০৭:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নারী কর্মীদের চাকরির অনিশ্চয়তা বাড়ছে

◉ ৫২% নারী কর্মীর বিশ্বাস প্রশিক্ষণ পেলে নেতৃত্বের ভূমিকায় কাজ করতে পারবেন
◉ ৭৩.৫% কর্মী বিশ্বাস করেন নারীদের তুলনায় পুরুষরা প্রযুক্তিনির্ভর কাজে ভালো

তৈরি পোশাক শিল্পে পুরুষ ও নারী শ্রমিকরা একসঙ্গে কাজ করলেও উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন কাজে পুরুষদেরই বেশি দেখা যায়। ফলে পোশাকশিল্পের স্বয়ংক্রিয়করণ ও ডিজিটাইজেশনের এই সময়ে বাড়ছে নারীদের চাকরির অনিশ্চয়তা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারী কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিনির্ভর কাজে নারীদের অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে হবে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে। গত রোববার বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর কমিউনিকেশন অ্যাকশন বাংলাদেশ (সি-ক্যাব) আয়োজিত ‘রিশেপিং দ্য ন্যারেটিভ : স্ট্রেংদেনিং কাভারেজ অব উইমেন আরএমজি ওয়ার্কার্স’ শীর্ষক একটি অংশগ্রহণমূলক কর্মশালায় এসব তথ্য উঠে আসে। কর্মশালায় পোশাকশিল্পে নারীর ক্ষমতায়নে গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকা এবং কিভাবে নারী শ্রমিকদের জীবনঘনিষ্ঠ কাহিনি গণমাধ্যমে উঠে আসতে পারে, সে বিষয়েও আলোচনা হয়। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা এই কর্মশালায় অংশ নেন।

কর্মশালায় সি-ক্যাব পরিচালিত সাম্প্রতিক একটি গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ জেইন আল-মাহমুদ বলেন, ৭৪.৮ শতাংশ পোশাককর্মী বিশ্বাস করেন কর্মক্ষেত্রে পুরুষরা ভালো ব্যবস্থাপক। ৭৩.৫ শতাংশ কর্মী বিশ্বাস করেন নারীদের তুলনায় পুরুষরা প্রযুক্তিনির্ভর কাজ ভালো পারেন। অন্যদিকে ৫২ শতাংশ নারী কর্মী বিশ্বাস করেন, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পেলে তারাও নেতৃত্ব দানকারী ভূমিকায় কাজ করতে পারেন।

সি-ক্যাবের নির্বাহী পরিচালক এবং কর্মশালার মডারেটর সৈয়দ জেইন আল-মাহমুদ বলেন, ‘আমরা সামাজিক উপলব্ধি বা ধ্যান-ধারণা নিয়ে গবেষণা করেছি। গার্মেন্টসকর্মীদের ধ্যান-ধারণা ও সমাজের ধ্যান-ধারণা এবং শিল্পে যে স্বয়ংক্রিয়করণ (অটোমেশন) ও ডিজিটাইজেশন হচ্ছে এ নিয়ে গার্মেন্টসকর্মীদের চিন্তা-ভাবনা আমরা তুলে এনেছি। তবে কারখানাভিত্তিক কাজ করার সুযোগ রয়েছে ভবিষ্যতে।’

তিনি বলেন, গার্মেন্টস সেক্টরের যে সব খবর গণমাধ্যমে দেখা যায়, সেখানে সাধারণত পোশাককর্মীদের ভিকটিম হিসেবে তুলে ধরা হয়। এছাড়া এসব প্রতিবেদনের অধিকাংশই মজুরি আন্দোলন, রপ্তানি আয় এবং দুর্ঘটনা সম্পর্কিত হয়ে থাকে। দেশের নারী পোশাক কর্মীদের জীবনের সংগ্রাম ও অটোমেশনের প্রভাবে এই ডিজিটাল যুগে তাদের চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তা, কিভাবে তারা এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়াতে পারেন এবং কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারেন-এগুলো সাধারণত প্রতিবেদনে উঠে আসে না। গার্মেন্টস কর্মীদের নিয়ে প্রতিবেদন তৈরির সময় ভিকটিম তৈরির মানসিকতা থেকে গণমাধ্যমকে বেরিয়ে আসতে হবে। এদেশের নারী পোশাক শ্রমিকরাও প্রযুক্তি ও পরিচালনায় এগিয়ে আসতে সক্ষম, এই বিষয়টিকে প্রতিবেদনে তুলে ধরতে হবে।

সি-ক্যাব আরও ১৪টি সহযোগী সংস্থার সঙ্গে এইচ অ্যান্ড এম ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে একযোগে নারী গার্মেন্টস কর্মীদের জীবন উন্নয়নে কাজ করে চলেছে। নারীরাও পুরুষদের মতোই সমানভাবে প্রযুক্তি ও পরিচালনা বিষয়ক কাজে অংশ নিতে পারে, এই বিষয়ে কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ-কেন্দ্রিক বিভিন্ন গণসচেতনতামূলক কাজের মাধ্যমে নারী গার্মেন্টস শ্রমিক, তাদের পরিবার এবং সমাজে সচেতনতা তৈরিতে সি-ক্যাব কাজ করছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

