়া ও দক্ষিণ গাজার আল নাসের হাসপাতালের পরিচালক নাহেদ আবু তাইমা। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বরাতে এ খবর দিয়েছে আল আরাবিয়্যাহ। গত বছরের নভেম্বরে আল শিফা হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে জোরপূর্বক আবু সেলমিয়াকে তুলে নিয়ে যায় ইসরায়েলি বাহিনী। ৭ অক্টোবর থেকে চলমান নির্বিচার হত্যাযজ্ঞে ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না সেবাদানকারী হাসপাতালও। যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকার হাসপাতালগুলোতেও বিভিন্ন সময় বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযোগ, হাসপাতালে ছদ্মবারণে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে হামাস। হাসপাতালকে সামরিক আস্তানা এবং টানেলের কাজে ব্যবহার করছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা। মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ, তাদের প্রতিদিন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো। তাদের অনেককে আল-আকসা এবং আল নাসের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

লেবাননে ইসরায়েলের সিরিজ হামলা
লেবাননের দক্ষিণে বিভিন্ন গ্রামে সিরিজ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এসব গ্রামের মধ্যে কাফার কিলা এবং আল-বায়াদাও আছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। হিজবুল্লাহর বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ করে এসব হামলা চালানো হয়েছে। গতকাল ড্রোন হামলায় ইসরায়েলের অন্তত ১৮ সেনা আহত হয়। এরপরেই লেবাননে পাল্টা হামলা চালাল ইসরায়েল। তবে লেবাননে চালানো ইসরায়েলের সর্বশেষ এই হামলা কী পরিমাণ হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে- সেই সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। গত বছরের অক্টোবর থেকে গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত গাজায় ৩৭ হাজারের বেশি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৯০ হাজারের বেশি। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছে অন্তত ২০ হাজার শিশু। এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। গোষ্ঠীটি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, গাজায় ইসরায়েল আগ্রাসন বন্ধ না করলে তারাও ইসরায়েলের ওপর হামলা চালিয়ে যাবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

গাজায় আন্তর্জাতিক প্রশাসন মানবে না ফিলিস্তিন

আপডেট সময় : ০৮:১৫:৫২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ জুলাই ২০২৪

◉ ইসরায়েলি সেনাদের ওপর তুলকারেম ব্রিগেডের হামলা
◉ ৫৫ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিল ইসরায়েল
◉ লেবাননে ইসরায়েলের সিরিজ হামলা

 

গাজায় আন্তর্জাতিক বাহিনী দ্বারা গঠিত প্রশাসনের ইসরায়েলের যে প্রস্তাবনা রয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট প্রশাসন। গত রোববার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের প্রশাসন জানিয়েছে, তারা গাজায় কোনো আন্তর্জাতিক বাহিনীর প্রশাসন মেনে নেবে না। প্রেসিডেন্টের সরকারি মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইন বলেছেন, ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে কোনো বিদেশি উপস্থিতির বৈধতা নেই। শুধু ফিলিস্তিনের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে কোন সরকার তাদেরকে শাসন করবে এবং কারা তাদের রাজনৈতিক বিষয়গুলো পরিচালনা করবে। ইসরায়েলি গণমাধ্যমে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা উপত্যকায় থাকবে যতক্ষণ না সেখানে আন্তর্জাতিক বাহিনী গাজা শাসনের ভার নেবে। মূলত ইসরায়েলি গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই গাজার শাসন নিয়ে ওমন সতর্কবার্তা দিয়েছে ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট প্রশাসনের ওই মুখপাত্র।

উপনিবেশ অবৈধ হলেও ইসরায়েল তা গাজায় বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করে আবু রুদেইন বলেন, তারা সাধারণ জনগণকে বাস্তুচ্যুত এবং হত্যা করে গাজায় দখলদারি স্থায়ীত্বের চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে আমরা কোনোভাবেই আমাদের ভূখণ্ড বিদেশি শক্তির হাতে ছেড়ে দেব না, সেটা পশ্চিম তীর হোক বা গাজা হোক। ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের অখণ্ডতা রক্ষা করা গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে দেওয়া না দেওয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, এটি সমগ্র আরবের একটি বিষয়।

 

ইসরায়েলি সেনাদের ওপর তুলকারেম ব্রিগেডের হামলা
গাজার তুলকারেমের নুর শামস শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলিবাহিনীর ওপর হামলার দাবি করেছে তুলকারেম ব্রিগেড। ইসরায়েলি আর্মি রেডিওর খবরে বলা হয়েছে, অভিযান চালানোর সময় সেনাবাহিনীর একটি সামরিক যান বোমার ওপর দিয়ে চলে যায়। ওই সময় ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা ইসরায়েলি সেনাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এক্সে ইসরায়েলি আর্মি রেডিওর সাংবাদিক একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। পোস্টকৃত ভিডিওতে তুলকারেমের ভবন থেকে কুণ্ডলি পাকিয়ে ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে। এর আগে ইসলামিক জিহাদ জনায়, ইসরায়েলি অভিযানে তাদের একজন যোদ্ধা নিহত হয়েছে। এছাড়া আরও পাঁচজন আহত হয়েছে। এরপর ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলার এই ঘটনা ঘটে।

৫৫ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিল ইসরায়েল
গাজায় চলমান যুদ্ধের মাঝে আটক ৫৫ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। মুক্তি পাওয়া বন্দিদের মধ্যে রয়েছেন আলোচিত আল শিফা হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আবু সেলমিয়া ও দক্ষিণ গাজার আল নাসের হাসপাতালের পরিচালক নাহেদ আবু তাইমা। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বরাতে এ খবর দিয়েছে আল আরাবিয়্যাহ। গত বছরের নভেম্বরে আল শিফা হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে জোরপূর্বক আবু সেলমিয়াকে তুলে নিয়ে যায় ইসরায়েলি বাহিনী। ৭ অক্টোবর থেকে চলমান নির্বিচার হত্যাযজ্ঞে ইসরায়েলি বর্বরতা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না সেবাদানকারী হাসপাতালও। যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকার হাসপাতালগুলোতেও বিভিন্ন সময় বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর অভিযোগ, হাসপাতালে ছদ্মবারণে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে হামাস। হাসপাতালকে সামরিক আস্তানা এবং টানেলের কাজে ব্যবহার করছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা। মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিদের অভিযোগ, তাদের প্রতিদিন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হতো। তাদের অনেককে আল-আকসা এবং আল নাসের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

লেবাননে ইসরায়েলের সিরিজ হামলা
লেবাননের দক্ষিণে বিভিন্ন গ্রামে সিরিজ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এসব গ্রামের মধ্যে কাফার কিলা এবং আল-বায়াদাও আছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। হিজবুল্লাহর বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ করে এসব হামলা চালানো হয়েছে। গতকাল ড্রোন হামলায় ইসরায়েলের অন্তত ১৮ সেনা আহত হয়। এরপরেই লেবাননে পাল্টা হামলা চালাল ইসরায়েল। তবে লেবাননে চালানো ইসরায়েলের সর্বশেষ এই হামলা কী পরিমাণ হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে- সেই সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। গত বছরের অক্টোবর থেকে গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ চলছে। এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত গাজায় ৩৭ হাজারের বেশি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৯০ হাজারের বেশি। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছে অন্তত ২০ হাজার শিশু। এই যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সমর্থন জানিয়ে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালাচ্ছে ইরান সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। গোষ্ঠীটি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, গাজায় ইসরায়েল আগ্রাসন বন্ধ না করলে তারাও ইসরায়েলের ওপর হামলা চালিয়ে যাবে।