# তথ্য নেই ট্রাইব্যুনাল ও পুলিশ সদর দপ্তরে
# শেখ হাসিনা-জয়ের বিরুদ্ধে ৩০ কোটি ডলার পাচারকাণ্ডের অনুসন্ধান শুরু
# সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হকের ১৬ ব্যাংক হিসাবে ২১ কোটি টাকা
# অবৈধ সম্পদ অর্জনে সাবেক এমপি রিমনের নামে মামলা
# সাদপন্থি মুখপাত্র মুয়াজ বিন নূর রিমান্ডে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন নির্মূলে জুলাই-আগস্ট গণহত্যা মামলার প্রধান আসামি পলাতক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড নোটিস জারির আবেদন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন থেকে ইতিমধ্যে ইন্টারপোলে রেড নোটিস জারির আবেদন করা হয়েছে। তবে এই রেড নোটিস জারির বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করেনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও পুলিশ সদর দপ্তর। এ নিয়ে রীতিমতো ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ বলেন, প্রসিকিউশন আবেদন করেছে। পরবর্তী অগ্রগতির বিষয়টি দেখবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এর আগে গত ১০ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদের গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পুলিশ মহাপরিদর্শককে চিঠি দেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড নোটিস জারির বিষয়ে নিশ্চিত নয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। নোটিস জারি হলে তা পুলিশের এনসিবি শাখা জানতে পারবে বলে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। এর আগে, গত ১০ নভেম্বর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল গণমাধ্যমকে জানান, হাসিনাসহ জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় অভিযুক্ত পলাতক সকল আসামিকে ফিরিয়ে আনতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট নোটিশ জারি করতে যাচ্ছে সরকার। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পুরাতন ভবনের সংস্কারকাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, পলাতক ফ্যাসিস্ট চক্র পৃথিবীর যে দেশেই থাকুক, ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাদের ধরে এনে বিচারের মুখোমুখি করা হবে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রেড অ্যালার্ট নোটিশ জারি করতে গত ১০ নভেম্বর ইন্টারপোলকে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।
অপরদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারির বিষয়ে কোনো তথ্য পুলিশ সদরদপ্তরের জানা নেই। গতকাল বিকালে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান পুলিশ সদর দপ্তরের মুখপাত্র এআইজি ইনামুল হক সাগর। তিনি বলেন, এমন কোনো নোটিস জারির তথ্য আমাদের কাছে নেই। পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, পুলিশ সদর দপ্তর এর আগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নোটিস জারির জন্য ইন্টারপোলে একটি চিঠি দিয়েছিল। তবে সে বিষয়ে কোনো আপডেট নেই। এর আগে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের বরাতে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারির খবর প্রচার হয় গণমাধ্যমে। তবে পরে গতকাল বেলা সোয়া ১টার দিকে তাজুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রেড নোটিশ জারির বিষয়ে প্রসিকিউশনের কাছে কোনো তথ্য নেই। এটি জানাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা পুলিশ সদর দপ্তর। ১৩ নভেম্বর পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখা এনসিবিতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করতে আবেদন করে ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি বলেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তিন মাসের মধ্যে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্ত শেষ করার লক্ষ্য রয়েছে। ট্রাইব্যুনালে অনেকের বিরুদ্ধেই অভিযোগ এসেছে। হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত অগ্রাধিকারভিত্তিতে হচ্ছে। তদন্ত প্রতিবেদন এসে পৌঁছালে বিচার শুরু হবে। এর আগে, গত ১২ নভেম্বর প্রসিকিউশন জানিয়েছিল, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনাসহ দলটির পলাতক নেতাদের গ্রেপ্তারে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) চিঠি দিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। ইন্টারপোলে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তারে রেড এলার্ট জারির বিষয় নিয়ে গতকাল থেকেই গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পদত্যাগ করে চলতি বছরের ৫ আগস্ট দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে টানা প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। গত জুলাই-আগস্টে গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে। জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়েরকৃত পৃথক মামলায় গত ১৭ অক্টোবর প্রসিকিউশনের আবেদনে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ আদেশ দেন। অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে এ অপরাধের বিচার কাজ চলছে।
এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও লন্ডনে তিনশ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুদকের একটি সূত্র গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার পতনের পর থেকে তার বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ হতে থাকে।
অভিযোগ উঠেছে, ৯ প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকার অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক। এই অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ১৭ ডিসেম্বর থেকে তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের কাজ শুরু হয়।
দুদকের অনুসন্ধান দলের দায়িত্বশীলরা জানিয়েছেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প, বেপজাসহ ৯টি প্রকল্পে এসব অনিয়ম-দুর্নীতি করা হয়েছে।