সানজিদা তন্বীর বিয়ের খবর জানালেন ফেসবুকে নিজের হৃদয়গ্রাহী পোস্টে

নারী কর্মীদের চাকরির অনিশ্চয়তা বাড়ছে

আপডেট সময় : ০৯:১৫:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

◉ ৫২% নারী কর্মীর বিশ্বাস প্রশিক্ষণ পেলে নেতৃত্বের ভূমিকায় কাজ করতে পারবেন
◉ ৭৩.৫% কর্মী বিশ্বাস করেন নারীদের তুলনায় পুরুষরা প্রযুক্তিনির্ভর কাজে ভালো

তৈরি পোশাক শিল্পে পুরুষ ও নারী শ্রমিকরা একসঙ্গে কাজ করলেও উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন কাজে পুরুষদেরই বেশি দেখা যায়। ফলে পোশাকশিল্পের স্বয়ংক্রিয়করণ ও ডিজিটাইজেশনের এই সময়ে বাড়ছে নারীদের চাকরির অনিশ্চয়তা। এমন পরিস্থিতিতে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারী কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিনির্ভর কাজে নারীদের অন্তর্ভুক্তি বাড়াতে হবে। এ বিষয়ে গণমাধ্যমকেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে। গত রোববার বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর কমিউনিকেশন অ্যাকশন বাংলাদেশ (সি-ক্যাব) আয়োজিত ‘রিশেপিং দ্য ন্যারেটিভ : স্ট্রেংদেনিং কাভারেজ অব উইমেন আরএমজি ওয়ার্কার্স’ শীর্ষক একটি অংশগ্রহণমূলক কর্মশালায় এসব তথ্য উঠে আসে। কর্মশালায় পোশাকশিল্পে নারীর ক্ষমতায়নে গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকা এবং কিভাবে নারী শ্রমিকদের জীবনঘনিষ্ঠ কাহিনি গণমাধ্যমে উঠে আসতে পারে, সে বিষয়েও আলোচনা হয়। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা এই কর্মশালায় অংশ নেন।

কর্মশালায় সি-ক্যাব পরিচালিত সাম্প্রতিক একটি গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ জেইন আল-মাহমুদ বলেন, ৭৪.৮ শতাংশ পোশাককর্মী বিশ্বাস করেন কর্মক্ষেত্রে পুরুষরা ভালো ব্যবস্থাপক। ৭৩.৫ শতাংশ কর্মী বিশ্বাস করেন নারীদের তুলনায় পুরুষরা প্রযুক্তিনির্ভর কাজ ভালো পারেন। অন্যদিকে ৫২ শতাংশ নারী কর্মী বিশ্বাস করেন, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পেলে তারাও নেতৃত্ব দানকারী ভূমিকায় কাজ করতে পারেন।

সি-ক্যাবের নির্বাহী পরিচালক এবং কর্মশালার মডারেটর সৈয়দ জেইন আল-মাহমুদ বলেন, ‘আমরা সামাজিক উপলব্ধি বা ধ্যান-ধারণা নিয়ে গবেষণা করেছি। গার্মেন্টসকর্মীদের ধ্যান-ধারণা ও সমাজের ধ্যান-ধারণা এবং শিল্পে যে স্বয়ংক্রিয়করণ (অটোমেশন) ও ডিজিটাইজেশন হচ্ছে এ নিয়ে গার্মেন্টসকর্মীদের চিন্তা-ভাবনা আমরা তুলে এনেছি। তবে কারখানাভিত্তিক কাজ করার সুযোগ রয়েছে ভবিষ্যতে।’

তিনি বলেন, গার্মেন্টস সেক্টরের যে সব খবর গণমাধ্যমে দেখা যায়, সেখানে সাধারণত পোশাককর্মীদের ভিকটিম হিসেবে তুলে ধরা হয়। এছাড়া এসব প্রতিবেদনের অধিকাংশই মজুরি আন্দোলন, রপ্তানি আয় এবং দুর্ঘটনা সম্পর্কিত হয়ে থাকে। দেশের নারী পোশাক কর্মীদের জীবনের সংগ্রাম ও অটোমেশনের প্রভাবে এই ডিজিটাল যুগে তাদের চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তা, কিভাবে তারা এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়াতে পারেন এবং কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারেন-এগুলো সাধারণত প্রতিবেদনে উঠে আসে না। গার্মেন্টস কর্মীদের নিয়ে প্রতিবেদন তৈরির সময় ভিকটিম তৈরির মানসিকতা থেকে গণমাধ্যমকে বেরিয়ে আসতে হবে। এদেশের নারী পোশাক শ্রমিকরাও প্রযুক্তি ও পরিচালনায় এগিয়ে আসতে সক্ষম, এই বিষয়টিকে প্রতিবেদনে তুলে ধরতে হবে।

সি-ক্যাব আরও ১৪টি সহযোগী সংস্থার সঙ্গে এইচ অ্যান্ড এম ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে একযোগে নারী গার্মেন্টস কর্মীদের জীবন উন্নয়নে কাজ করে চলেছে। নারীরাও পুরুষদের মতোই সমানভাবে প্রযুক্তি ও পরিচালনা বিষয়ক কাজে অংশ নিতে পারে, এই বিষয়ে কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ-কেন্দ্রিক বিভিন্ন গণসচেতনতামূলক কাজের মাধ্যমে নারী গার্মেন্টস শ্রমিক, তাদের পরিবার এবং সমাজে সচেতনতা তৈরিতে সি-ক্যাব কাজ করছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।