রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার তিস্তা নদী রক্ষা বাঁধ কেটে বালু হরিলুট করছে। কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে একটি চক্র তিস্তার বালু হরিলুট করেছে। এলাকাবাসী সেই চক্রটির সদস্যদের বাধা দিলে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিস্তা নদীর ডান তীরে লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের পূর্ব সীমানা থেকে গজঘণ্টা ইউনিয়নের পূর্ব সীমানা পর্যন্ত প্রায় ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকাজুড়ে ৮টি বালুর পয়েন্ট রয়েছে। এসব স্থানে অবৈধভাবে খননযন্ত্র (ড্রেজার) দিয়ে রাতভর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ব্যবসা করছে স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি। কয়েকটি স্থানে তিস্তা নদী রক্ষা বাঁধ কেটে সরাসরি নদীতে ট্রলি নামিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। কেউ আবার বাড়ি করার কথা বলে আগে বালু উত্তোলন করে পরে তা বিক্রয় করে দিচ্ছেন। উপজেলার লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের কালীরচর এলাকায় দেখা যায়, নদী রক্ষা বাঁধ কেটে বালু নিয়ে যাচ্ছে। সাংবাদিক আসার কথা শুনে কেটে দেওয়া বাঁধ মেরামত করছেন সাবুল মিয়া নামে ব্যক্তি। বাঁধ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে সাবুল মিয়া বলেন, কারা বাঁধ কাটছে আমি কিছু জানি না। একটু আগে কয়েকজন ট্রলিচালক আমাকে ৩শত টাকা দিয়েছে ভেঙে যাওয়া বাঁধের স্থানগুলোতে মাটি দিয়ে সমান করে দেওয়ার জন্য। তাই সমান করছি। পাশেই একটি চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন কয়েকজন মানুষ। এ সময় তাঁদের কাছে বালু তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমাদের কালীরচরে বালু ব্যবসায়ী এনামুল ও লিটন তিস্তার বাঁধ কেটে বালু তুলে বিক্রয় করে দিচ্ছেন। তাঁরা নদীতে ১৬ থেকে ১৭টি ট্রলি নামিয়ে দিয়ে রাত ১০টার পর থেকে সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত বালু উত্তোলন করেন। এখানেই যে শুধু বালু উত্তোলন করেন তা কিন্তু নয়। আমাদের কালীরচর থেকে শুরু করে মর্ণেয়া, গজঘণ্টা ইউনিয়ন পর্যন্ত নদীর ধারে ৭ থেকে ৮টি বালুর পয়েন্ট রয়েছে। প্রতিদিন এই পয়েন্টগুলো থেকে প্রায় ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকার বালু বিক্রয় হয়। গজঘণ্টা ইউনিয়নের জামাল মিয়া বলেন, কিছুদিন আগে আমাদের এলাকার ট্রলিচালক ও বালু ব্যবসায়ী বেলাল মিয়া রাজনীতির সঙ্গে জড়িত লোকজনকে টাকা খাইয়ে তিস্তা থেকে ড্রেজার লাগিয়ে বালু তুলেন। পরে সেই বালু বিক্রয় করেন। শুধু আমাদের মৌভাষায় বেলালই নয়, এখানকার কয়েক ব্যক্তি বাড়ির প্রয়োজনের কথা বলে নদী থেকে বালু তুলে পরে তা বিক্রয় করে দেন। স্থানীয় লোকজন কিছু বললেই তাঁরা হুমকি দেন। গজঘণ্টা ইউনিয়নের চর ছালাপাক এলাকার জাহানুর বলেন, বালু ব্যবসায়ীরা যেভাবে তিস্তার বাঁধ কেটে, ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে বালু উত্তোলন করছেন তাতে নদীতে পানির একটু চাপ বাড়লেই বাঁধ উপচে জনবসতিতে পানি ঢুকে পড়বে। এসব দেখার কি কেউ নেই? অবৈধ বালু ব্যবসায়ী এনামুল ও লিটনের সঙ্গে ঘটনাস্থলে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তাঁরা সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ট্রলি রেখে সটকে পড়েন। গঙ্গাচড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ তামান্না বলেন, আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলেই এসব অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিরোনাম
গঙ্গাচড়ায় নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তিস্তার বালু হরিলুট
-
রংপুর ব্যুরো - আপডেট সময় : ০৩:৫৫:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ অগাস্ট ২০২৪
- ।
- 62
জনপ্রিয় সংবাদ


























