১১:৫৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘আমার মনে হয় না দেশের হয়ে খেলতে কোনো সমস্যা হবে’

বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। একটা সময় বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমীদের চোখের মণি ছিলেন সাকিব। পরিস্থিতি বদলেছে। ক্রিকেটের বাইশ গজে সাকিবের পারফরম্যান্স আগের মত নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বলার মত কিছু করতে পারেননি সাকিব। হতাশার বিশ্বকাপ শেষে অল্প কদিনের বিশ্রাম নিয়ে দেশের সেরা অলরাউন্ডার চলে যান ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলতে। প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রে, এখন খেলছেন কানাডায়। সেখানকার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টিতেও তার পারফরম্যান্স ততটা সন্তোষজনক নয়।

এর মধ্যেই দেশে শুরু হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন, পরবর্তীতে যা রুপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। অবশেষে ৫ আগস্ট ছাত্রদের রক্তে ভেজা আন্দোলনে পতন ঘটে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার। পতন ঘটেছে আওয়ামী লীগ সরকারেরও। বিলুপ্ত হয়েছে সংসদ। সেই সংসদের একজন সদস্য ছিলেন সাকিবও। তবে ক্ষমতার পালাবদলে তার সংসদ সদস্যপদ বাতিল হয়েছে।

দেশের এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সাকিবের ফেরা নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। আগামী ১৬ আগস্ট পাকিস্তান সফরে যাবে বাংলাদেশ দল। ১২ আগস্ট পর্যন্ত সাকিবকে অনাপত্তিপত্র দিয়েছিল বিসিবি। পাকিস্তান সফরকে সামনে রেখে ১৩ আগস্ট ক্রিকেট বোর্ডে রিপোর্ট করে দলে যোগ দেওয়ার কথা তার। এই সফরে দুটি টেস্ট খেলবে টাইগাররা। দেশের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সাকিব সেখানে থাকবেন কি না, এ প্রশ্ন থাকছেই। তাকে পাকিস্তান সফরের দলে রাখা হবে কি না সংশয় আছে তা নিয়েও।

সাকিবকে নিয়ে সংশয়ের কারণও আছে। এক সময় স্লোগান উঠত– ‘বাংলাদেশের জান, বাংলাদেশের প্রাণ সাকিব আল হাসান।’ তাকেই দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় পোস্টারবয় হিসেবে জানে সারা বিশ্ব। কিন্তু দেশজুড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি নিয়ে নীরব থাকায় তাকে অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। লাখো লাখো তরুণ ভক্তের জন্য তার কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি ছিল না। দেশে যখন অসংখ্য প্রাণ ঝরে যাচ্ছিল, সাকিব তখন বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার পাশাপাশি পরিবার নিয়ে জম্পেশ সময় কাটাচ্ছিলেন। শুধু তাই নয়, দেশের ক্রান্তিলগ্নে যখন সবাই বুক চিতিয়ে লড়ছে, সাকিব উল্টো প্রশ্ন করেন—দেশের জন্য জনতা কী করেছে? এতে করে ইতোমধ্যে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন সাকিব, ক্ষুব্ধ মানুষ তাকে কতটা চায়, আদৌ চায় কি না সেটি প্রশ্ন হলেও উত্তর অনেকটাই অনুমেয়। দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে বড় প্রশ্ন সাকিব কি আর কখনো জাতীয় দলে ফিরতে পারবেন?

সাকিব অবশ্য ক্রিকেট সমর্থকদের আশার বাণী শুনিয়েছেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দিয়ে বিতর্কিত হলেও সাকিব মনে করেন না জাতীয় দলের হয়ে খেলতে বাধার সম্মুখীন হবেন। মাঠে ভালো খেলেই সমর্থকদের মন জয় করবে জানিয়ে সাকিব বলেন, ‘আমার মনে হয় না দেশের হয়ে খেলতে কোনো সমস্যা হবে। এখন মানুষ যা কিছু বলছে, তা ইমোশনাল। মাঠে ভালো খেললেই সবার সমর্থন পাব আশা করি।’

বাঁহাতি এ অলরাউন্ডারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি দেশে ফিরে পাকিস্তানে খেলতে যাবেন কিনা? উত্তরে বলেছেন, এখনও ঠিক করেননি।

জনপ্রিয় সংবাদ

স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

‘আমার মনে হয় না দেশের হয়ে খেলতে কোনো সমস্যা হবে’

