০৬:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফেনীতে ১৪৬টি মন্দিরে আয়োজন চলছে শারদীয় দুর্গোৎসবের

ফেনীতে এবার ১৪৬টি মন্দিরে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এরইমধ্যে মন্দিরগুলোতে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। শুধুমাত্র রং তুলির কাজ বাকি রয়েছে।

প্রতিমার কারিগর কানাই পাল জানান, এবার রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রতিমা তৈরির খড়, মাটি, কাঠসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের সংকট। তিনি এবার ১৬টি প্রতিমা তৈরির কথা থাকলেও সময় ও লোকবল সংকটের কারণে দুটি মন্দিরের কাজ করতে পারছেন না। ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এবার তাদের লোকসানের মুখে পড়ার শঙ্কা করছেন।

জানা গেছে, ফেনী সদর উপজেলায় ৪৭টি, এরমধ্যে পৌর এলাকায় ১২টি, ফুলগাজী উপজেলায় ৩৩টি, সোনাগাজী উপজেলায় ২৩টি, দাগনভূঞা উপজেলায় ১৯টি, পরশুরাম উপজেলায় ৭টি ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় ৫টি মন্দিরে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে।

ফেনী শহরের গুরুচক্র মন্দির, দক্ষিণ সহদেবপুর সার্বজনীন পূজা মন্দির ও সুলতানপুর রক্ষা কালী বাড়িসহ বিভিন্ন পূজা মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। শুধুমাত্র রং তুলির আঁচরের কাজ বাকি রয়েছে।
এদিকে ফেনী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে কয়েকদিন আগে বর্ধিত সভার মধ্য দিয়ে প্রতিটি পূজা মন্দিরের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে কেন্দ্রীয় ২৩টি নির্দেশনা মেনে সাত্ত্বিক পূজা করতে বলা হয়েছে। সভায় জেলা-উপজেলা ও বিভিন্ন মঠ-মন্দিরের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।

অপরদিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে দুর্গোৎসব উপলক্ষে নিরাপত্তা বিষয়ক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার। জেলা প্রশাসক জানান, প্রতিটি পূজা মন্দিরের জন্য সরকারিভাবে ৫০০ কেজি চাউল বরাদ্দ করা হয়েছে। পূজার আগেই এ সহায়তা প্রদান করা হবে।

ফেনী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি  হিরা লাল চক্রবর্তী বলেন, ‘এবার জেলায় ১৪৬টি পূজা মন্দিরে সরকারের সকল নির্দেশনা মোতাবেক পূজা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৮ অক্টোবর বোধন পূজার মাধ্যমে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হবে। ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী, ১০ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ১১ অক্টোবর মহাষ্টমী, ১২ অক্টোবর মহানবমী, ১৩ অক্টোবর দশমীঘাটে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শারদীয় দুর্গাপূজার পরিসমাপ্তি ঘটবে।’
জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শুকদেব নাথ তপন জানান, ‘দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী মাঠে জোরদার থাকলে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে তারা সচেষ্ট হবে।’

ফেনীর পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ভাতৃত্ববোধ বজায় রেখে সরকারি সব নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব উদযাপন করতে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া মন্দিরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ফেনী জেলা শাখার সদস্যদের পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, স্বেচ্ছাসেবক ও সামাজিক কমিটি এবং পূজা মন্দিরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পূজা মন্দিরে পালাক্রমে ডিউটির ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কোথাও কোনো সমস্যা হলে দ্রুত সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের বিট অফিসার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পুলিশ সুপারকে অবহিত করার জন্য সবাইকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘প্রতিটি মন্দিরে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। পূজা মণ্ডপে র‌্যাব ও পুলিশ ছাড়াও আনসার মোতায়েন করা হবে।’

জনপ্রিয় সংবাদ

সানজিদা তন্বীর বিয়ের খবর জানালেন ফেসবুকে নিজের হৃদয়গ্রাহী পোস্টে

ফেনীতে ১৪৬টি মন্দিরে আয়োজন চলছে শারদীয় দুর্গোৎসবের

আপডেট সময় : ০৫:৫৯:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ অক্টোবর ২০২৪