অপরদিকে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ১৬টি ব্যাংক হিসাবের সন্ধান পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। হিসাবগুলোতে প্রায় ২১ কোটি টাকা জমা রয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক। এসব হিসাব ইতোমধ্যে ফ্রিজ করা হয়েছে। দুদক জানায়, আনিসুল হকের ১৬টি ব্যাংক হিসাবের মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংক বনানী শাখার ছয়টি হিসাবে ৫ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট রয়েছে। এছাড়া একই ব্যাংকে অন্য এক হিসাবে এসসি গোল্ডেন বেনিফিটস হিসেবে ৫০ লাখ ৮১ হাজার টাকা রয়েছে। সংস্থাটি আরও জানায়, সিটিজেন ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের ৯টি হিসাবে ১৫ কোটি ১১ লাখ ৮৩ হাজার টাকা পাওয়া গেছে। এসব টাকা নিজের ও নিকটাত্মীয়দের নামে ডিপোজিট হিসেবে রয়েছে। এর মধ্যে সিটিজেন ব্যাংকের গুলশান শাখার পাঁচটি হিসাবে আশেকুছ সামাদ ও জেবুন্নেছা বেগম হকের নামে ৯ কোটি কোটি ৮৭ লাখ ৫২ হাজার ১১২ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট পাওয়া গেছে। এ দুজন আনিসুল হকের ভাই-বোন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় আনিসুল হকের তিনটি ব্যাংক হিসাবে যথাক্রমে চার কোটি ১৩ লাখ ১৩ হাজার, ২৬ লাখ ৮৬ হাজার ও ৮৪ লাখ ২৮ হাজার টাকার জমা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে তিনটি ব্যাংকে আনিসুল হক ও তার পরিবারের নামের প্রায় ২১ কোটি টাকার সন্ধান পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ এবং যাচাই-বাছাই চলছে বলে জানিয়েছেন দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা। এসব হিসাব ফ্রিজ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, ওই টাকা তার আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে হয়েছে। দুদকের অনুসন্ধান টিম প্রতিবেদন দিলে আইন অনুযায়ী কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান তিনি।
আনিসুল হক ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী অ্যাডভোকেট তৌফিকা করিমসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে গত ৭ অক্টোবর থেকে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। তাদের বিরুদ্ধে শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ফারহানা ফেরদৌস নামে অপর এক সহযোগীর বিরুদ্ধে আসা পৃথক আর একটি অভিযোগও অনুসন্ধান করছে দুদক।
অন্যদিকে ৩৫ কোটি ৯৬ লাখ ৮৭ হাজার ১৬৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমনের নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এছাড়া ২ কোটি ৫২ লাখ ৮৪ হাজার ৫৮২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে রিমনের স্ত্রী রওনকের সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলেছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থাটি। গতকাল এই মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি হাচানুর রহমান রিমনের নিজ নামে সর্বমোট ৩৫ কোটি ৯৮ লাখ ৬৪ হাজার ৬৮৭ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করার তথ্য/রেকর্ডপত্র পাওয়া যায়। একই সময়ে তার নামে দায়-দেনার পরিমাণ পাওয়া যায় ১৫ কোটি ২৪ লাখ ৯৭ হাজার ৯৯৭ টাকা। দায়- দেনা বাদে শওকত হাচানুর রহমান রিমনের সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ২০ কোটি ৭৩ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯০ টাকা। ১৯৯৪- ১৯৯৫ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২০২৪ করবর্ষে তার মোট পারিবারিক ব্যয় ১৬ কোটি ৩৫ লাখ ৯ হাজার ৮৪৫ টাকাসহ অর্জিত সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৭ কোটি ৮ লাখ ৭৬ হাজার ৫৩৪ টাকা। বিপরীতে গ্রহণযোগ্য আয়ের উৎস পাওয়া যায় ১ কোটি ১১ লাখ ৮৯ হাজার ৩৭০ টাকা টাকা। এ ক্ষেত্রে আসামি ৩৫ কোটি ৯৬ লাখ ৮৭ হাজার ১৬৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুদক।
দুদকের উপ-পরিচালক মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, হাচানুর রহমানের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। তিনি নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন।
দুদক সূত্র জানায়, সাবেক এই এমপির নামে বরিশালের আগরপুর রোড, রূপাতলী, জাগুয়া, দক্ষিণ আলেকান্দায়, ঢাকার নলটোনা, বরগুনার পাথরঘাটায় মোট ১ কোটি ৫১ লাখ ৫৬ হাজার ৫৬৩ টাকার অ-কৃষি জমি রয়েছে। এছাড়া বরগুনার কাঠালতলী, মাদারতলী, রায়হানপুর, গহরপুর, চরলাঠিমারা মৌজাসহ বিভিন্ন এলাকায় ৫৮ লাখ ৩১ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের কৃষি জমি রয়েছে। তার নিজ নামে ব্যবসার পুঁজি রয়েছে ১৫ কোটি এক লাখ ৮৩ হাজার ৬৪০ টাকা এবং ৪৬ লাখ টাকার অন্যান্য বিনিয়োগ রয়েছে।
দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরগুনা ২ আসন থেকে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গত ১৬ অক্টোবর দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে শওকত হাচানুর রহমানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত। সাবেক এই সংসদ সদস্যের নিজ নামে ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো, মাইক্রো বাস, টয়োটা প্রিমিও কারসহ ৩টি গাড়ি, স্ত্রীর নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ও নগদ ১৮ লাখ ৫০ হাজার ৫৪০ টাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া তার দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে বলে দুদক গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন।
এদিকে সাদপন্থিদের মুখপাত্র মুয়াজ বিন নূরের (৪০) তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গত ১৮ ডিসেম্বর টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষে তিন মুসল্লি নিহতের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। সেই মামলায় গতকাল সকালে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টঙ্গী পশ্চিম থানার ওসি ইসকান্দার হাবিবুর রহমান। এর আগে ২১ ডিযসেম্বর ভোররাতে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, সকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মুয়াজকে এজলাসে নিয়ে আসা হয়। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে সাতদিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। তবে গাজীপুরের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর আল মামুন শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রাজধানীর উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের নূর মোহাম্মদের ছেলে মুয়াজ। তিনি সাদপন্থিদের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। জুবায়েরপন্থিদের দায়েরকৃত হত্যা মামলার ৫ নম্বর আসামি। পুলিশ আরও জানায়, টঙ্গী ইজতেমা মাঠে তিন মুসল্লির নিহতের ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় মুয়াজকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে ২১ ডিসেম্বর আদালতে হাজির করলে আদালত গতকাল রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন। সেই ধার্যকৃত দিনেই শুনানি শেষে তার এ রিমান্ডের আদেশ দেন।


