আপডেট সময় : ০৮:২৪:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ অগাস্ট ২০২৪

বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। একটা সময় বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমীদের চোখের মণি ছিলেন সাকিব। পরিস্থিতি বদলেছে। ক্রিকেটের বাইশ গজে সাকিবের পারফরম্যান্স আগের মত নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বলার মত কিছু করতে পারেননি সাকিব। হতাশার বিশ্বকাপ শেষে অল্প কদিনের বিশ্রাম নিয়ে দেশের সেরা অলরাউন্ডার চলে যান ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলতে। প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রে, এখন খেলছেন কানাডায়। সেখানকার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টিতেও তার পারফরম্যান্স ততটা সন্তোষজনক নয়।

এর মধ্যেই দেশে শুরু হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন, পরবর্তীতে যা রুপ নেয় সরকার পতনের আন্দোলনে। অবশেষে ৫ আগস্ট ছাত্রদের রক্তে ভেজা আন্দোলনে পতন ঘটে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার। পতন ঘটেছে আওয়ামী লীগ সরকারেরও। বিলুপ্ত হয়েছে সংসদ। সেই সংসদের একজন সদস্য ছিলেন সাকিবও। তবে ক্ষমতার পালাবদলে তার সংসদ সদস্যপদ বাতিল হয়েছে।

দেশের এমন অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সাকিবের ফেরা নিয়ে তৈরি হয়েছে শঙ্কা। আগামী ১৬ আগস্ট পাকিস্তান সফরে যাবে বাংলাদেশ দল। ১২ আগস্ট পর্যন্ত সাকিবকে অনাপত্তিপত্র দিয়েছিল বিসিবি। পাকিস্তান সফরকে সামনে রেখে ১৩ আগস্ট ক্রিকেট বোর্ডে রিপোর্ট করে দলে যোগ দেওয়ার কথা তার। এই সফরে দুটি টেস্ট খেলবে টাইগাররা। দেশের এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে সাকিব সেখানে থাকবেন কি না, এ প্রশ্ন থাকছেই। তাকে পাকিস্তান সফরের দলে রাখা হবে কি না সংশয় আছে তা নিয়েও।

সাকিবকে নিয়ে সংশয়ের কারণও আছে। এক সময় স্লোগান উঠত– ‘বাংলাদেশের জান, বাংলাদেশের প্রাণ সাকিব আল হাসান।’ তাকেই দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় পোস্টারবয় হিসেবে জানে সারা বিশ্ব। কিন্তু দেশজুড়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি নিয়ে নীরব থাকায় তাকে অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। লাখো লাখো তরুণ ভক্তের জন্য তার কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি ছিল না। দেশে যখন অসংখ্য প্রাণ ঝরে যাচ্ছিল, সাকিব তখন বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার পাশাপাশি পরিবার নিয়ে জম্পেশ সময় কাটাচ্ছিলেন। শুধু তাই নয়, দেশের ক্রান্তিলগ্নে যখন সবাই বুক চিতিয়ে লড়ছে, সাকিব উল্টো প্রশ্ন করেন—দেশের জন্য জনতা কী করেছে? এতে করে ইতোমধ্যে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন সাকিব, ক্ষুব্ধ মানুষ তাকে কতটা চায়, আদৌ চায় কি না সেটি প্রশ্ন হলেও উত্তর অনেকটাই অনুমেয়। দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে বড় প্রশ্ন সাকিব কি আর কখনো জাতীয় দলে ফিরতে পারবেন?

সাকিব অবশ্য ক্রিকেট সমর্থকদের আশার বাণী শুনিয়েছেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দিয়ে বিতর্কিত হলেও সাকিব মনে করেন না জাতীয় দলের হয়ে খেলতে বাধার সম্মুখীন হবেন। মাঠে ভালো খেলেই সমর্থকদের মন জয় করবে জানিয়ে সাকিব বলেন, ‘আমার মনে হয় না দেশের হয়ে খেলতে কোনো সমস্যা হবে। এখন মানুষ যা কিছু বলছে, তা ইমোশনাল। মাঠে ভালো খেললেই সবার সমর্থন পাব আশা করি।’

বাঁহাতি এ অলরাউন্ডারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি দেশে ফিরে পাকিস্তানে খেলতে যাবেন কিনা? উত্তরে বলেছেন, এখনও ঠিক করেননি।