ফেনীতে এবার ১৪৬টি মন্দিরে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এরইমধ্যে মন্দিরগুলোতে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। শুধুমাত্র রং তুলির কাজ বাকি রয়েছে।

প্রতিমার কারিগর কানাই পাল জানান, এবার রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রতিমা তৈরির খড়, মাটি, কাঠসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের সংকট। তিনি এবার ১৬টি প্রতিমা তৈরির কথা থাকলেও সময় ও লোকবল সংকটের কারণে দুটি মন্দিরের কাজ করতে পারছেন না। ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এবার তাদের লোকসানের মুখে পড়ার শঙ্কা করছেন।

জানা গেছে, ফেনী সদর উপজেলায় ৪৭টি, এরমধ্যে পৌর এলাকায় ১২টি, ফুলগাজী উপজেলায় ৩৩টি, সোনাগাজী উপজেলায় ২৩টি, দাগনভূঞা উপজেলায় ১৯টি, পরশুরাম উপজেলায় ৭টি ও ছাগলনাইয়া উপজেলায় ৫টি মন্দিরে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে।

ফেনী শহরের গুরুচক্র মন্দির, দক্ষিণ সহদেবপুর সার্বজনীন পূজা মন্দির ও সুলতানপুর রক্ষা কালী বাড়িসহ বিভিন্ন পূজা মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। শুধুমাত্র রং তুলির আঁচরের কাজ বাকি রয়েছে।
এদিকে ফেনী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে কয়েকদিন আগে বর্ধিত সভার মধ্য দিয়ে প্রতিটি পূজা মন্দিরের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে কেন্দ্রীয় ২৩টি নির্দেশনা মেনে সাত্ত্বিক পূজা করতে বলা হয়েছে। সভায় জেলা-উপজেলা ও বিভিন্ন মঠ-মন্দিরের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।

অপরদিকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে দুর্গোৎসব উপলক্ষে নিরাপত্তা বিষয়ক প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।  এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার। জেলা প্রশাসক জানান, প্রতিটি পূজা মন্দিরের জন্য সরকারিভাবে ৫০০ কেজি চাউল বরাদ্দ করা হয়েছে। পূজার আগেই এ সহায়তা প্রদান করা হবে।

ফেনী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি  হিরা লাল চক্রবর্তী বলেন, ‘এবার জেলায় ১৪৬টি পূজা মন্দিরে সরকারের সকল নির্দেশনা মোতাবেক পূজা অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৮ অক্টোবর বোধন পূজার মাধ্যমে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হবে। ৯ অক্টোবর মহাষষ্ঠী, ১০ অক্টোবর মহাসপ্তমী, ১১ অক্টোবর মহাষ্টমী, ১২ অক্টোবর মহানবমী, ১৩ অক্টোবর দশমীঘাটে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে শারদীয় দুর্গাপূজার পরিসমাপ্তি ঘটবে।’
জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শুকদেব নাথ তপন জানান, ‘দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী মাঠে জোরদার থাকলে নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করতে তারা সচেষ্ট হবে।’

ফেনীর পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান জানান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ভাতৃত্ববোধ বজায় রেখে সরকারি সব নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করে শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গোৎসব উদযাপন করতে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ নেতৃবৃন্দকে অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া মন্দিরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ফেনী জেলা শাখার সদস্যদের পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, স্বেচ্ছাসেবক ও সামাজিক কমিটি এবং পূজা মন্দিরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পূজা মন্দিরে পালাক্রমে ডিউটির ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। কোথাও কোনো সমস্যা হলে দ্রুত সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের বিট অফিসার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পুলিশ সুপারকে অবহিত করার জন্য সবাইকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘প্রতিটি মন্দিরে কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। পূজা মণ্ডপে র‌্যাব ও পুলিশ ছাড়াও আনসার মোতায়েন করা হবে।’