ফল মানুষের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির জন্য বিশেষ চাহিদা পুরণ করে। ফল খেতে ভার বাসন না এমন মানুষ খুব একটা চোখে পড়ে না। সাধ্য থাকুক বা না থাকুক সকলেই জান পরিবাবের সদস্যদের মুখে একটু হলেও ফল তুলে দিতে। পকেটে টাকা না থাকলেও পরিবারের ছোট্ট বাবুটার জন্য ফল ক্রয় করার চেষ্টা করে না এমন মানুষ সমাজে নই বলেই চলে। সবাই চায় সন্তানসহ পরিবারের সদস্যদের সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রতিনিয়ত কোন না কোন ফল ক্রয় করতে। কিন্তু বাজারে যে ফলের দাম তাতে ইচ্ছা থাকলেও ক্রয়ের সাধ্য নেই সাধারণ মানুষের। বাজারে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী দেশী-বিদেশি ফল ক্রেতা সাধারণের নাগালের বাহিরে। বাজারে প্রবেশ মাত্রই নজর কাড়ে রং বেরঙের বাহারি ফল। ক্রেতাদের অপেক্ষায় পসরা সাজিয়ে বসে আছেন ফল ব্যবসায়ীরা। টসটসে টাটকা ফলের সমারোহ দেখে খেতে রুচি করলেও দাম শুনে পিছ পা হচ্ছেন নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষ। সাধ্যের বাহিরে দাম হওয়ায় ফল ক্রয় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্রেতা সাধারণ।
অপরদিকে ফলের চড়া দামে বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি কম থাকায় হতাশায় ফল ব্যবসায়ীরা। রংপুর নগরীর সিটি বাজার, লারবাগ বাজার, স্টেশন বাজারসহ মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে ফলের প্রতিটি দোকানে শোভা পাচ্ছে দেশী- বিদেশি বাহারি ফল। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশীয় ও বিদেশি ফলের দাম পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। হাতবদলেই বেড়েছে দেশীয় ফলের দাম। আমদানি কম থাকায় দাম নাগালের বাহিরে বলে মনে করেন ফল ব্যবসায়ীরা। বাজারে দেশী ফল জলপাই বিক্রয় হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে, দেশী মালটা ৮০ টাকা, পেয়ারা ৮০ টাকা, পেঁপে পিস প্রতি ৬০ থেকে ১২০ টাকা, জাম্বুরা আকারভেদে ৫০ থেকে ৮০ টাকা, আনারস পিস প্রতি ১০০ টাকা,আমলকী প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, আমড়া ৮০ টাকা। ড্রাগন বিদেশী ফর হলে দেশেই উৎপাদন হচ্ছে। প্রতি কেজি ড্রাগন বিক্রয় হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। বিদেশি ফলের মধ্যে গালা আপেল ৩৫০ টাকা, ঘুঘু আপেল ৩২০টাকা, মাল্টা ৩২০ টাকা, আনার ৬২০ থেকে ৭০০ টাকা, কমলা ৪০০ টাকা, আঙ্গুর ৬০০ টাকা, লাল আঙ্গুর ৪০০টাকা। রংপুর সিটি বাজারে ফল ক্রয় করতে আসা আরিফা সুলতান বলেন, বাচ্চাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণে ফল ক্রয় করতে হয়। ফলের বাজারে আগুন ১ কেজি আপেল ক্রয় করতে পারি না। ২ পিস আনার ক্রয় করেছি। আপেল, কমলা,আঙ্গুর এগুলোতে হাত দেয়াই যায় না, তবে দেশীয় ফলের দামও অনেক বেশি। আমরা মধ্যবিত্ত মানুষ আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের সমন্বয় করা খুব কঠিন হয়। ফল যেন বিলাসবহুল পণ্য হয়ে গেছে। ফলের বাড়তি দাম নিয়ে ব্যবসায়ীরা বলেন, আগে মালটার কার্টন ছিল ৩০০০ এখন ৪২০০ টাকা। গত সপ্তাহে লাল আঙ্গুর বিক্রি হয়েছে ৩২০ টাকা এখন বিক্রয় হচ্ছে ৪০০ টাকা। চাহিদার অর্ধেক আমদানি হচ্ছে এজন্য দাম বাড়তি। ক্রেতাদের উপস্থিতি কম থাকায় আমাদের বেচাকেনা অনেক কমে গেছে। ক্রেতা কম থাকায় পচনশীল ফল দোকানে মজুদ করতেই সাহস পাই না। আগে চাহিদা অনুযায়ী বেশি ক্যারেট ফল মজুদ রাখতাম। এখন দাম বেশি, ক্রেতাদের চাহিদা কম, ফল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একদিকে পাইকারি বাজারে দাম বেশি। কাঁচামাল হওয়ায় পচে গিয়ে ফল নষ্ট হয়ে ক্ষতি বেশি। এতে করে আমাদের বেচাকেনা কম হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে লোকসান হচ্ছে। দেশীয় ফলের এক আড়তদার বলেন, আগে দৈনিক ৫০ থেকে ৬০ ক্যারেট ফল বিক্রয় হতো এখন বিক্রয় হয় ১০ থেকে ১৫ ক্যারেট। দুই-তিন মাস আগেও দৈনিক ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকার ফল বিক্রয় করে বেশ ভালো ব্যবসা হতো। বাহির দেশ থেকে ফল আসে সেই কারণে ফলের দাম বেশি। আমদানি কম থাকায় বাজারে অস্থিরতা। বাজারে হাতবদল হলেই দাম বাড়ে। বাজার মনিটরিং জোরদার করলে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

























