যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে লুটপাট সিন্ডিকেটের সদস্যরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা রোগীকে জিম্মি করে অর্থবাণিজ্য এবং ওষুধ সামগ্রী চুরি করছে। লুটপাট সিন্ডিকেটকে কতিপয় চিকিৎসক শেল্টার দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদেরকে পক্ষে রেখেই সিন্ডিকেটের সদস্যরা বছরের পর বছর একই স্থানে দায়িত্ব পালনের সুুুযোগে ধান্ধাবাজি
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন চিকিৎসক ও কর্মচারী জানান, বিগত দিনে ধান্দাবাজ সিন্ডিকেটের সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে ব্যর্থ হয়েছেন তখনকার সময় দায়িত্বরত তত্ত্বাবধায়ক ডা. সালাউদ্দিন আহমেদ। বিভিন্ন অনিয়মের সত্যতা পেয়ে তিনি কতিপয় কর্মচারীকে অন্যত্র দায়িত্ব দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কিন্তু কতিপয় চিকিৎসক বেকে বসেন। তারা অজুহাত তৈরি করেন ওই কর্মচারীদের সরিয়ে নিলে চিকিৎসকদের কাজে নানা বেগ পেতে হবে। কারণ ওই কর্মচারীরা এক্সপার্ট হয়ে গেছে।
এছাড়া আরেকজন তত্ত্বাবধায়ক ডা. ইয়াকুব আলী মোল্লা একই উদ্যোগ নিয়েও সফল হতে ব্যর্থ হয়েছিলন। কারণ হিসেবে তারা জানান, ধান্দাবাজ কর্মচারীদের দিয়ে নানাভাবে উপকৃত হন কতিপয় চিকিৎসক। অনেক সময় চিকিৎসককে না ডেকে ছোট খাটো কাজগুলো তারা নিজেরাই করে দেন। এতে করে ওই চিকিৎসকদের আর হাসপাতালে আসা লাগেনা। কর্মচারীরা চিকিৎসককে ফোনে অবগত করে নিজেরা রোগীর ছোট-খাটো অপারেশন করেন। এছাড়া সিন্ডিকেটের আয় করা অর্থ দিয়েই চিকিৎসকদের নাস্তার ব্যবস্থা করা হয়। কতিপয় চিকিৎসককে পক্ষে রেখে টাকা ছাড়া কোন কাজ করেন না ওই সিন্ডিকেটের সদস্যরা । এছাড়া ওয়ার্ডে রোগী পাঠানোর পর চিকিৎসকের স্বাক্ষর বিহীন শর্ট স্লিপ কেনানো ওষুধ সামগ্রী লুটপাট করে। এমনকি সরকারি ওষুধও গায়েব করে ধান্ধাবাজ সিন্ডিকেটের সদস্যরা। ইতিমধ্যে ৭৮ পিস সরকারি ইনজেকশন চুরি করে ধরা পড়ার পর দুই স্বেচ্ছাসেবী কহিনুর ও পলিকে বরখাস্ত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সূত্র জানায়, কহিনুর ও পলি সম্পর্কে শাশুড়ি- বউমা। কহিনুর মহিলা সার্জারী ওয়ার্ডে ও তার বউ মা পলি গাইনী ওয়ার্ডে কর্মরত ছিলেন। তারা দুই স্বেচ্ছাসেবী মিলে মহিলা সার্জারী ওয়ার্ড থেকে ৩৯ পিস গ্যাসের ইনজেকশন প্যানটিক্স ও ৩৯ পিস এন্টিবায়োটিক সেফটিএক্সোন ইনজেকশন চুরি করে ধরা পড়ে। ২৭ আগস্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের দুইজনকে বরখাস্ত করেছে।
এর আগে মহিলা সার্জারী ওয়ার্ডে ড্রেসিং বাণিজ্যের অভিযোগে কহিনুর আক্তারকে ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল থেকে বের করে দিয়েছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান। কহিনুর একজন রোগীর যে কয়বার ড্রেসিং করবেন ততবার তাকে ১শ’ টাকা করে দিতে হবে। শুধু তাই নয়, কহিনুর রোগীর জন্য ওষুধ কেনার জন্য স্বজনদের হাতে শর্ট স্লিপ ধরিয়ে দিতেন। এরপর ইনজেকশন সিরিঞ্জ, স্যালাইন, সুই সুতো নিয়ে তিনি রোগীরা চিকিৎসা করতেন। নানা অভিযোগে হাসপাতাল থেকে তাড়িয়ে দেয়ার পর সিন্ডিকেটকে ম্যানেজ করে কয়েকমাস আগে হাসপাতালে ফেরেন কহিনুর। এবার তিনি ওষুধ চুরির দায়ে বরখাস্ত হলেন।


























