একটি বেসরকারি কো¤পানির বিপণন বিভাগে চাকরি করেন মো. জাহাঙ্গীর আলম। কৃষক পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলমের ছোটবেলা থেকেই কৃষির প্রতি ছিল মারাত্মক ঝোঁক। স্বপ্ন দেখতেন কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার। সেই স্বপ্নপূরণে চাকরির পাশাপাশি ২০১৯ সালে অন্যের জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন লেবু ও মালটার চাষ। পরে সেখানে সাথি ফসল হিসেবে যুক্ত করেন পেঁপে। শুরুতে পেঁপেঁর জাত নির্বাচনে একটু সমস্যার কারণে দুই বছর মুনাফা করতে না পারলেও হাল ছাড়েননি তিনি। ইউটিউব দেখে দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ভালো জাতের চারা সংগ্রহ করে আবারও পেঁপে লাগিয়ে বর্তমানে তিনি একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। মালটাতে তার মুনাফা না এলেও লেবু, পেঁপে ও অন্যান্য ফসল মিলিয়ে এখন তিনি বছরে আয় করছেন ৪ থেকে ৫ লক্ষ টাকা। পাশাপাশি কর্মসংস্থান হয়েছে অন্তত ৫ জনের। জাহাঙ্গীর আলমের বাড়ি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পূর্ব চন্ডিপুর গ্রামে। ব্যক্তিগত জীবনে জাহাঙ্গীর আলমের রয়েছে স্ত্রী ও এক পুত্র সন্তান। জাহাঙ্গীর আলমের কৃষি খামার পীরগাছার সৈয়দপুরে গিয়ে দেখা যায়, ৩ একর ৩০ শতক আয়তনের সেই খামারে একাংশে লেবু, আরেক অংশে মালটা, পেঁপে ও অন্যান্য ফসল লাগানো হয়েছে। শ্রমিকরা লেবু ও পেঁপে আহরণ করছেন। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমানে তার কৃষি খামারে শাহী জাতের ৫০০ পেঁপে, ৩০০ মালটা ও ২৫০০ লেবু গাছ রয়েছে। এছাড়া ৩০ শতকের আরেকটি প্লটে তার আরও ৩০০ পেঁপের গাছ রয়েছে। এছাড়া তিনি সাথি ফসল হিসেবে আদা, ওল এবং আখসহ অন্যান্য ফসলের চষ করছেন। তার স্ত্রী ও একজন মামা সেগুলো দেখাশোনা করেন। ঢাকায় একটি বেসরকারি কো¤পানির বিপণন বিভাগে চাকরি করলেও তিনি মোবাইলে সবসময় তার কৃষি খামার তদারকি করেন। তিনি আরও বলেন, মালটা চাষে সময় বেশি লাগে। সে তুলনায় বাজারে দাম কম হওয়ায় তিনি মালটায় মুনাফা করতে পারেননি। এবার মালটা তুলে সেখানে পেঁপে লাগাবেন। কেননা পেঁপে অত্যন্ত লাভজনক। পেঁপের প্রধান শত্রু পানি। যাদের উঁচু জমি আছে তাদের প্রথমে অল্প অল্প করে চাষ করে ধীরে ধীরে এগোতে হবে। শুধু কৃষি অফিসের ওপর ভরসা করে থাকলে হবে না। নিজেদের সজাগ থাকতে হবে। বাগানের শ্রমিক খোদেজা বেগম বলেন, নিয়মিত কাজ করেন তিনি। তাদের নিয়মিত মজুরি দেওয়া হয়। সেখানে কাজ করে তাদের সংসার ভালো চলছে। তিনি চান এলাকায় এরকম খামার যেন আরও বেশি হয়। তাহলে তাদের মতো মহিলাদের বেশি বেশি কর্মসংস্থান হবে। খামারে পণ্য ক্রয় করতে আসা আব্দুল গফুর বলেন, নিয়মিত এ খামার থেকে পণ্য ক্রয় করেন। এখানে অনেক মহিলার কর্মসংস্থান হয়েছে। এলাকায় এরকম আরও খামার হলে অনেকের কর্মসংস্থান হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে উদ্যোক্তাদের পরামর্শ ও সহযোগিতা করার জন্য উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা রয়েছেন। তারা কৃষকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করে থাকেন। উদ্যোক্তারা যেন কৃষি বিভাগের পরামর্শ গ্রহণ করেন।


























